Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফুটবলারের অস্বাভাবিক মৃত্যু, চাঞ্চল্য

স্নেহাশিসের বাবা দোলন দাশগুপ্ত এবং মা রিঙ্কুদেবী পোশাকের ব্যবসা করেন। তাঁরা ওই রাতে বাড়িতে ছিলেন না। রিঙ্কুদেবীর অভিযোগ, ‘‘মনে হচ্ছে ছেলেকে মেরে দেহ রেললাইনে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৮
Share: Save:

এক তরুণ গোলরক্ষকের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়েছে শ্রীরামপুরের তারাপুকুর এলাকায়।

পুলিশ জানিয়েছে, স্নেহাশিস দাশগুপ্ত ওরফে রাজা (২১) নামে ওই তরুণের বাড়ি তারাপুকুর গভর্নমেন্ট কোয়ার্টারে। তিনি কলকাতা ময়দানে পোর্ট ট্রাস্ট ফুটবল দলের গোলরক্ষক ছিলেন। শনিবার, দশমীর ভোরে শ্রীরামপুরের মাল গুদামের কাছে রেললাইনের ধার থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে শেওড়াফুলি জিআরপি থানার পুলিশ। দেহটি ডাউন লাইনে পড়েছিল। তাঁর দেহের উর্ধ্বাংশ অন্তত ৩০ ফুট দূরে পড়েছিল। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে এলাকায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার, নবমীর রাতে ঠাকুর দেখতে যাওয়া নিয়ে দুই বন্ধুর সঙ্গে স্নেহাশিসের ঝগড়া হয়েছিল। সেখান থেকে মারামারি। স্নেহাশিসের পরিবারের অভিযোগ, ওই রাতেই কয়েক জন এসে তাঁকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে বেধড়ক মারধর করে। গাছের ডাল ভেঙে পেটানো হয়। রাত ৩টে ৫৩ মিনিটে স্নেহাশিসের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখা হয়, ‘‘আসি সবাই। আর থাকতে মন করছে না এই সমাজে। এই যুগে ভাল‌বাসা বলে কিছু হয় না। সবাই স্বার্থপর। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’’।

স্নেহাশিসের বাবা দোলন দাশগুপ্ত এবং মা রিঙ্কুদেবী পোশাকের ব্যবসা করেন। তাঁরা ওই রাতে বাড়িতে ছিলেন না। রিঙ্কুদেবীর অভিযোগ, ‘‘মনে হচ্ছে ছেলেকে মেরে দেহ রেললাইনে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সঠিক তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বের করুক।’’ দোলনবাবুর বক্তব্য, ‘‘কারা ওকে মারধর করেছে, বলতে পারব না। পুলিশ ওদের খুঁজে বের করুক।’’ ওই যুবকের পরিজনদের বক্তব্য, স্নেহাশিসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য কেউ পোস্ট করেছি‌ল কি না, তাও পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।

রেল পুলিশ সূত্রে বক্তব্য, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। শনিবারেই শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। রবিবার রাত পর্যন্ত মৃতের পরিবারের তরফে লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। রেল পুলিশের এক অফিসার বলেন, ‘‘আপাতদৃষ্টিতে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। ফেসবুক পোস্ট থেকেও তা বোঝা যাচ্ছে। তবে, তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ’’

যে দুই যুবকের সঙ্গে স্নেহাশিসের ঝামেলা হয় তাঁদের পরিবার সূত্রে দাবি, মারামারির জেরে ওই দু’জনও আহত হয়। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই যুবকদের আত্মীয় তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা পিন্টু নাগের কথায়, ‘‘স্নেহাশিস ভাল ছেলে ছিল। ওর এমন মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক। ওর আত্মীয়েরা পুলিশে এফআইআর করুন। তদন্তেই সত্য বেরিয়ে আসবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dead body Footballer Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE