Advertisement
E-Paper

আলোচনায় কাটল জট, আজ খুলছে শ্যামনগর নর্থ চটকল

আলোচনার টেবিলেই কাটল অচলাবস্থা। আজ, বৃহস্পতিবার, বছরের প্রথম দিনেই খুলছে ভদ্রেশ্বরের শ্যামনগর নর্থ জুটমিল। গত কয়েক দিন ধরেই বন্ধ ওই মিল খুলতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চটকলের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন এবং রাজ্যের শ্রমদফতরের দফায় দফায় আলোচনা চলছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৪
বন্ধ মিলের গেটে শ্রমিকেরা।—নিজস্ব চিত্র।

বন্ধ মিলের গেটে শ্রমিকেরা।—নিজস্ব চিত্র।

আলোচনার টেবিলেই কাটল অচলাবস্থা।

আজ, বৃহস্পতিবার, বছরের প্রথম দিনেই খুলছে ভদ্রেশ্বরের শ্যামনগর নর্থ জুটমিল। গত কয়েক দিন ধরেই বন্ধ ওই মিল খুলতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চটকলের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন এবং রাজ্যের শ্রমদফতরের দফায় দফায় আলোচনা চলছিল। বুধবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে শ্রমিকদের দাবি মেনে, কাজের সময় কমানোর সিদ্ধান্ত থেকে ওই চটকল কর্তৃপক্ষ সরে আসার পরেই মিল খোলার সম্ভাবনা দেখা দেয়। উত্‌পাদন শুরু করতে বছরের প্রথম দিনটিকেই বেছে নেন মিল কর্তৃপক্ষ।

হুগলি জেলা জুড়ে গঙ্গা বরাবর ছড়িয়ে রয়েছে রাজ্যের অধিকাংশ চটকলগুলি। তবে জুটের ব্যবহার ক্রমেই হ্রাস পাওয়ায় সেগুলির অধিকাংশের অবস্থাই ভাল নয়। লেগেই রয়েছে শ্রমিক অসন্তোষ। বরাত না মেলায় চটকলে মন্দা নতুন নয়। মিল মালিকদের দাবি, মন্দার কারণেই বেশিরভাগ মিলে কাজের দিন এবং শিফ্ট, দুই কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। গত কয়েক মাস ধরে তা নিয়েই অশান্তি ছড়াচ্ছে চটকলগুলিতে।

শ্যামনগর নর্থ জুটমিলে সপ্তাহে ৬দিন কাজ চলছিল। গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে মিল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, এ বার থেকে ৬ দিনের পরিবর্তে সপ্তাহে ৫ দিন মিল খোলা থাকবে। কাঁচা পাটের মূল্যবৃদ্ধি এবং স্বল্প উত্‌পাদনশীলতার কারণেই ওই সিদ্ধান্ত বলে তাঁদের দাবি। কর্তৃপক্ষের ওই ঘোষণার পরেই শুরু হয় শ্রমিক অসন্তোষ। তাঁরা অবিলম্বে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে কাজ বন্ধ করে দেন। বন্ধ হয়ে যায় উত্‌পাদন।

অচলাবস্থা কাটাতে শ্রম দফতর হস্তক্ষেপ করে। এ ব্যাপারে বুধবার দুপুরে চন্দননগরের মহকুমাশাসকের দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয় শ্রম দফতরের তরফে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত, চন্দননগরের উপ-শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত। মালিকপক্ষের তরফে মিলের সিইও কল্যাণ মিত্র-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। ছিলেন ২২টি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। আলোচনায় স্থির হয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে সপ্তাহে ফের সপ্তাহে ৬ দিন তিনটি শিফ্টে কাজ হবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি বিদ্যুত্‌ রাউত। তাঁর মন্তব্য, “প্রশাসনের মধ্যস্থতায় দ্রুত সমস্যা মেটায় শ্রমিক মহল খুশি।” তবে, কেন্দ্রীয় সরকার চটের পরিবর্তে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ে ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। এ দিনই ওই মিলের অচলাবস্থা কাটাতে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে দেখা করেন এসইউসি প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন এআইইউটিইউসি। ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, “ওই মিলের অচলাবস্থা কেটেছে। চটের ব্যবহার নিয়েও আমরা কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছি।”

চটের বাজার না থাকায় মিলগুলির দূরবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মিল মালিকেরা শ্রমিকদের অবসরকালীন ভাতা এবং গ্র্যাচুইটি নিয়েও দীর্ঘ দিন ধরে টালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে চটকল শ্রমিকদের হয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই আইনি লড়াই চালাচ্ছে একটি বেসরকারি সংস্থা। শ্রম আদালতে তাঁদের ন্যায্য প্রাপ্যের জন্য ক্রমাগত মামলা লড়ছেন রাজ্যের পরিবেশ দফতরের প্রাক্তন মুখ্য আইন অফিসার বিশ্বজিত্‌ মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, বন্ধ চটকল খোলার পাশাপাশি আরও একটি ‘ভাল’ খবর, ভিক্টোরিয়া-সহ বেশ কয়েকটি চটকলে শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালিক পক্ষ।

তাঁর দাবি, “গ্র্যাচুইটি না দেওয়ায় ভিক্টোরিয়া জুটমিল কর্তৃপক্ষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জেলা শ্রম-আধিকারিক। তার পরিপ্রেক্ষিতেই ওই মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পাওনা মিটিয়ে দেওয়া কথা ঘোষণা করেছে।”

shyamnagar southbengal north jute mill reopening
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy