Advertisement
E-Paper

বাড়িভাড়া বাকি, বেদম মারে খুন ভাড়াটে

রবিবার দীপকের ১ হাজার টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রবিবার তিনি বাড়িমালিককে টাকা দিতে পারেননি। তবে বুধবার টাকা মিটিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০৮:৪০
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

বাড়িভাড়া বাকি ছিল মাত্র এক হাজার টাকা। সেই ‘অপরাধেই’ খুন হতে হল হাওড়ার এক যুবককে। রবিবার রাতে হাওড়ার মালিপাঁচঘরা থানা এলাকায় জয়বিবি রোডের ঘটনা। পুলিশ জানায়, দীপক চৌধুরী (২৮) নামে ওই যুবককে খুনের অভিযোগে বাড়ির মালিক শশী সিংহ, তাঁর ছেলে রোহিত সিংহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোহিতের দুই বন্ধু রোশন এবং আকাশকেও পাকড়াও করেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, এই ঘটনায় জড়িত আরও দু’জনের খোঁজ চলছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, প্লাস্টিক কারখানার শ্রমিক দীপক জয়বিবি রো়ডের একটি বাড়িতে বৃদ্ধা মা শান্তাদেবী চৌধুরী এবং চার বছরের ছেলে সিদ্ধার্থকে এক কামরার একটি ঘরে নিয়ে থাকতেন। তাঁর স্ত্রী কিছু দিন আগে সংসার ছে়ড়ে চলে গিয়েছেন। প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে ভাড়া দেওয়ার কথা ছিল। কারখানা থেকে ঠিক মতো মজুরি না মেলায় পাঁচ মাসের ভাড়া বাকি পড়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে প্রায়ই বাড়ি মালিক শশীদেবী এসে দীপককে ধমক দিতেন। বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দিতেন। রবিবার দীপকের ১ হাজার টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রবিবার তিনি বাড়িমালিককে টাকা দিতে পারেননি। তবে বুধবার টাকা মিটিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, বাড়িমালিকের ছেলে রোহিত সন্ধ্যায় ঘটনার কথা জানতে পারেন। তার পরেই দীপকের ঘরে এসে চড়াও হন। তাঁকেও বুধবার টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা জানান। এর পরেই রোহিত চলে যান। রাতে ফের চার জন বন্ধুকে নিয়ে দীপকের ঘরে হাজির হন। লাথি মেরে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে রোহিত ও তাঁর দলবল। দীপককে টানতে টানতে রাস্তায় নিয়ে মারধর শুরু করেন।

ওই এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা রোহিতদের এই কীর্তি দেখেছিলেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, রাস্তায় ফেলে কার্যত ফুটবলের মতো লাথি মারা হতে থাকে দীপককে। এর পরে লাঠি, বাঁশ দিয়েও পেটানো হয়। মার খেতে খেতে নেতিয়ে পড়েছিলেন দীপক। তার পর তাঁকে তুলে নিয়ে কাছের একটি ল্যাম্পপোস্টে মাথা ঠুকে দেওয়া হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় দীপক কাতরাতে শুরু করে তাঁকে রাস্তায় ফেলে রেখেই চম্পট দেয় রোহিতেরা।

এর পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন দীপককে তুলে নিয়ে টি এল জায়সবাল হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হল। রাত তিনটে নাগাদ সেখানেই মারা যান দীপক। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রের দাবি, রোহিত এবং তাঁর দলবল এলাকায় নানা কুকাজের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের সঙ্গে অপরাধ জগতের যোগ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মারধরের খবর পেয়ে রাতেই এলাকা থেকে রোশন ও আকাশকে পাকড়াও করা হয়। দীপককে রাস্তায় ফেলে ঘাপটি মেরে ছিল তাঁরা। পরে ভোরে গ্রেফতার করা হয় শশী ও তাঁর ছেলে রোহিতকে। ঘটনার কথা জেনে এ দিন দীপকের বাড়িতে যান হাওড়া পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাবিত্রী দেবী সাউ।

শান্তাদেবী তাঁকে বলেন, ‘‘ছেলেটাকে চোখের সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলল ওরা!’’ স্থানীয় বাসিন্দা বদরুজ্জা আনসারি বলেন, ‘‘এমন অপরাধ কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দোষীদের অবিলম্বে শাস্তি চাই আমরা।’’

beaten to death Murder Howrah হাওড়া
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy