Advertisement
E-Paper

বন্যা রুখতে হোয়াটসঅ্যাপ

বর্ষার আর দেরি নেই। তার উপরে আছে ডিভিসি-র জল ছাড়ার ভ্রুকুটি। হাওড়ায় এ বারও বন্যা হলে মোকাবিলার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে হোয়াটসঅ্যাপকে বেছে নিল জেলা প্রশাসন।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৮ ০২:২৪

বর্ষার আর দেরি নেই। তার উপরে আছে ডিভিসি-র জল ছাড়ার ভ্রুকুটি। হাওড়ায় এ বারও বন্যা হলে মোকাবিলার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে হোয়াটসঅ্যাপকে বেছে নিল জেলা প্রশাসন।

বন্যা মোকাবিলায় করণীয় স্থির করতে বুধবার বৈঠক করেন জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী। বৈঠকে জেলার সব বিডিও এবং দমকল, পূর্ত, জনস্বাস্থ্য, স্বাস্থ্য, কৃষি, সেচ বিপর্যয় মোকাবিলা প্রভৃতি দফতরের জেলা আধিকারিকরা ছাড়াও গ্রামীণ জেলা পুলিশের কর্তারা ছিলেন। সেখানেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, জেলাশাসক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটি তৈরি করবেন। সেই গ্রুপে সব দফতরের অফিসাররা থাকবেন। কেউ কোনও সমস্যার কথা জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে তা গ্রুপে পোস্ট করবেন। ফলে, জেলাশাসক নিজে সব কিছু সরাসরি জানতে পারবেন এবং দ্রুত সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হতে পারবেন। এ ছাড়াও, এ বার বন্যা হলে কন্ট্রোল-রুমে পূর্ত, জনস্বাস্থ্য, পরিবহণ, স্বাস্থ্য, সেচ-সহ সব দফতরের প্রতিনিধিরা থাকবেন। ফলে, যে দফতরের সমস্যার কথা কন্ট্রোল-রুমে আসবে, সেই দফতরের প্রতিনিধিরা সঙ্গে সঙ্গে তা নিজের দফতরের শীর্ষকর্তাদের জানিয়ে দেবেন। এতে সময় বাঁচবে, সমন্বয়ের কাজটিও ভাল ভাবে হবে।

নতুন দুই উদ্যোগ নিয়ে জেলাশাসক বলেন, ‘‘আমরা সব রকমের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।’’

কার্যত ফি-বছরই দামোদরের বন্যায় উদয়নারায়ণপুর, আমতা-১ ব্লকের আংশিক এবং আমতা-২ ব্লক প্লাবিত হয়। গত বছর জুলাই মাসের গোড়ায় ডিভিসি-র ছাড়া জলে বন্যায় তিনটি ব্লকের প্রায় চার লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। চার জনের মৃত্যু হয়। উদয়নারায়ণপুরের ডিহিভুরসুট, বকপোতা, কানুপাট-মনসুখায় দামোদরের বাঁধ ভেঙে যায়। রামপুর খালের বাঁধের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়।

সেচ দফতর সূত্রের খবর, এ বার ভাঙনের অধিকাংশ মেরামত করা হয়েছে। বাকি কাজ কয়েকদিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে জেলাশাসককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শর্টকাট খালের নাব্যতা
বাড়ানো হয়েছে।

১৩ কিলোমিটার লম্বা শর্টকাট খালটি আমতা-২ ব্লকের থলিয়া থেকে বাগনানের বাকসি পর্যন্ত গিয়েছে। এর মাধ্যমে দামোদর ও রূপনারায়ণ যুক্ত হয়েছে। এই খালের জলবহন ক্ষমতা ৩০ হাজার কিউসেক। ২০০২ সাল খালটি কাটার উদ্দেশ্যই ছিল, ডিভিসি জল ছাড়লে বাড়তি জল যেন এই খাল দিয়ে রূপনারায়ণে পড়ে। এ বছর প্রায় ৩০ কোটি টাকা খরচ করে খালের সংস্কার করেছে সেচ দফতর। ফলে এর বহন ক্ষমতা এখন প্রায় ৬০ কিউসেক। বৈঠকে সেচ দফতরের কর্তারা জানান, খালের নাব্যতা বেড়ে যাওয়ার জন্য বন্যার আশঙ্কা অনেকটা কমবে। সংস্কারের কাজ যতটা বাকি আছে তা দ্রুত শেষ করার জন্য সেচ দফতরকে নির্দেশ দেন জেলাশাসক।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, হাওড়ায় বন্যা নির্ভর করে ডিভিসি-র জল ছাড়ার পরিমাণের উপরে।

কম জল ছাড়লে যে ভাবে বাঁধ মেরামতি হয়েছে তাতে বন্যা আটকানো সম্ভব। কিন্তু এক লক্ষ কিউসেকের বেশি হারে জল ছাড়া হলেই বন্যা মোকাবিলায় নেওয়া সব ব্যবস্থা চৌপাট হয়ে যেতে পারে। তখন চিঁড়ে-গুড় বিলি, মানুষকে নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া, পানীয় জলের ব্যবস্থা করাই প্রশাসনের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায়।

WhatsApp Flood Flood Control DVC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy