হাসপাতালে আহত। — নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা ভোটে সাফল্য পাওয়ার পর থেকেই দলে শৃঙ্খলা কায়েম করতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পই পই করে বলছেন দলে কোন্দল বন্ধ করার কথাও। কিন্তু তারকেশ্বরে সেই কোন্দল থামার তো কোনও লক্ষণই নেই, বরং বারেবারে তা সামনে আসছে।
শনিবারও এক পরিবারিক গোলমালকে কেন্দ্র করে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর ঝামেলায় জখম হলেন বুথ সভাপতি-সহ অন্তত চার জন। দু’পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। চার জনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা আড়াইটে নাগাদ নাইটা-মালপাহাড়পুর পঞ্চায়েতের তাজপুর গ্রামের মাঝিপাড়ায় দলের কয়েক জন কর্মী-সমর্থককে নিয়ে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের সমর্থনে পোস্টার সাঁটছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় বুথ কমিটির সভাপতি উত্তম মাঝি। তিনি পুরপ্রধান স্বপন সামন্তের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সেই সময় এক জায়গায় দু’টি পরিবারের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছিল। উত্তমবাবুরা সেখানে গিয়ে দাঁড়ান। অভিযোগ, সেই সময় দলে উত্তমবাবুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত তারকেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আনন্দমোহন ওরফে কেশব ঘোষের অনুগামীরা সেখানে চলে আসে এবং কেন পারিবারিক গোলমালে নাক গলানো হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে উত্তমবাবুদের উপরে হেঁসো-টাঙি নিয়ে তারা চড়াও হয়। উত্তমবাবুর পেটে, হাতে কোপ পড়ে। রবীন মাঝি ও বিপ্লব মাঝি নামে দুই তৃণমূল কর্মীর মাথা ফাটে। রাজকুমার মাঝি নামে আর এক তৃণমূল কর্মীর হাতে গুরুতর আঘাত লাগে। খবর পেয়ে তারকেশ্বর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আহতদের উদ্ধার করে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উত্তমবাবুর শরীরে অনেকগুলি সেলাই পড়ে। তাঁর আঘাত গুরুতর বলে চিকিৎসকেরা জানান।
উত্তমবাবুর পক্ষে নাইটা-মালপাহাড়পুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হিমাদ্রি ধাড়া বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের পরে সিপিএম ছেড়ে কিছু লোক কেশবের হাত ধরে আমাদের দলে ভিড়েছে। কেশবের নেতৃত্বেই তারা পুরনো তৃণমূল কর্মীদের পেটাচ্ছে। এ দিনও ওরা হামলা করল। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’
পক্ষান্তরে, কেশববাবু তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, ‘‘দু’টি পরিবারের মধ্যে বিবাদের জেরে একটা ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও নেই। কারা এমন বলছেন জানি না।’’
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্তও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy