Advertisement
১৮ মে ২০২৪

বেলুড়ে কাকার বাড়িতে এসে অপমৃত্যু ভাইঝির

বেলুড়ের ওই এলাকায় এক আবাসনে এক কামরার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন লিলুয়া রেল ওয়ার্কশপের কর্মী আনন্দ। বছর পাঁচেক ধরে তিনি একাই থাকেন।

ঘরে ওই তরুণীর দেহ। নিজস্ব চিত্র

ঘরে ওই তরুণীর দেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৩
Share: Save:

কাকার বাড়ি এসেছিলেন বছর চব্বিশের ভাইঝি। বৃহস্পতিবার ভোরে কয়েক জন প্রতিবেশীকে ডেকে কাকা দেখান, বিছানায় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে ওই তরুণী। চিকিৎসক এসে জানালেন, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু কী ভাবে মারা গেলেন ওই তরুণী? ‘সদুত্তর’ নেই কাকার কাছেও!

ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বেলুড়ের লালমোহন মুখার্জি স্ট্রিটে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর নাম ঊর্মিলা কুমারী। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাঁর কাকা আনন্দ কুমারকে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বেলুড়ের ওই এলাকায় এক আবাসনে এক কামরার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন লিলুয়া রেল ওয়ার্কশপের কর্মী আনন্দ। বছর পাঁচেক ধরে তিনি একাই থাকেন। তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরা থাকেন বিহারে। প্রতিবেশীরা জানান, কারও সঙ্গেই খুব একটা মেশেন না আনন্দ। এ দিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ তিনি তাঁর ফ্ল্যাটের উল্টো দিকের ঘরের বাসিন্দা রীতা দাসকে ডেকে জানান, তাঁর ভাইঝি কোনও সাড়া দিচ্ছে না। রীতাদেবী বলেন, ‘‘আর এক প্রতিবেশী বিপিনবাবুকে ডেকে নিয়ে ওঁর ঘরে গিয়ে দেখি, বিছানায় কম্বল চাপা দিয়ে শুয়ে রয়েছে মেয়েটি। দেখে মনে হচ্ছিল মরে গিয়েছে।’’ তবে বিপিনবাবু ও রীতাদেবী দু’জনেই দাবি করেছেন, আনন্দর ভাইঝি কবে এসেছেন তা তাঁরা কেউই জানেন না।

বেলা একটু বাড়তেই আনন্দ স্থানীয় এক চিকিৎসককে নিয়ে আসেন। তিনি পরীক্ষা করে জানান, অনেক আগেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মুখ দিয়ে গ্যাঁজলাও বেরিয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসক ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দিলেও বেঁকে বসেন ফ্ল্যাটের অন্য আবাসিকেরা। তাঁরা দাবি করেন, ওই তরুণী সত্যিই আনন্দের ভাইঝি কি না তা প্রমাণ হওয়া যেমন দরকার, তেমনই মৃত্যুর কারণও জানতে হবে।

পুলিশ এসে ফ্ল্যাটে ঢুকে দেখে এক কামরার ঘরে ছোট খাট, সেখানেই শুয়ে আছেন তরুণী। আনন্দ পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, কলকাতা ঘোরার জন্য ২৬ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার বিহারের বেগুসরাই থেকে ভাইঝি ঊর্মিলা তাঁর সঙ্গে বেলুড়ে এসেছিলেন। কিন্তু বুধবার সকাল থেকেই তাঁর সর্দি-কাশি শুরু হয়। রাতে ঊর্মিলার শ্বাসকষ্ট হলে স্থানীয় দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাইয়ে ছিলেন আনন্দ। তিনি বলেন, ‘‘বেশি রাতে ভাইঝির খুবই কষ্ট হচ্ছিল। আমি জলও খাওয়ালাম। ভোরে দেখলাম আর নড়াচড়া করছে না।’’ রাতে শ্বাসকষ্ট হলেও ভাইঝিকে কেন ডাক্তারের কাছে বা হাসপাতালে নিয়ে গেলেন না আনন্দ? কষ্ট বাড়লেও কেনই বা কাউকে কিছু জানালেন না? এই প্রশ্নগুলিরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uluberia Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE