মুক্তিরচক গণধর্ষণ মামলায় আদালতে হাজিরা না-দেওয়ায় আমতা থানার প্রাক্তন ওসি পার্থ হালদারের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেন বিচারক।
বৃহস্পতিবার আমতা আদালতে মামলাটির শুনানি ছিল। এ দিন সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল আমতা থানার প্রাক্তন ওসি পার্থ হালদার এবং কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির উপ-অধিকর্তা এ কে শর্মার। এ কে শর্মা হাজির হলেও পার্থবাবু আসেননি। সেই কারণেই পার্থবাবুর বিরুদ্ধে বিচারক সুপ্রতিম দাশগুপ্ত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৭ মে। পার্থবাবু বর্তমানে বাগনান থানায় কর্মরত। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে মুক্তিরচক গ্রামে এক গৃহবধূ এবং তাঁর জেঠশাশুড়িকে গণধর্ষণ করা হয়। বরুণ মাখাল এবং রঞ্জিত মণ্ডল নামে স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতা-সহ মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সকলকেই গ্রেফতার করে। ঘটনার ৮৭ দিনের মাথায় সকলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। সেই মামলারই শুনানি চলছে আমতা আদালতে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই মামলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ফরেন্সিক রিপোর্ট। পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্তে যে ১১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তার প্রতিটির উপরে রিপোর্ট চেয়েছিল কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি। ওই ল্যাবরেটরির পক্ষ থেকে আদালতকে জানিয়ে দেওয়া হয় মোট ১১টি নমুনা পরীক্ষা করে তার রিপোর্ট পুলিশকে জমা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু শুনানির সময় দেখা যায়, পুলিশ সেই রিপোর্ট জমা দিলেও যে ১১টি নমুনা ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল, তার উল্লেখ সংক্রান্ত কাগজ জমা দেয়নি। ফলে, রিপোর্ট মেলানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। বিলম্বিত হয় বিচারের কাজ। নমুনার উল্লেখ বাদ দিয়ে কী করে শুধু নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট জমা পড়ল, তা জানতে চেয়েই বৃহস্পতিবারের শুনানিতে ডাকা হয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির উপ-অধিকর্তা এবং আমতা থানার প্রাক্তন ওসি-কে। মামলায় দুই মহিলার পক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম জানান, ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট সম্পূর্ণ আকারে পেশ করা না-হলে বিচার প্রক্রিয়া থমকে যাবে।