Advertisement
E-Paper

ভাগাড়ের জন্য জমি নেই, সঙ্কটে পুরসভা

বর্জ্য ফেলার জায়গার অভাব প্রায় সর্বত্র। এত দিন বর্জ্য ফেলার হত যে জমিতে, তারই একটি অংশে মৃত পশুর সৎকার হত। কিন্তু জনসংখ্যার চাপ বাড়ছে বলে কমে যাচ্ছে ফাঁকা জমির পরিমাণও।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৮ ০১:৩৫
উদ্যোগী: ভদ্রেশ্বর পুরসভার উদ্যোগে চলছে ভাগাড়ে পাঁচিল দেওয়ার কাজ। ছবি: দীপঙ্কর দে

উদ্যোগী: ভদ্রেশ্বর পুরসভার উদ্যোগে চলছে ভাগাড়ে পাঁচিল দেওয়ার কাজ। ছবি: দীপঙ্কর দে

মরা পশুর গতি কী হবে, সেটাই এখন লক্ষ টাকার প্রশ্ন। কলকাতায় ভাগাড়কাণ্ডের পর থেকেই বিপাকে জেলার পুরকর্তারা।

মৃত পশুর চামড়া বিক্রিযোগ্য। তাই এক শ্রেণির মানুষে বিশেষ আগ্রহ ছিল ভাগাড়ে। মরা পশুর চামড়া কেটে নিয়ে তাঁরা অবশিষ্ট দেহটি মাটিতে পুঁতে দিতেন। কিন্তু এখন, থানা পুলিশের ভয়ে কেউই আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। টাকা দিলেও লোক পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। মৃত পশুর সৎকারে নিয়ে হিমসিম খাচ্ছে পুরসভাগুলি।

হুগলি জেলায় গঙ্গা পাড়ের পুরসভাগুলির এলাকা ছোট। বর্জ্য ফেলার জায়গার অভাব প্রায় সর্বত্র। এত দিন বর্জ্য ফেলার হত যে জমিতে, তারই একটি অংশে মৃত পশুর সৎকার হত। কিন্তু জনসংখ্যার চাপ বাড়ছে বলে কমে যাচ্ছে ফাঁকা জমির পরিমাণও। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার তাগিদে পুরসভাগুলি বর্জ্য নিয়ে নানা প্রকল্প তৈরি করেছে। পচনশীল বর্জ্য থেকে সার তৈরি, অপচনশীল বর্জ্যের জন্য পরিবেশ বান্ধব নানা প্রকল্প হচ্ছে।

ভদ্রেশ্বর পুরসভায় বর্জ্য ফেলার নিজস্ব জায়গাটি ছোট। তাই সমস্যায় পড়েছেন কর্তৃপক্ষ। বিকল্প ব্যবস্থার জন্য পুরমন্ত্রীকে লিখিত আবেদন করেও সুরাহা হয়নি বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান প্রলয় চক্রবর্তী। তারই উপর খবর ছড়িয়েছে— ভাগাড়ের মাংস পড়ছে হোটেল, রেস্তরাঁর পাতে। পুলিশি অভিযানে ধরাও পড়েছে ভাগাড় থেকে মাংস পাচারকারীরা। আর তাতেই বেড়েছে সমস্যা।

উত্তরপাড়া এবং কোন্নগর পুরসভার নিজস্ব গাড়ি রয়েছে মৃত পশু ভাগাড়ে আনার। দুই পুরপ্রধান দিলীপ যাদব এবং বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়েরা জানান, মরা পশু মাটি চাপা দিয়ে দেওয়া হয় পুরসভার নিজস্ব ভাগাড়ে। তাতে এলাকায় দূষণ কমে। সব পুরসভার এই পরিস্থিতি নয়। রিষড়া পুরসভার জায়গায়ই নেই ময়লা ফেলার।

ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান প্রলয় চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘গরুর মতো বড় পশু মারা গেলে সমস্যার। আমাদের এলাকায় আগে চামড়া কেটে নিয়ে কিছু মানুষ দেহটি পুঁতে দিতেন। কিন্তু তাতেও লাগল রাজনীতি রং। উল্টো কথা রটিয়ে সমস্যা তৈরি করলেন এক শ্রেণির মানুষ। অশান্তির ভয়ে আমরা ঠিক করেছি, পুরসভা জমির ব্যবস্থা করবে মৃত পশু সৎকারের। কিন্তু পুরসভার আর্থিক সঙ্গতি নেই। তাই সৎকারের খরচ বহন করতে হবে পশুর মালিককেই।’’

একই সমস্যা রয়েছে রিষড়া পুরসভায়ও। বর্জ্য ফেলার সরকারি জমি নেই। এক সময় স্টেশন লাগোয়া এলাকায় আবর্জনা ফেলা হত। কিন্তু এখন সেখানে ঘন বসতি। ফেল ওই এলাকায় একন বর্জ্য থেকে সার তৈরির একটি প্রকল্প চালু হয়েছে। ওই জমি লাগোয়া একটি সরকারি খাস জমির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরপ্রধান বিজয় মিশ্র বলেন, ‘‘আমরা জেলাশাসককে লিখিত আবেদন করেছি জমিটির জন্য। ওই জমি পেলে কাজে লাগাবে।’’

তাতে তো মরা পশু সৎকারের সমস্যা মিটবে না! রিষড়ার পুরপ্রধান বলেন, ‘‘পুরসভা একটি জায়গায় মাটি খুঁড়ে পুঁতে দিত মরা পশু। এলাকার মানুষের তাতে আপত্তি রয়েছে। আমাদের এলাকায় বহু খাটাল। গরু, মোষ মরলেই বিপদ। টাকা দিয়েও ওই কাজ করতে চাইছে না।’’

Dumping Yard Municipality Carcass Meat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy