জখম সানোয়ার আলি ।ছবি: তাপস ঘোষ
ফের গুলি। ফের ঘটনাস্থল হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়া।
মঙ্গলবার রাতে নমাজ সেরে মোটরবাইক করে বাড়ি ফিরছিলেন চকবাজারের তৃণমূল নেতা মির্জা সানোয়ার আলি। বাড়ির সামনেই তাঁকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। দু’টি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও একটি মাথা ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়।
প্রতিবাদে বুধবার সকাল ৮টা থেকে চুঁচুড়ার ত্রিবেণী রোডের চকবাজার চৌমাথায় রাস্তা অবরোধ করা হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও দোকান বন্ধ করে বিক্ষোভে সামিল হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। প্রায় ৪ ঘণ্টা পরে দুপুর ১২টা নাগাদ পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় শেখ হাসান নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরায় সে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার পীযুষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট কয়েক জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। অভিযুক্তদের শীঘ্রই গ্রেফতার করা করা হবে।’’
টায়ারে আগুন ধরিয়ে চকবাজার চৌমাথায় অবরোধ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে মির্জা সানোয়ার আলি নামে ওই তৃণমূল নেতা যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন চার দুষ্কৃতী তাঁর পথ আগলায়। দুষ্কৃতীদের মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল। ওই নেতার বাড়ির দরজা বাইরে থেকে আগেই আটকে দেওয়া হয়েছিল। গুলির আওয়াজ পেয়ে সানোয়ারের পরিবারের লোকেরা প্রথমে ভাবেন বাজি ফাটছে। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে দরজা খুলতে গিয়ে বাধা পান। চেঁচামেচিতে স্থানীয় বাসিন্দারা চলে আসলে দুষ্কৃতীরা দু’টি মোটরবাইক করে পালিয়ে যায়। মোটরবাইক দু’টি সানোয়ারের বাড়ির অদূরে চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে রাখা ছিল।
সানোয়ারকে মঙ্গলবার রাতেই চুঁচুড়া ইমানবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দলীয় নেতাকে দেখতে ওই রাতেই হাসপাতালে আসেন হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত। তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশের কাছে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে। ঐতিহ্যের শহরে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য মানা হবে না।’’
গত বছর মহরমের আগে ওই একই এলাকায় বোমা-গুলি চলেছিল। তখন অভিযোগ উঠেছিল, এলাকার দুষ্কৃতী মোক্তার হোসেন ওরফে সাহেবের বিরুদ্ধে। এছাড়া এলাকায় তোলাবাজি, ব্যবসায়ীদের প্রাণনাশের হুমকি-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে ওই দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি সাহেবকে গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন সানোয়ার। সেই রাগেই এই হামলা বলে অভিযোগ। পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে সাহেব-সহ চার জনের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত সাহেব-সহ তিন জন ফেরার।
চন্দননগর কমিশনারেট হওয়ার পরেও হুগলি জেলা সদর চুঁচুড়ায় বার বার দুষ্কৃতী হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। মাস কয়েকের মধ্যে চুঁচুড়ায় একাধিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বিগ্ন মানুষ প্রশ্ন তুললেও তা প্রশাসনের কানে পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জেলায় আগ্নেয়াস্ত্র সহজলভ্য হয়ে গিয়েছে। তার ফলেই একের পর এক গুলি চলার ঘটনা ঘটছে। যদিও চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তার দাবি, বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy