Advertisement
E-Paper

ইভটিজিং রুখতে গিয়ে প্রহৃত প্রতিবাদী যুবক, এ বার হাওড়ায়

সুটিয়া, বারাসতের আতঙ্ক ফিরে এল হাওড়ায়। ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছিল সুটিয়ার বরুণ বিশ্বাস এবং বারাসতের রাজীব দাসকে। হাওড়ার গোলাবাড়ি এলাকাতেও দুই তরুণীর ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বেধড়ক মারে জখম হলেন এক যুবক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৪ ০২:০৪
জখম সোনু।—নিজস্ব চিত্র।

জখম সোনু।—নিজস্ব চিত্র।

সুটিয়া, বারাসতের আতঙ্ক ফিরে এল হাওড়ায়।

ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছিল সুটিয়ার বরুণ বিশ্বাস এবং বারাসতের রাজীব দাসকে। হাওড়ার গোলাবাড়ি এলাকাতেও দুই তরুণীর ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বেধড়ক মারে জখম হলেন এক যুবক। যাঁরা তাঁকে সাহায্য করতে এগোলেন, মাটিতে ফেলে মারধর করা হল তাঁদেরও। শনিবার রাতে জমজমাট একটি মার্কেট কমপ্লেক্সে এই ঘটনায় কেউ আক্রান্ত যুবকদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ। এমনকী, থানায় অভিযোগ জানানোর ১২ ঘণ্টা পরে এখনও ধরা পড়েনি অভিযুক্তদের কেউই। পুলিশ শুধু জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

গুরুতর জখম অবস্থায় প্রতিবাদী ওই যুবক সুজিত জৈন ওরফে সোনুকে ওই রাতেই স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। রবিবার দুপুরে গোলাবাড়ি থানায় গিয়ে অচেনা ওই যুবকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

পুলিশ জানায়, গোলাবাড়ি থানার ডবসন রোডে ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি মার্কেট কমপ্লেক্স রয়েছে। তাই গভীর রাত পর্যন্ত জমজমাট থাকে গোটা পাড়া। রাত আটটা নাগাদ ওই রাস্তা দিয়ে বছর কুড়ির দুই তরুণী একটি মার্কেট কমপ্লেক্সে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, পথেই একটি নার্সিংহোমের সামনে স্থানীয় তিন-চার জন যুবক তাঁদের উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। অশ্লীল ভাষায় দুই তরুণীকে অপমান করা হয়। তখনই প্রতিবাদ করে এক তরুণী এক যুবককে চড় মারেন।

চড় খেয়ে ক্ষিপ্ত যুবকেরা এর পরে ওই দুই তরুণীকে ধাওয়া করতে শুরু করে। অভিযোগ, খুনের হুমকিও দেয় তারা। তখন ওই দুই তরুণী দৌড়ে কাছেই শ্রীকুঞ্জ মার্কেট কমপ্লেক্সে ঢুকে পড়ে একটি কাপড়ের দোকানে আশ্রয় নেন। যুবকেরাও তাঁদের তাড়া করে কমপ্লেক্সে ঢুকে পড়ে। স্থানীয় এক হোটেলের মালিক অমিত খান্ডেলওয়াল তাদের বাধা দেন। তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায়। সেই সময়ে কাপড়ের দোকানটির মালিক সোনু অমিতের সঙ্গে যোগ দেন। অভিযুক্তেরা তখন চিৎকার করে হুমকি দেয়, এখনই ওই দুই তরুণীকে দোকান থেকে বার করে না দিলে অমিত ও সোনুকে খুন করে ফেলবে তারা। মেয়ে দু’টিকে ধর্ষণ করারও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সোনু কিছুতেই তাতে রাজি না-হওয়ায় ‘পরে দেখে নেব’ বলে হুমকি দিয়ে তখনকার মতো চলে যায় তারা। এর পরেই তরুণী দু’জনকে কমপ্লেক্সের পিছনের দরজা দিয়ে পালানোর ব্যবস্থা করে দেন সোনু।

এখানেই অবশ্য শেষ নয়। রাত দশটা নাগাদ বিশাল দলবল নিয়ে অভিযুক্ত যুবকেরা ফিরে আসে। পুলিশের কাছে অভিযোগে সোনু জানিয়েছেন, তিনি তখন দোকান বন্ধ করছিলেন। অভিযুক্ত যুবকেরা এসে তাঁর উপরে চড়াও হয়। প্রাণে বাঁচতে দৌড়ে পাশের একটি এসি মার্কেটে ঢুকে পড়ে সিঁড়ি দিয়ে চারতলায় উঠে যান সোনু। তাঁকে ধাওয়া করে অভিযুক্তেরাও। সোনুর বক্তব্য, “কমপ্লেক্সে তখন কর্মী-দোকানদার-খদ্দের মিলিয়ে ভালই ভিড় ছিল। আমি চিৎকার করে সবার কাছে সাহায্য চাইছিলাম। কেউই আমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি।” যুবকদের দলবল সোনুকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। সেই সময়ে অমিত এবং সোনুর দোকানের কর্মচারী বিশু দাস তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলে ওই বাহিনী তাঁদের উপরেও চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মাটিতে ফেলে পেটানো হয় তাঁদেরও। অমিতের মোবাইলও ছিনিয়ে নেয় তারা। সোনুর অভিযোগ, “মারধর করে ওরা হুমকি দিয়ে যায়, পুলিশের কাছে গেলে নাকি আগেই ওরা খবর পাবে। পুলিশ নাকি ওদের কেনা গোলাম!”

হাওড়া কমিশনারেটের এডিসি (উত্তর) শিবানী তিওয়ারি বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। মেয়ে দু’টিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।”

eve teasing sujit jain sonu howrah southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy