Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
TMC MLA

‘ভার্চুয়াল’ সভায় উপস্থিত বিধায়ক করোনা আক্রান্ত, সাংসদ-সহ আরও ৫ নেতা গৃহ-নিভৃতবাসে

চেয়ার পেতে সকলের বসার ব্যবস্থা থাকলেও দূরত্ব বেশি ছিল না বলে অভিযোগ। বেশির ভাগের মুখে মাস্ক থাকলেও কেউ কেউ তা নামিয়ে রেখেছিলেন থুতনিতে।

চণ্ডীতলার আদানে মঙ্গলবার একুশে জুলাইয়ের ‘শহিদ দিবস’ পালনের অনুষ্ঠান। ছবি: দীপঙ্কর দে

চণ্ডীতলার আদানে মঙ্গলবার একুশে জুলাইয়ের ‘শহিদ দিবস’ পালনের অনুষ্ঠান। ছবি: দীপঙ্কর দে

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০৭:২৪
Share: Save:

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সভা-সমাবেশ বা জমায়েত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মঙ্গলবার চণ্ডীতলায় বড় পর্দায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভার্চুয়াল সভা’ দেখানোর ব্যবস্থা করে গৃহ-নিভৃতবাসে যেতে হল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক স্বাতী খন্দকার-সহ পাঁচ নেতাকে। কারণ, ওই রাতেই জাঙ্গিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ মেলে। তিনিও সভায় ছিলেন। তাঁকেও গৃহ-নিভৃতবাসে যেতে হয়েছে।

করোনা-আবহে এ বার ধর্মতলায় তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের ‘শহিদ সমাবেশ’ হয়নি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ভার্চুয়াল সভা’ করেন। তৃণমূলের তরফে রাজ্য জুড়ে বড় পর্দায় তা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। হুগলি জেলা নেতৃত্বের তরফে সেই ব্যবস্থা হয়েছিল চণ্ডীতলার আদানে। ঘেরা জায়গায় প্রায় ৭০ জন কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। নেতানেত্রীদের মধ্যে ছিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, চণ্ডীতলার বিধায়ক স্বাতী খন্দকার, বিধায়ক স্নেহাশিস, দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব, দলের জেলা যুব সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়। ছিলেন স্থানীয় নেতৃত্বও।

চেয়ার পেতে সকলের বসার ব্যবস্থা থাকলেও দূরত্ব বেশি ছিল না বলে অভিযোগ। বেশির ভাগের মুখে মাস্ক থাকলেও কেউ কেউ তা নামিয়ে রেখেছিলেন থুতনিতে। কারও আবার ছিলই না। বিধায়ক স্নেহাশিস তখনও জানতেন না তিনি করোনা আক্রান্ত। ক’দিন আগে জ্বর-সর্দি হওয়ায় তিনি লালারসের নমুনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন। রাতে তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। তাঁর স্ত্রী-ছেলে, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেহরক্ষী এবং গাড়ির চালকও আক্রান্ত হয়েছেন। শ্বশুরকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

চণ্ডীতলার গরলগাছায় মুখের মাস্ক নামিয়ে স্থানীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। ছবি: দীপঙ্কর দে

এ খবর জানাজানি হতেই ওই সভায় উপস্থিত সকলের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। সভার পরে মঙ্গলবার বিধায়ক স্বাতী খন্দকারের সঙ্গে বহিষ্কৃত এক নেতাকে দেখে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। সেখানেও দূরত্ব-বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ। মাস্কও নামিয়ে নিয়েছিলেন অনেকেই।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অবশ্য সভায় দূরত্ব-বিধি না-মানার অভিযোগ মানেননি। ক’দিন আগেই তিনি একদফা গৃহ-নিভৃতবাস পর্ব কাটান। তাঁর দাবি, ‘‘চণ্ডীতলায় দূরত্ব-বিধি মেনেই ভার্চুয়াল-সভা হয়। আমরা সকলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো বাড়িতে নিভৃতবাসে রয়েছি। সংক্রমণের কথা কিছু বলা যায় না। এখন থেকে আরও সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে।’’ নেতারা না-হয় গৃহ-নিভৃতবাসে গেলেন। সভায় উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের কী হবে?

জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিভৃতবাসে রয়েছি। উপসর্গ কিছু দেখা দিলে লালারসের নমুনা পরীক্ষা করাব। সাংসদ সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানের ছবি দেখে উপস্থিত কর্মীদের চিহ্নিত করে তাঁদের নিভৃতবাসে থাকতে বলা হচ্ছে।’’

(তথ্য সহায়তা: দীপঙ্কর দে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC MLA Jangipara Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE