Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

রেললাইনে দেহ, ‘খুনি’ ধৃত কয়েক ঘণ্টায়

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন শালিমার ও সাঁকরাইলের মাঝে বেতড়ের কাছে রেল লাইনের পাশে এক যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর মাথা থেঁতলানো ছিল, ঘাড়-মুখেও ছিল গভীর ক্ষতচিহ্ন। দেহটি থেকে কিছুটা দূরে পড়ে থাকা একটি প্যান্ট থেকে মেলে যুবকের ড্রাইভিং লাইসেন্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৪৯
Share: Save:

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের শালিমার ও সাঁকরাইল স্টেশনের মাঝে রেল লাইনের ধারে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে দেখে ভিড় জমে গিয়েছিল সাতসকালেই। এলাকায় চাঞ্চল্যও ছড়িয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে অবশেষে নিজেদের এলাকা না হওয়া সত্ত্বেও দেহটি তুলে নিয়ে আসে চ্যাটার্জিহাট থানা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ওই যুবককে খুন করা হয়েছে। তদন্তে নেমে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃতের পরিচয় জেনে, খুনের অভিযোগে এক যুবককে পাকড়াও করল পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন শালিমার ও সাঁকরাইলের মাঝে বেতড়ের কাছে রেল লাইনের পাশে এক যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর মাথা থেঁতলানো ছিল, ঘাড়-মুখেও ছিল গভীর ক্ষতচিহ্ন। দেহটি থেকে কিছুটা দূরে পড়ে থাকা একটি প্যান্ট থেকে মেলে যুবকের ড্রাইভিং লাইসেন্স। সেটি থেকে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, পিন্টুকুমার দাস (২৩) নামে ওই যুবকের বাড়ি বাকসাড়ায়। আদতে বিহারের বাসিন্দা ওই যুবক আগে মহেন্দ্র ভট্টাচার্য রোডে ভাড়া থাকতেন। সেই সূত্র ধরেই শুরু হয় তদন্ত। পুলিশ জানতে পারে, পিন্টু আগে চ্যার্টাজিহাট থানার কাঁকড়া পাড়ার বাসিন্দা পাপ্পু সাউ নামে এক ব্যক্তির পণ্যবাহী গাড়ি চালাতেন। সে জন্য প্রায় রোজই তিনি আসতেন পাপ্পুর বাড়িতে।

পুলিশ জানতে পেরেছে, পাপ্পুর বাড়িতে যাতায়াতের সূত্রে তার স্ত্রীর সঙ্গে পিন্টুর অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে কথা জানতে পেরে পিন্টুকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেয় পাপ্পু। সে নিজেই গাড়ি চালাতে শুরু করে। তবে পিন্টুকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দিলেও তিনি প্রায়ই পাপ্পুর বাড়িতে যাতায়াত করতেন। তা নিয়ে কয়েক বার পাপ্পুর সঙ্গে পিন্টুর গোলমাল, এমনকী হাতাহাতিও হয়েছিল। সে কথা জানার পরেই সোমবার পাপ্পুকে থানায় তুলে নিয়ে আসে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, টানা জেরায় ভেঙে পড়ে পাপ্পু স্বীকার করে, সে-ই লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে পিন্টুকে খুন করেছে।

পুলিশ জানায়, পাপ্পুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ সে এক জনের জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিজেই গাড়ি চালিয়ে জগাছা থানার ঊনসানিতে গিয়েছিল। বাড়িতে ছিল তার স্ত্রী। তা সত্ত্বেও পাপ্পু যাওয়ার আগে বাইরে থেকে তালা দিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মাঝপথে গাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়ায় সে ভোরে বাড়ি ফিরে আসে। এসে দেখে, বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন পিন্টু।

তদন্তকারীদের কাছে পাপ্পু দাবি করেছে, ওই দৃশ্য দেখার পরেই তার মাথার ঠিক ছিল না। বাড়ি থেকে মোটা লোহার রড নিয়ে সে তাড়া করে পিন্টুকে। বেতড়ের কাছে রেল লাইনের ধারে এসে রড দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে তাকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। ঘটনার পরে বাড়ি ফিরে যায় পাপ্পু। পরে বাড়ি থেকেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি (পশ্চিম) গুলাম সারওয়ার বলেন, ‘‘মৃতদেহটি যেহেতু শালিমার রেল পুলিশের এলাকায় পাওয়া গিয়েছিল, তাই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে শালিমার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest murder Shalimar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE