ছড়িয়ে আছে তাণ্ডবের চিহ্ন।—নিজস্ব চিত্র।
সোনারপুরের পর ব্যান্ডেল।
লাঠিসোটা নিয়ে পরস্পরের উপর হামলা। টোটো ভাঙচুর। আতঙ্কে মানুষের ছোটাছুটি। অটো-টোটোর গোলমালে শুক্রবার সকালে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল ব্যান্ডেল স্টেশন চত্বর। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত নামাতে হয় র্যাফ।
দিন কয়েক আগে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরেও অটো-টোটোর গোলমালে ধুন্ধুমার ঘটে। ভাঙচুর করা হয় টোটো। নতুন রুট নিয়ে অটোচালকদের সঙ্গে গোলমাল বাধে। বেশ কিছু টোটো ভাঙচুর করা হয়।
ব্যান্ডেলের ঘটনার সূত্রপাত অবশ্য বুধবার রাতে। ব্যান্ডেল স্টেশন চত্বরে অটোর স্ট্যান্ড রয়েছে। তার কাছেই টোটো স্ট্যান্ড তৈরি নিয়ে ঝামেলার শুরু। অটোচালকেরা তাতে আপত্তি জানালে বৃহস্পতিবার কয়েক জন অটোচালককে মারধরের অভিযোগ ওঠে টোটোচালকদের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ, বিক্ষোভ মিছিল থেকে রাস্তা অবরোধ করেন অটোচালকেরা। গোলমালের জেরে বৃহস্পতিবার সারাদিন স্টেশন চত্বর থেকে বিভিন্ন রুটে অটো বন্ধ রাখা হয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও গোলমাল যে পুরোপুরি মেটেনি তা বোঝা গেল শুক্রবার সকালে। স্টেশন চত্বরে টোটো স্ট্যান্ড তৈরিতে বাধা দিতে গিয়ে বেশ কিছু টোটো ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে অটোচালককেদর বিরুদ্ধে। দু’পক্ষই একে অন্যের উপরে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। বেলা ১১টা নাগাদ অফিসের ব্যস্ত সময়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ব্যান্ডেল স্টেশন চত্বর। নিত্যাযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন। গোলমালে অটো-টোটো দুই-ই বন্ধ হয়ে যায়। হয়রানিতে পড়েন ট্রেনযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ। স্টেশনে নেমে অটো-টোটো না পেয়ে অনেককেই হেঁটে গন্তব্যে রওনা হতে দেখা যায়। গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ এলেও পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হতে থাকায় র্যাফ নামাতে হয়। বেলা আড়াইটা নাগাদ গোলমাল নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও জানান, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে দ্বিতীয় দিনের ঘটনার পর অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এক টোটোচালক সুরজ রাজভড় বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম বৈঠক করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে। কিন্তু এদিন ওরা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের আক্রমণ করে। বেশ কিছু অটো ভাঙচুর করে। আমাদের কয়েক জন আহতও হয়েছে।’’
তৃণমূল পরিচালিত অটো ইউনিয়নের সম্পাদক আমজাদ আলি বলেন, ‘‘টোটো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলছে। জেলা প্রশাসন থেকে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে বাস রুটে টোটো চলাচল করছে। এর বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন করা হলেও ফল হয়নি। ব্যান্ডেল স্টেশন চত্বরে টোটোর স্ট্যান্ড করা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে একটা অশান্তি হয়েছে। সমস্যা মেটানোর জন্য প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ করা উচিত।’’
অটো-টোটোর মধ্যে গোলমালে তাঁদের হয়রানি নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, জেলার বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলেও তার সুষ্ঠু সমাধানে ব্যর্থ পুলিশ ও প্রশাসন। ব্যান্ডেল কাপাসডাঙার বাসিন্দা অনিমেষ মজুমদার বলেন, ‘‘গত দু’দিন ধরে ব্যান্ডেল স্টেশন থেকে বাড়ি ফেরার জন্য কোনও অটো না পাওয়ায় খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেক বেশি ভাড়া দিয়ে রিকশায় যেতে হয়েছে। এ রকম অশান্তি লেগে থাকলে ট্রেনের নিত্য যাত্রী, স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারন মানুষ আরও সমস্যায় পড়বে। প্রশাসনের উচিত দু’পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যা মেটানো।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy