Advertisement
E-Paper

জ্বর-ডেঙ্গিতে হুগলিতে মৃত ২

রবিবার সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান জাঙ্গিপাড়ার কোতলপুর পঞ্চায়েতের প্রসাদপুর এলাকার বাসিন্দা মিতালি নন্দী (৪৪)। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গির উল্লেখ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ফের জ্বর-ডেঙ্গিতে হুগলিতে মৃত্যু হল দু’জনের।

রবিবার সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান জাঙ্গিপাড়ার কোতলপুর পঞ্চায়েতের প্রসাদপুর এলাকার বাসিন্দা মিতালি নন্দী (৪৪)। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গির উল্লেখ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জ্বরে আক্রান্ত রিষড়ার লিপি চট্টোপাধ্যায়ও (৫০) মারা যান কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে। পরিবারের দাবি, লিপিদেবীর ডেঙ্গির উপসর্গ ছিল।

মিতালিদেবীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে জ্বর, বমি এবং পেট খারাপ হওয়ায় তাঁকে জাঙ্গিপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ওই দিন বিকেলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়। মিতালিদেবীকে কলকাতার ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মৃতার ননদ মাধবী রানা জানান, গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছিল, রোগীর প্লেটলেট ৭৫ হাজারে নেমে গিয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে রক্তের রিপোর্টে ডেঙ্গির উল্লেখ ছিল না। কলকাতার হাসপাতালের রক্তের রিপোর্টে কিন্তু ডেঙ্গি ধরা পড়েছে।

মাস দেড়েক আগে বৈদ্যবাটির বাসিন্দা অরবিন্দ মান্না বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গির উল্লেখ করেছিল হাসপাতাল। তার পরে ফের এই জেলায় ডেঙ্গিতে মৃত্যুর খবর মিলল। মশা নিধন নিয়ে অভিযোগ রয়েছে মিতালিদেবীর এলাকায়। জাঙ্গিপাড়া-হাওড়া রোডের ধারে মিতালিদেবীদের বাড়ি। তাঁর স্বামী জয়ন্ত নন্দী কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। ছেলে সোহম উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরে ফ্রিজ, এসি সারানোর কাজ শিখছেন। বাড়ির সামনে রয়েছে পানাভর্তি দু’টি পুকুর। এলাকা ঝোপজঙ্গলে ভরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, মশার জ্বালায় তাঁরা অতিষ্ঠ। এখানে সে ভাবে মশা মারার উদ্যোগ নেই। অনেকের জ্বর হচ্ছে।

দিবাকর নন্দী ও অমর নন্দী নামে দুই গ্রামবাসী দিন পনেরো আগে ডেঙ্গি নিয়ে জাঙ্গিপাড়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে এখন তাঁরা সুস্থ বলে জানিয়েছে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর। বিএমওএইচ শুভাশিস শী বলেন, ‘‘মৃত মহিলা হাই সুগার ও অল্প জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে এটা ঠিক যে, প্রসাদপুর এলাকায় কিছু মানুষের রক্তে ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল।’’

মশা নিধন নিয়ে অভিযোগ মানতে চাননি কোতলপুর পঞ্চায়েতের প্রধান জাহিল আহমেদ। তাঁর দাবি, ‘‘গত মাসে দু’বার আমরা প্রসাদপুরে নালা পরিষ্কার ও জঙ্গল সাফাই করেছি। কেরোসিন তেলও ছড়ানো হয়েছে। কী ভাবে ওই মহিলা মারা গেলেন বুঝতে পারছি না।’’

এর আগে চন্দননগর, বৈদ্যবাটি, রিষড়া-সহ হুগলির কিছু এলাকায় জ্বরে যে কয়েক জন মারা গিয়েছেন, তাঁদের কারও কারও ডেঙ্গির উপসর্গ ছিল বলে দাবি পরিবারের। যেমন দাবি করেছেন রিষড়ার লিপিদেবীর পরিবারের লোকজন। দেওয়ানজি স্ট্রিটে লিপিদেবীর বাড়ি। তাঁর পরিবারের লোকেরা জানান, গত মঙ্গলবার লিপিদেবীর জ্বর হয়। বুধবার সকালে উত্তরপাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। উপসর্গ দেখে চিকিৎসকেরা জানান, ডেঙ্গি হয়েছে। ওই রাতেই লিপিদেবীকে কলকাতার ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রবিবার দুপুরে সেখানেই তিনি মারা যান।

মৃতার ভাই শান্তনু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দিদির ১০৪ জ্বর উঠে গিয়েছিল। চিকিৎসকেরা ডেঙ্গির কথা বলেন। দিদির ‘পেশেন্ট ফাইলে’ ডেঙ্গি বলে লেখাও ছিল। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি লেখা হল না। বলা হল, ডেঙ্গি নিশ্চিত হওয়ার পরীক্ষার রিপোর্ট সাত দিন পরে মিলবে।’’

স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর মনোজ সাউ বলেন, ‘‘লিপিদেবীর নানা রোগ ছিল। সম্প্রতি পরিবারের সকলে বেড়াতে যান। তার পরে জ্বর আসে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে সব ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে।’’ পুরপ্রধান‌ বিজয় মিশ্র বলেন, ‘‘মৃতার বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁরা ডেঙ্গির কথা বলেননি।’’

Dengue Hooghly ডেঙ্গি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy