মাসের ২১ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও বেতন পাননি চন্দননগর পুরসভার চুক্তিভিক্তিক কর্মীরা। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চেকে সই না করাতেই এই বিপত্তি। দ্রুত বেতন দেওয়ার দাবিতে ওই কর্মীরা মঙ্গলবার সকালে চন্দননগর পুরসভার গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখান। ফলে সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে প্রায় কোনও কাজই হল না চন্দননগর পুরসভায়। কমবেশি প্রতিটি ওয়ার্ডেই বিঘ্নিত হল পুর-পুরসভা। বিক্ষোভরত পুরকর্মীদের ক্ষোভ, এখন যা বাজারদর তাতে বেতন পেয়েও সংসার চালানো সমস্যার বিষয়। এ বার তো বেতনটুকুই হয়নি। ফলে বাড়িতে হাঁড়ি না চড়ার উপক্রম।
পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্মাধ্যক্ষ পার্থ দত্ত-সহ কয়েকজনের মধ্যস্থতায় বিক্ষোভ ওঠে। পুরসভা সূত্রে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, বকেয়া থাকা বেতন দ্রুত দিয়ে দেওয়া হবে।
প্রশাসন জানা গিয়েছে, চুক্তিভিক্তিক কর্মীদের বেতনের চেকে সই করার কথা পুর কমিশনার এবং মেয়রের। কিন্তু দু’জনেই এখন নেই। কারণ মেয়র রাম চক্রবর্তী পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। পূর্বতন পুর কমিশনার অমিতাভ সরকার বদলি হয়ে গিয়েছেন। ফলে পুরসভায় এমনিতেই কিছুটা অগোছালো অবস্থা। এখন পুর কমিশনারের দায়িত্বে রয়েছেন চন্দননগরের এসডিও সানা আকতার। মেয়রের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ডেপুটি মেয়র সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চুক্তিভিক্তিক কর্মীদের চেকে সই করার কথা এসডিও ও ডেপুটি মেয়রের। অভিযোগ, এসডিও চেকে সই করেননি। তাই জন্যই বেতন-বিভ্রাট।
এ দিনের ঘটনায় পুর নাগরিকদের একাংশও ক্ষুব্ধ। তাঁদের ক্ষোভ, বর্তমানে দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলায় জ্বর ও ডেঙ্গি হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনকে এলাকা সাফাই-সহ স্বাস্থ্য পরিষেবা সঠিকভাবে দেওয়ার জোর দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু বেতন না পাওয়ায় চন্দননগরের চুক্তিভিক্তিক কর্মীরা কাজে গা লাগাচ্ছেন না। ফলে আবর্জনা পুরোপুরি সাফাই হচ্ছে না। জ্বর মোকাবিলায় পুর কর্তৃপক্ষ কতটা সক্রিয় সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যদিও সেই অভিযোগ মানতে নারাজ স্বাস্থ্য দফতরের কর্মাধ্যক্ষ পার্থবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘গত দু’মাস ধরে প্রতিটি ওয়ার্ডে রুটিন মেনে জ্বর প্রতিরোধে কাজ হচ্ছে।’’
হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এসডিও কিছু চেকে সই করে পুর কর্তৃপক্ষকে পর্যায়ক্রমে বেতন দিতে বলেছিলেন। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ রাজি হননি। তাদের যুক্তি ছিল, একে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। এরপর যদি কিছু কর্মী বেতনের চেক পান এবং কিছু কর্মী না পান, তাহলে গোলমাল হতে পারে। তাই সব চেকে সই করা হলে তবেই বেতন দেওয়া হবে। জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘সাময়িকভাবে একটা সমস্যা হয়েছিল। সেটি মিটে গিয়েছে। ওই কর্মীরা দ্রুত বেতন পেয়ে যাবেন।’’