ফাইল চিত্র।
নিয়মিত কাজ মিলছে না। নতুন চুক্তি চূড়ান্ত করা হচ্ছে না। এই অবস্থায় ক্ষিপ্ত ঠিকাশ্রমিকদের বিক্ষোভে মঙ্গলবার তপ্ত হয়ে উঠল রিষড়ায় জয়শ্রী ইনস্যুলেটর কারখানা। ঠিকাশ্রমিকদের হাতে ঘেরাও হলেন কারখানার এক আধিকারিক।
এই কারখানায় বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরি হয়। কারখানা সূত্রের খবর, এখানে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক রয়েছেন। তার মধ্যে চুক্তিভিত্তিক এবং ঠিকাশ্রমিক দেড় হাজারের উপরে। ঠিকাশ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরেই অল্প সংখ্যক শ্রমিককে কাজে নেওয়া হয়। তাতেও মূলত দু’-এক জন বাছাই করা ঠিকাদারের শ্রমিকদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। ফলে, অন্যরা নিয়মিত কাজ পান না। এই নিয়ে ঠিকাশ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ জমে। প্রতিদিনের মতোই মঙ্গলবারও সকালে ঠিকাশ্রমিকরা কাজের আশায় কারখানার সামনে এসেছিলেন। ঠিকাদারের লোক আসতে দেরি হওয়ায় সকলেই হুড়মুড়িয়ে কারখানায় ঢুকে পড়েন। চেষ্টা করেও নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের আটকাতে পারেননি। অভিযোগ, ঠিকাশ্রমিকরা ক্যান্টিনে ঢুকে হইচই শুরু করেন। সেখান থেকে শ্রমিক-সহ অন্যদের বের করে দেন। এর পরে ইউনিটেও বিক্ষোভ দেখান। কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তারপরে এক আধিকারিকের ঘরের সামনে বিক্ষোভকারীরা বসে পড়েন। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। কয়েক ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও, দ্বিতীয় শিফটেও পুরোদমে কাজ হয়নি। কারখানার একটি সূত্রের খবর, বরাত কমে যাওয়ায় বছর দু’য়েক ধরে উৎপাদন কমেছে। ফলে, লোকসান হচ্ছে। তবুও শ্রমিকদের বেতন চুক্তি অনুযায়ী দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। লকডাউনের জেরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ফলে, সবাইকে কাজ দেওয়া যাচ্ছে না। কিছুদিন আগে ঠিকাশ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষের চুক্তি শেষ হয়েছে। নতুন চুক্তির ব্যাপারে শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে মালিকপক্ষের আলোচনা চলছে।
এআইটিইউসি-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা সংগঠনের ওই কারখানার কার্যকরী সভাপতি দীপক চক্রবর্তীর বক্তব্য, শ্রমিকরা সমস্যায় আছেন, এটা ঠিক। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নতুন বরাতের চেষ্টা করা হচ্ছে। তা হলে উৎপাদন বাড়বে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সেই কাজ ঠিকমতো করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘নতুন চুক্তি নিয়ে আমাদের দাবি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তার মধ্যেই কিছু ঠিকাশ্রমিক বিক্ষোভ দেখালেন। এটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা। দ্রুত চুক্তি কার্যকর করা এবং প্রত্যেকের নিয়মিত কাজের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।’’
কারখানার আইএনটিটিইউসি সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেছি চুক্তি দ্রুত কার্যকর করা হোক। লোকসানের কথা বলে ওঁরা কালক্ষেপ করছেন। সকলের জন্য নিয়মিত কাজের ব্যবস্থারও দাবি করছি।’’
আইএনটিইউসির রাজ্য সহ-সভাপতি অজিত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শ্রমিকরা কষ্টে আছেন। ঠিকাদারদের মুখ দেখে শ্রমিকদের কাজে নেওয়া হলে অন্যদের মধ্যে ক্ষোভ স্বাভাবিক। কাজের সমবন্টন করা উচিত। সার্বিক সমস্যাও দ্রুত মেটানো হোক।’’
কারখানা কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিক অজয় সিংহকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি মোবাইল ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তারও জবাব দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy