কারখানার বন্ধ গেটের সামনে জটলা শ্রমিকদের। শুক্রবার সকালে প্রকাশ পালের তোলা ছবি।
সিটু-র হুমকিতে একটি কারখানা বন্ধের অভিযোগ উঠল শ্রীরামপুর শিল্পাঞ্চলে।
শ্রীরামপুরের রাজ্যধরপুরে ‘মাল্টি সার্ভ রোলস লিমিটেড’ নামে ওই কারখানায় শুক্রবার ‘সাসপেনসন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝোলান কর্তৃপক্ষ। দিল্লি রোডের ধারে বছর সতেরো আগে তৈরি ওই কারখানায় যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য লোহার দণ্ড তৈরি হয়। স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে শ্রমিকের সংখ্যা শতাধিক।
কারখানা সূত্রের খবর, কাজে অসন্তুষ্ট হয়ে বৃহস্পতিবার শিক্ষানবিশ এক কম্পিউটার অপারেটকে বরখাস্ত করা হয়। কারখানার সিটু প্রভাবিত সংগঠনের নেতারা এটা মানতে চাননি। অভিযোগ, ওই দিনই দুপুরে সংগঠনের সম্পাদক শেখ হিরালাল-সহ কয়েক জন কারখানার অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। এমনকী সিদ্ধান্ত যত দিন বদল করা না হবে, তত দিন অফিসের বেশ কিছু লোক (ম্যানেজমেন্ট স্টাফ) ‘টুল ডাউন’ (যন্ত্রপাতি না ধরা) ধর্মঘট করবেন বলে হুমকি দেওয়া হয়। শুধু মুখেই নয়, মালিকপক্ষকে চিঠি দিয়েও ওই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। ধর্মঘটী শ্রমিকের পরিবর্তে কেউ কাজ করতে চাইলে বাধা দেওয়া হবে বলেও সিটু নেতারা হুমকি দেন বলে অভিযোগ।
এর পরেই এ দিন সকাল ৬টা থেকে কারখানায় ‘সাসপেনসন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। সকালে কাজে এসে শ্রমিকরা ওই নোটিস দেখে গেটের সামনে একপ্রস্থ বিক্ষোভও দেখান।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কারখানাটি লাভজনক। কিন্তু এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির এবং প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। কারখানার পার্সোনেল অফিসার তাপস কর বলেন, ‘‘ওই হুমকির পরে কারখানা বন্ধ করা ছাড়া উপায়।’’
কারখানার আইএনটিটিইউসি সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিটুর অনৈতিক আন্দোলনেই শতাধিক শ্রমিক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়লেন। কারখানা অচল করার হুমকি না দিয়ে ওরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে পারত।’’ পাঁচু পাত্র, সুমনকুমার সিংহ, চন্দন দাস, সমীর ভট্টাচার্য প্রমুখ শ্রমিকের দাবি, ‘‘অবিলম্বে কারখানা খুলতে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করুক।’’
সিটু নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, ওই কম্পিউটার অপারেটরকে পিওনের কাজ দেওয়া হয়েছিল। তিনি ওই কাজ করতে না চাওয়ায় তাঁকে বহিষ্কারের চিঠি ধরানো হয়। তাঁদের অভিযোগ, যে কোনও ছুতোয় শ্রমিকদের বের করে দেওয়া কর্তৃপক্ষের রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারখানার সিটু সম্পাদক শেখ হিরালাল বলেন, ‘‘ওই কর্মীর প্রতি অবিচার হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনও কথাই শুনতে চাননি। তখন ম্যানেজমেন্ট শ্রমিকদের একাংশ টুল ডাউন করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘মালিকপক্ষ মিছামিছি পরিস্থিতির দায় আমাদের উপর চাপাচ্ছে। তৃণমূলের সংগঠন তাতে মদত দিচ্ছে।’’
শ্রীরামপুরের ডেপুটি শ্রম কমিশনার অমল মজমদার বলেন, ‘‘সমস্যা মেটাতে সোমবার দুপুরে দু’পক্ষকে বৈঠকে ডাকা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy