Advertisement
E-Paper

সেচ দফতরের অনুমতি ছাড়াই বাঁধ কেটে কাজ শুরু

সেচ দফতরের অনুমতি ছাড়াই হুগলির চাঁপাডাঙায় দামেদর নদের বাঁ দিকের বাঁধ কেটে ফুটো করে সেতুর পিলার পয়েন্ট তৈরির অভিযোগ উঠল পশ্চিমবঙ্গ সড়ক উন্নয়ন নিগমের বিরুদ্ধে।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:১৪
এই বাঁধ কাটা নিয়েই অভিযোগ সেচ দফতরের। নিজস্ব চিত্র

এই বাঁধ কাটা নিয়েই অভিযোগ সেচ দফতরের। নিজস্ব চিত্র

এমনিতেই করোনা আবহে এই বছর নদী বাঁধগুলোর বহু জায়গায় সংস্কার হয়নি। সম্ভাব্য বন্যার আশঙ্কায় সেচ দফতর জোড়াতালি দিয়ে বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে সেচ দফতরের অনুমতি ছাড়াই হুগলির চাঁপাডাঙায় দামেদর নদের বাঁ দিকের বাঁধ কেটে ফুটো করে সেতুর পিলার পয়েন্ট তৈরির অভিযোগ উঠল পশ্চিমবঙ্গ সড়ক উন্নয়ন নিগমের বিরুদ্ধে। সেচ দফতর সেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছে শুক্রবার থেকে।
পশ্চিমবঙ্গ সড়ক উন্নয়ন নিগমের ওই কাজ শুরু হয়েছিল বৃহস্পতিবার রাতে। ওই সংস্থার অধীন আরামবাগ থেকে চাঁপাডাঙা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রাস্তাটি চার লেনের করার কাজ শুরু হয়েছে মে মাস থেকেই। ২৩ ফুট চওড়া রাস্তাটি ১৩৫ ফুট চওড়া করা হচ্ছে। এর জন্য পুরশুড়া এবং চাঁপাডাঙার মাঝে দামোদর নদের উপর বিদ্যাসাগর সেতুর পাশে নতুন একটা সেতুও তৈরি হবে। সেই সেতুরই পিলার পয়েন্ট করা হচ্ছিল বাঁধে। খবর পেয়ে সেই রাতে সেচ দফতর থেকে কাজটা বন্ধ রাখতে বলা হয়।
সেচ দফতরের অভিযোগ, চাঁপাডাঙা সংলগ্ন দামোদরের বাঁ দিকের বাঁধটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বন্যার সময় স্পর্শকাতর। বাঁধটি কোনওভাবে ভেঙে গেলে হুগলির তারকেশ্বর, ধনেখালি, জাঙ্গিপাড়া, পুরশুড়া থেকে শুরু করে চন্দননগর পর্যন্ত ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভাসবে হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুর ব্লক এলাকা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। জুলাই মাসের শেষ থেকে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সাধারণত বন্যা হয় দামোদর নদে। এই অবস্থায় বাঁধের উপর সেতুর পিলার পয়েন্ট করা অনুচিত।
জেলা সেচ দফতরের(নিম্ন দামোদর) এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তপন পাল বলেন, “আমরা বলেছি এখন বাঁধে পাইলিং জাতীয় কাজ করা যাবে না। বর্ষা কেটে গেলে অক্টোবর মাসের পর তাঁরা ওই কাজ করতে পারবেন। তাঁরা কাজ বন্ধ রেখেছেন।”
সেচ দফতর সূত্রে জানা যায়, এমনিতেই দামোদর নদের নাব্যতা ক্রমশ কমছে। পরিসংখ্যান হলছে, ২০১৭ সালে ডিভিসি থেকে ২ লক্ষ ৪৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়লে তা চাঁপাডাঙা পয়েন্টে ‘চূড়ান্ত বিপদ সীমা’ ১৩.৫০ মিটার ছাড়িয়ে ১৪ মিটারের বেশি উচ্চতায় বইত। সেখানে ২০১৯ সালের তার অর্ধেকেরও কম ১ লক্ষ ৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়তেই দেখা গিয়েছে বিপদ সীমার উপর দিয়ে জল বইছে। এই অবস্থায় ওই অংশে বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ খুবই জরুরি।
এর আগেও মে মাসের মাঝামাঝি পশ্চিমবঙ্গ সড়ক উন্নয়ন নিগমের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়াই চাঁপাডাঙায় দামোদরের বাঁ দিকের বাঁধ কেটে সেতুর প্রবেশ পথ তৈরির অভিযোগ উঠেছিল। অবৈধভাবে গুরুত্বপূর্ণ বাঁধটি কাটার প্রতিবাদ করে তা সংস্কারের কথা বলা হয়েছিল সেচ দফতর থেকে। সেটি সংস্কারও করে দেয় সড়ক উন্নয়ন নিগম। ফের অনুমতি ছাড়াই বাঁধের উপর কাজ করার অভিযোগ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সড়ক উন্নয়ন নিগমের সংশ্লিষ্ট কাজটির সহকারী বাস্তুকার তথা প্রজেক্ট ম্যানেজার দেবাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা প্রায় দেড় মাস আগে সেচ দফতরের কাছে কাজের পুরো নকশা পাঠিয়ে অনুমতি চেয়েছি। এখনও তাঁরা কিছু না জানানোয় কাজটা শুরু করি। তারপরেই সেচ দফতর কাজটা আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছে। বর্ষার পর কাজটা করা যাবে বলে অনুমতি মিলেছে।” তবে সেচ দফতরের সুত্রে জানানো হয়েছে, “৭ অগস্ট তাঁরা চিঠি দেন। ১৪ অগস্ট ওই সংক্রান্ত একটি বৈঠকে কাজটা বর্ষায় করতে নিষেধ করা হয়েছিল।”

irrigation river dam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy