Advertisement
E-Paper

উন্নয়নের গতি বাড়াতে জেলা প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণের ভাবনা

মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছায় হাওড়া শহরে নিয়ে আসা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর নবান্ন। শহরের পাশাপাশি এ বার জেলার মহকুমা শহর ও গ্রামীণ এলাকাতেও শুরু হয়েছে কর্মযজ্ঞ। ইতিমধ্যেই জেলায় পাঁচটি পুরসভা গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভাগ করা হচ্ছে থানা। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের কিছু অংশ যাতে উলুবেড়িয়ায় সরিয়ে আনা যায় সে বিষয়েও উদ্যোগী হয়েছে শাসকদল।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:০৭
চালু হয়েছে বাগনানের উড়ালপুল। উলুবেড়িয়াতেও এমন উড়ালপুলের প্রস্তাব রয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।

চালু হয়েছে বাগনানের উড়ালপুল। উলুবেড়িয়াতেও এমন উড়ালপুলের প্রস্তাব রয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছায় হাওড়া শহরে নিয়ে আসা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর নবান্ন। শহরের পাশাপাশি এ বার জেলার মহকুমা শহর ও গ্রামীণ এলাকাতেও শুরু হয়েছে কর্মযজ্ঞ। ইতিমধ্যেই জেলায় পাঁচটি পুরসভা গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভাগ করা হচ্ছে থানা। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের কিছু অংশ যাতে উলুবেড়িয়ায় সরিয়ে আনা যায় সে বিষয়েও উদ্যোগী হয়েছে শাসকদল। চালু হয়েছে বাগনান রেলওয়ে ফ্লাইওভার। উলুবেড়িয়াতেও এ ধরনের ফ্লাইওভারের প্রস্তাব রয়েছে। খুব শীঘ্রই ওই ফ্লাইওভারের কাজও শুরু হবে বলে রেল ও রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর সূত্রের খবর। বাগনানের উড়ালপুল শ্যামপুরের সঙ্গে জেলার বাকি অংশের যোগাযোগ সহজ করে দিয়েছে। গাদিয়াড়া, গড়চুমুকের মতো পর্যটনকেন্দ্র এ বার অনেক বেশি পর্যটক টানতে পারবে বলে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের ধারণা। আর তাই এই দু’টি পর্যটনকেন্দ্রকেই নতুন করে সাজানোর কাজে হাত দিয়েছে হাওড়া জেলা পরিষদ।

জেলা প্রশাসনের কিছু অংশ উলুবেড়িয়ায় সরিয়ে আনার প্রসঙ্গে সাংসদ সুলতান আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা চাইছি অতিরিক্ত জেলাশাসকদের একটা অংশ যাতে উলুবেড়িয়ায় নিয়মিত বসেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনাও করেছি। উন্নয়নের যে কর্মযজ্ঞ জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে তা অনেকটাই পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে জেলা প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে।’’

রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, মুম্বই-পুনে ‘টোয়াইন সিটি’-র আদলে কলকাতার পাশাপাশি হাওড়াকেও গড়ে তোলা হবে। নবান্ন যদি হয় তার প্রথম ধাপ, দ্বিতীয় পর্যায় হল জেলার বাকি অংশ। সোনালি চতুর্ভুজ প্রকল্পে জেলার বুক চিরে চলে গিয়েছে মুম্বই রোড তথা ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। একে ছয় লেনের রাস্তা করার কাজও এগোচ্ছে দ্রুতদতিতে। কাজ শেষ হলে যান চলাচলের গতি অনেকটা বাড়বে, জেলার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ আরও সুগম হবে।

শিল্পশহর হিসাবে হাওড়ার খ্যাতি আগে থেকেই ছিল। মুম্বই রোড সম্প্রসারণের ফলে রাস্তার দু’পাশে শিল্প গড়ার ধুম পড়েছে। ইতিমধ্যেই বহু শিল্পদ্যোগী জমি কিনেছেন। জমির চাহিদা এখন আর শুধু মুম্বই রোডের দু’দিকেই সীমাবদ্ধ নেই, তা আশপাশের পাঁচলা, ডোমজুড়, জগৎবল্লবপুর, বাগনানের মতো এলাকাতেও প্রসারিত হয়েছে। গড়ে উঠেছে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কিছু শিল্পতালুক। এই সব শিল্পতালুকে জমির মিউটেশন ও কনভারশন দ্রুত সম্পন্ন করতে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে গড়া হয়েছে পৃথক সেল। বিভিন্ন মহলে ইতিমধ্যেই ‘এডুকেশন হাব’-এর তকমা পাওয়া উলুবেড়িয়ায় তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। পাশাপাশি সাঁকরাইল, ডোমজুড় এলাকাতেও নামী প্রতিষ্ঠানগুলি স্কুল খুলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

উন্নয়নের এই কর্মযজ্ঞের পথ ধরেই রাজ্য সরকার বাগনান, আন্দুল, আমতা, ডোমজুড় এবং বালি (উত্তর) এই পাঁচটি পুরসভা গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পুরসভা গঠনের প্রাথমিক প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক কর্তার কথায়, নগরায়ণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিকাশি এবং রাস্তা তৈরিতে আরও বেশি টাকা খরচ করতে হলে পুরসভা গঠন ছাড়া কোনও বিকল্প পথ নেই। হাওড়া জেলায় পাঁচটি পুরসভা গঠিত হলে পঞ্চায়েতের এলাকা জেলার প্রায় অর্ধেক হয়ে যাবে। পুরো জেলায় নগরায়ণ প্রক্রিয়া সফল করতে এই পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে পুর ও নগরোরন্নয়ন দফতরের দাবি। ইতিমধ্যেই হাওড়া কমিশনারেট থেকে আলাদা করে তৈরি হয়েছে গ্রামীণ জেলা পুলিশ। এ বার থানা ভাগ করতেও উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা থানার কিছু অংশ নিয়ে পেঁড়োয় নতুন থানা তৈরি করা হবে বলে জেলা গ্রামীণ পুলিশ সূত্রের খবর। সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের পদস্থ কর্তারা পেঁড়োতে ঘুরেও গিয়েছেন। এখানে যে পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে সেটিকেই থানায় উন্নীত করার বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়াও বিধায়ক, সাংসদ ছিলেন সেই আলোচনায়। এ ছাড়া প্রস্তাব রয়েছে বাগনান, উলুবেড়িয়া এবং শ্যামপুর থানাকেও ভেঙে দু’ভাগ করার।

দীঘদিন ধরে আমতাকে মহকুমা করার দাবি জানিয়ে আসছেন সেখানকার মানুষ। এক সময় এ বিষয়ে কিছুটা পদক্ষেপও করেছিল রাজ্য প্রশাসন। তারই সূত্র ধরে এখানে পৃথক মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর এবং আদালত তৈরি হয়। বর্তমানে জেলা জুড়ে উন্নয়নের যে পরিকল্পনা করা হচ্ছে তাতে ফের পুরনো দাবিতে সরব হয়েছেন আমতার মানুষ।

nurul absar decentralization southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy