Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ইন্টারনেটে ফোন নম্বর দিয়ে ‘প্রতিশোধ’, ধৃত

সামান্য দু’টো গোলমাল! তার জেরে দু’জনের ফোন নম্বর পৌঁছে গেল ইন্টারনেটে কেনাবেচার একটি ওয়েবসাইটে। তার একটিতে মহিলা মডেল চাইলে যোগাযোগ করার অনুরোধ। অন্যটিতে যৌনশক্তিহীন ব্যক্তির জন্য মনের মতো সঙ্গী চাইলে ফোন করার আর্জি। দিবারাত্রি ফোনে ফোনে অতিষ্ঠ হওয়ার পরে পুলিশে খবর দিলেন দু’জনেই। তদন্তে জানা গেল, গোলমালের জেরে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতেই এই কাণ্ড এবং তা ঘটিয়েছেন একই ব্যক্তি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৪০
Share: Save:

সামান্য দু’টো গোলমাল! তার জেরে দু’জনের ফোন নম্বর পৌঁছে গেল ইন্টারনেটে কেনাবেচার একটি ওয়েবসাইটে। তার একটিতে মহিলা মডেল চাইলে যোগাযোগ করার অনুরোধ। অন্যটিতে যৌনশক্তিহীন ব্যক্তির জন্য মনের মতো সঙ্গী চাইলে ফোন করার আর্জি। দিবারাত্রি ফোনে ফোনে অতিষ্ঠ হওয়ার পরে পুলিশে খবর দিলেন দু’জনেই। তদন্তে জানা গেল, গোলমালের জেরে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতেই এই কাণ্ড এবং তা ঘটিয়েছেন একই ব্যক্তি।

ফোনে এ ভাবে হেনস্থার শিকার দুই ব্যক্তিরই বাড়ি হাওড়ায়। তাঁদের এক জন চিকিত্‌সক। দু’জনের অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে হাওড়া সিটি পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। বুধবার রাতে হাওড়ার চুনাভাটি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় শমীক সরকার নামে এক যুবককে। তিনি স্থানীয় একটি কম্পিউটার সেন্টারের প্রশিক্ষক।

কেন এমন করলেন ওই ব্যক্তি?

তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, মাস তিনেক আগে রাস্তায় মোটরবাইক আরোহী এক চিকিত্‌সকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে সাইকেল আরোহী শমীকের। এ নিয়ে দু’জনের তীব্র বচসা হয়। শমীক ওই চিকিত্‌সককে ‘দেখে নেব’ বললে তিনিও পাল্টা নিজের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে তাঁকে ‘দেখে নিতে’ চ্যালেঞ্জ জানান। এর কয়েক দিন পরে একটি অনলাইনে কেনাবেচার সাইটে মহিলা মডেল সরবরাহের বিজ্ঞাপনে যোগাযোগের নম্বর হিসেবে ওই চিকিত্‌সকের ভিজিটিং কার্ডে থাকা ফোন নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে এক মহিলার ‘অশ্লীল’ ছবি।

পুলিশ জানায়, ওই চিকিত্‌সকের অভিযোগের তদন্তে নেমে হাওড়া সিটি পুলিশ যে কেব্‌ল নেটওয়ার্ক থেকে ওই বিজ্ঞাপনটি এসেছিল, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই সাইটের ক্যালিফোর্নিয়ার অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, কোন কোন কম্পিউটার থেকে এবং কোন ব্যক্তির জি-মেল থেকে ওই বিজ্ঞাপনটি মেল করা হয়েছিল। তাঁর ছবি-সহ ঠিকানাও পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেয় ওই সংস্থা। পুলিশের দাবি, তা থেকেই শমীককে চিহ্নিত করা হয়।

এর পাশাপাশি হাওড়ার বাসিন্দা আর এক যুবক পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, অনলাইনে কেনাবেচার একটি সাইটে তাঁর নম্বর দিয়ে যৌনশক্তিহীন ব্যক্তির জন্য সঙ্গী চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। এ জন্য তাঁকে ফোনে নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করা হচ্ছে বলে পুলিশকে জানান তিনি। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এই ঘটনার পিছনেও রয়েছে শমীক।

পুলিশ জানায়, ওই যুবক ও শমীক এক সময়ে চুনাভাটির এক যুব কম্পিউটার সেন্টারে সহকর্মী ছিলেন। কাজ নিয়ে শমীকের সঙ্গে গোলমালের জেরে তিনি কাজ ছেড়ে দেন। পুলিশের দাবি, তাঁর উপরে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে ওই চিকিত্‌সকের মতো তাঁরও ফোন নম্বর দিয়ে মিথ্যা বিজ্ঞাপন দেন শমীক। পুলিশ জানায়, এ ক্ষেত্রেও ওই সাইটের কেন্দ্রীয় অফিস থেকে জানা যায়, শমীকের মেল অ্যাড্রেস থেকেই ওই কাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার হাওড়ার এডিসি (দক্ষিণ) জাফর আজমল কিদোয়াই ও এসি ডিডি সৌমিক সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, সমস্ত সূত্র খতিয়ে দেখার পরে চিকিত্‌সক ও ওই যুবককে শমীকের ছবি দেখাতেই তাঁরা শনাক্ত করেন। এর পর বুধবার রাতে সাইবার অপরাধে শমীককে তাঁর বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE