Advertisement
E-Paper

গঙ্গায় ডুবন্ত মহিলাকে উদ্ধার করলেন তরুণী

গঙ্গায় একবার ডুবছেন এবার উঠছেন এক মহিলা। দেখে প্রথমে ভেবেছিলেন স্নান করছেন। কিন্তু একটু পরেই ভুল ভাঙে পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা সুমনের। বুঝতে পারেন মহিলা ডুবে যাচ্ছেন। আগুপিছু না ভেবেই গঙ্গায় নেমে পড়েন তিনি। ডুবন্ত মহিলাকে টেনে তোলার চেষ্টা করতে থাকেন।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০৯
উদ্ধারের পর মহিলাকে জল খাওয়াচ্ছেন সুমন।—নিজস্ব চিত্র।

উদ্ধারের পর মহিলাকে জল খাওয়াচ্ছেন সুমন।—নিজস্ব চিত্র।

গঙ্গায় একবার ডুবছেন এবার উঠছেন এক মহিলা। দেখে প্রথমে ভেবেছিলেন স্নান করছেন। কিন্তু একটু পরেই ভুল ভাঙে পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা সুমনের। বুঝতে পারেন মহিলা ডুবে যাচ্ছেন। আগুপিছু না ভেবেই গঙ্গায় নেমে পড়েন তিনি। ডুবন্ত মহিলাকে টেনে তোলার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্ত ভরা গঙ্গায় স্রোতের টানে সমস্যা হওয়ায় চিৎকার করতে থাকেন সুমন। তাঁর চিৎকার শুনে গঙ্গায় ঝাঁপিয়ে পড়েন স্থানীয় যুবক মহাদেব রাম। দু’জনে মিলে মহিলাকে উদ্ধার করে পাড়ে নিয়ে আসেন।

শ্রীরামপুরের রায়ঘাটে মঙ্গলবার দুপুরে এমন ঘটনায় ভিড় জমে যায় গঙ্গার পাড়ে। কোথা থেকে এলেন ওই মহিলা, কেনই বা গঙ্গায় ডুবতে যাচ্ছিলেন নানা প্রশ্ন চারদিকে। তার মধ্যেই কয়েকজন মহিলার জন্য পোশাকের ব্যবস্থা করেছেন। মহিলা জানান, পারিপারিক অশান্তির জেরে তিনি আত্মঘাতী হতে চেয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন দুপুরে ওই মহিলা রায়ঘাটে এসে বসেছিলেন। এক সময়ে গঙ্গায় নামেন। অনেকেই তখন ঘাটে স্নান করছিলেন। বেলা আড়াইটা নাগাদ ঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। বৃষ্টিও পড়ছিল। ঘাটে লোকজন কম থাকার সুযোগে গঙ্গায় নেমে পড়েন মহিলা। কিন্তু ভরা গঙ্গায় একটু পরেই হাবুডুবু খেতে থাকেন।

ঘাটের এক পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সুমন পাসোয়ান নামে ওই তরুণী। বললেন, ‘‘দুপুরে সেলাই শিখতে যাই। আজ যেতে ইচ্ছে করছিল না। তাই গঙ্গার ঘাটে এসে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি জলে ওই মহিলার প্রায় নাক পর্যন্ত ডুবে গিয়েছে। জল খেয়ে ফেলেছিলেন। ডুবে যাচ্ছেন বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গেই জলে নেমে পড়ি। কিন্তু ভরা গঙ্গায় মহিলাকে পাড়ে টেনে আনতে কষ্ট হচ্ছিল। তাই চিৎকার করতে থাকি। মহাদেবদা হাত লাগানোয় কাজটা সহজ হয়। ভাগ্যিস আজ সেলাই শিখতে যাইনি!’’ ঘাটের পাশেই একটি আবাসনের তলায় দোকান রয়েছে মহাদেব রামের। মহিলাকে বাঁচাতে পেরে দু’জনেই বেশ তৃপ্ত। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভরা গঙ্গায় নেমে মহিলাকে বাঁচানোয় সকলেই তখন সুমন, মহাদেবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহ বলেন, ‘‘মেয়ে হয়ে যে ভাবে একজনের জীবন বাঁচাতে সুমন ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, সে জন্য কোনও প্রশংসাই তাঁর জন্য যথেষ্ট নয়। সুমন এবং মহাদেববাবু খুব ভাল দৃষ্টান্ত রাখলেন।’’ যদিও সুমনের জবাব, ‘‘কি এমন করেছি। আর কেউ থাকলেও এমনটাই করতেন। মহিলাকে যে বাঁচানো গিয়েছে সেটাই অনেক।’’

মহিলা জানান, তাঁর বাড়ি পুড়শুড়ায়। কাউন্সিলরের মাধ্যমে তাঁর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বাড়ির লোকেরা জানান, পারিবারিক ঝগড়ার জেরে ওই মহিলা সকাল ১০টা নাগাদ ‘রাগ করে’ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এ দিনই সন্ধ্যায় বাড়ির লোকজন শ্রীরামপুরে এসে মহিলাকে ফিরিয়ে নিয়ে যান।

Ganga Drowning
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy