Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Kestopur Fish Fair

কেষ্টপুরের মাছ মেলায় এ বারের আকর্ষণ ৫৩ কেজির টুনা মাছ

চৈতন্য মহাপ্রভুর অন্যতম পারিষদ নিত্যানন্দর শিষ্য ছিলেন রঘুনাথ দাস গোস্বামী। তাঁর গ্রাম কেষ্টপুরে বসে ৫১৪ বছরের প্রাচীন মাছের মেলা।

কেষ্টপুরের মাছের মেলায় ৫৩ কেজির টুনা মাছ। নিজস্ব চিত্র।

কেষ্টপুরের মাছের মেলায় ৫৩ কেজির টুনা মাছ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হুগলি শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২১ ১৭:২৪
Share: Save:

রুই,কাতলা, ইলিশ, ভেটকি, ভোলা, চিংড়ি, টুনা, শঙ্কর কী নেই এই মেলায়! সব ধরনের মাছ পাওয়া যায়। চুনোপুটি থেকে ৫০-৬০ কেজি ওজনের মাছও বিক্রি হয় হুগলির কেষ্টপুরের মাছ মেলায়। পাঁচ শতাব্দীর বেশি সময় ধরে উত্তরায়ণে হয়ে আসছে কেষ্টপুরের মাছের মেলা। করোনা কালেও মেলায় ছেদ পড়েনি।

চৈতন্য মহাপ্রভুর অন্যতম পারিষদ নিত্যানন্দর শিষ্য ছিলেন রঘুনাথ দাস গোস্বামী। তাঁর গ্রাম কেষ্টপুরে বসে ৫১৪ বছরের প্রাচীন মাছের মেলা। হুগলির দেবানন্দপুরের কেষ্টপুরে প্রতিবছর পয়লা মাঘ এই মাছের মেলায় ভিড় জমান দূর দূরান্তের মানুষ। মাছের মেলার পাশে বিভিন্ন ধরনের মনোহারি জিনিসের পসরা নিয়ে বসেন দোকানিরা। শোনা যায় মেলার সূচনা হয়েছিল গোবর্ধন গোস্বামীর ছেলে রঘুনাথ দাস গোস্বামী বাড়িতে প্রত্যাবর্তনের পরই।

মন্দিরের সেবাইত অমরনাথ চক্রবর্তী বলেন,“জমিদারের ছেলে রঘুনাথ সংসার ত্যাগ করে সন্ন্যাস নেন। দীর্ঘ সময় পর বাড়ি ফিরে আসেন। ছেলে ঘরে ফেরায় গোবর্ধন গোস্বামী গ্রামের মানুষকে খাওয়াবেন বলে ঠিক করেন। রঘুনাথ কেমন ভক্ত হয়েছেন তার পরীক্ষা নিতে অসময়ে কাঁচা আমের ঝোল এবং ইলিশ মাছ খাওয়া আবদার করেন গ্রামবাসীরা। বাড়ির পাশে আম গাছ থেকে জোড়া আম পেড়ে আনতে এবং পাশের জলাশয় থেকে মাছ ধরার কথা তাঁর পিতৃদেবকে জানান রঘুনাথ। তাঁর কথামতো ইলিশ ও আম জোগাড় হতেই অবাক হয়ে যান গ্রামবাসীরা। তখন থেকেই প্রতি বছর ভক্তরা রাধা গোবিন্দ মন্দিরে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি মাছের মেলার আয়োজন করেন।”

মাছ ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের মাছের পসরা নিয়ে হাজির হন এই মেলায়। হুগলি ছাড়াও বর্ধমান, হাওড়া, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা থেকেও বহু মানুষ আসেন এই মেলায়। ৬০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা কেজি দরে মাছ বিক্রি হয়। কেউ কেউ মাছ কিনে নিয়ে যান। অনেকে আবার পাশের আম বাগানে মাছের পিকনিকের আয়োজন করেন। পোলবা থেকে মেলায় মাছ কিনতে আসা প্রশান্ত গোল বলেন, “প্রতিবছর মাছ কিনতে আসি। স্থানীয় মাছের পাশাপাশি হরেক সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায়,দামেও কম হয়।” আর এক ক্রেতা লোপামূদ্রা বন্দোপাধ্যায় বলেন, “কেষ্টপুরে আমার মামার বাড়ি। তাই প্রতি বার আসি মাছের মেলায়, এ বারও মাছ কিনলাম।এ বারে মেলায় আকর্ষণ ছিল ৫৩ কেজি ওজনের টুনা মাছ। সারে তিনশো টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় সেই মাছ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kestopur Fish Fair Devanandpur Hooghly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE