উদ্বোধনই সার। পরিস্রুত পানীয় জলই মেলে না শ্যামপুরের বাছরি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিশুদ্ধ পানীয় জল প্রকল্প থেকে। ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রকল্পের উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, শ্যামপুর ২ নম্বর ব্লকের বাছরি গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে বছর খানেক আগে দেওড়া হাইস্কুলের দান করা জায়গায় গ্রাম পঞ্চায়েত স্বশক্তিকরণ প্রকল্পে (আইএসজিপি) একটি বিশুদ্ধ পানীয় জল প্রকল্প তৈরি করা হয়। পঞ্চায়েতই কাজটি করে। প্রকল্পে খরচ হয় প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। উদ্দেশ্য ছিল ন্যূনতম খরচে বাসিন্দা এবং বাজারের দোকানদারদের জন্য পরিস্রুত জলের ব্যবস্থা করা। এক লিটার জলের দাম ঠিক করা হয় ১ টাকা। যেহেতু স্কুলের দান করা জমিতে জলপ্রকল্প তাই পড়ুয়াদের বিনাপয়সায় জল দেওয়ার ব্যবস্থা হয়।
২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ঘটা করে উদ্বোধন হয় প্রকল্পের। উপস্থিত ছিলেন শ্যামপুরের বিধায়ক কালীপদ মণ্ডল-সহ একাধিক তৃণমূল বিধায়ক। উদ্বোধনের পর মাত্র সপ্তাহখানেক এটা চালু ছিল। পরে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয় পঞ্চায়েত। আচমকা প্রকল্প বন্ধ হওয়ায় অভিযোগ ওঠে, নির্মাণে নিম্নমানের জিনিস ব্যবহারের। ওঠে দুর্নীতির অভিযোগও। শ্যামপুরের কংগ্রেস নেতা আতিয়ার রহমানের অভিযোগ, ‘‘নিম্নমানের জিনিস দিয়ে তৈরি হওয়ার ফলেই জল প্রকল্পটি বেহাল হয়ে পড়ে। সরকারি টাকা নয়ছয় করা হয়েছে।’’
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শ্যামসুন্দর মেটিয়া বলেন, ‘‘দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা। যন্ত্রে একটা সমস্যা ছিল। সেটা সারানো হয়ে গেছে। প্রকল্পটি চালানোর জন্য সংস্থার খোঁজ চলছে। শীঘ্রই প্রকল্পটি চালু হয়ে যাবে।’’
তা হলে তড়িঘড়ি উদ্বোধন করা হল কেন? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর তিনি দিতে পারেননি। শুধু স্থানীয় মানুষ নন, স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফেও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কানন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুলে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের পাইপ লাইন রয়েছে। সেটা থেকেই মূলত পড়ুয়ারা জল পায়। কিন্তু তার নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। তাই এই জল প্রকল্প চালু থাকলে পড়ুয়ারা সব সময়ই পরিস্রুত জল পেতে পারত।’’