Advertisement
E-Paper

কেঁচো সারের প্রয়োগ বাড়াতে মডেল গ্রাম হচ্ছে খানাকুলে

জৈব সার হিসেবে কেঁচো সারের ব্যবহার বাড়াতে প্রায় তিন বছর ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে আরামবাগ মহকুমা কৃষি দফতর। এ বার একটি গ্রামকে মডেল হিসেবে ধরে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে হাতেনাতে ওই সারের প্রয়োগে ফলন বাড়াতে উদ্যোগী হল তারা। এ জন্য বাছা হয়েছে খানাকুল-১ ব্লকের উদয়পুর গ্রামকে। পাঁচ মাস ধরে চলছে সেই কাজ। ওই গ্রামের কিছু চাষিও জানিয়েছেন, কেঁচো সার ব্যবহার করে তাঁরা উপকৃত হয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৪ ০১:০২

জৈব সার হিসেবে কেঁচো সারের ব্যবহার বাড়াতে প্রায় তিন বছর ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে আরামবাগ মহকুমা কৃষি দফতর। এ বার একটি গ্রামকে মডেল হিসেবে ধরে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে হাতেনাতে ওই সারের প্রয়োগে ফলন বাড়াতে উদ্যোগী হল তারা। এ জন্য বাছা হয়েছে খানাকুল-১ ব্লকের উদয়পুর গ্রামকে। পাঁচ মাস ধরে চলছে সেই কাজ। ওই গ্রামের কিছু চাষিও জানিয়েছেন, কেঁচো সার ব্যবহার করে তাঁরা উপকৃত হয়েছেন।

মহকুমা কৃষি আধিকারিক অশ্বিনী কুম্ভকার বলেন, “উদয়পুরকে আমরা জৈব গ্রামের মডেল হিসেবে রূপ দিতে চাইছি। যাকে সামনে রেখে মহকুমা জুড়ে কেঁচো সারের জনপ্রিয়তা এবং প্রয়োগ বিস্তার করা হবে।”

তিন বছর ধরে চেষ্টার পরেও গোটা মহকুমায় কেঁচো সারের প্রয়োগ যে সে ভাবে বাড়েনি, তার পিছনে কৃষি দফতরের হাতেনাতে শেখানোর ব্যাপারে উদাসীনতার অভিযোগ এবং ফলন নিয়ে নিজেদের দ্বিধাগ্রস্ততার কথা জানিয়েছেন চাষিরা। কৃষি দফতরও মেনে নিয়েছে, মহকুমার সর্বত্র হাতেনাতে ওই সারের প্রয়োগ দেখানোর মতো পরিকাঠামো তাদের নেই। তাই মডেল হিসেবে বাছা হয়েছে উদয়পুরকে।

কৃষি দফতর সূত্রের খবর, আপাতত ওই গ্রামের ৫০ জন প্রগতিশীল চাষিকে নিয়ে আদর্শ গ্রাম তথা জৈব গ্রাম গঠনের অভিযান শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও, আরও ১৫০ জন উৎসাহী চাষিকে কেঁচো সার তৈরির সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। নানা পচনশীল বর্জ্যের মিশ্রণ প্রায় ১৫ দিন পলিব্যাগে মুখ বন্ধ করে রাখার পরে নির্দিষ্ট পরিমাণ গোবর নিয়ে ফের মিশ্রণ করে সার তৈরির নির্দিষ্ট চেম্বারে রাখতে হবে। ৩০ দিনের মাথায় সেগুলি ফের মিশিয়ে প্রয়োজন মতো কেঁচো ছেড়ে দিতে হবে। ১০০-১২০ দিনের মাথায় তৈরি হয়ে যাবে কেঁচো সার।

প্রকল্পটি হাতে-কলমে পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন ব্লক কৃষি আধিকারিক হরষিত মজুমদার এবং নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের পক্ষে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কো-অর্ডিনেটর পার্থ রানা। তাঁদের দাবি, “কেঁচো সার প্রয়োগ করে রাসায়নিক সারের চেয়ে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ফলন বেশি হয়। ফসলের বর্ণ, গন্ধ, স্বাদ এবং অন্যান্য গুণমানের উন্নয়ন ঘটানোও সম্ভব।” তাঁরা জানিয়েছেন, মহকুমায় যাঁরা কেঁচো সার তৈরিতে উৎসাহী, তাঁদের কেবল ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে পাকা চেম্বার করতে হবে। বাকি সরঞ্জাম, পলিব্যাগ এবং কাঁচামাল হিসাবে কেঁচো সরকারি অনুদান হিসাবে পাওয়া যাবে।

কিন্তু উদয়পুরকে কেন মডেল হিসেবে তুলে ধরার জন্য বাছা হল?

কৃষি দফতর এবং নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমার অন্য গ্রামের তুলনায় উদয়পুরের মানুষদের কৃষি-নির্ভরতা বেশি। বন্যাপ্রবণ এলাকা হলেও সেখানকার প্রায় ৩৫০ চাষি প্রতি মরসুমে ফসল উৎপাদনের চেষ্টা করেন। বন্যায় আমন ধান-সহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হলেও পরবর্তী বিকল্প চাষে তাঁরা উদ্যোগী হন। তাই সেই উদ্যোগী চাষিদের হাত ধরেই কেঁচো সারের প্রসার ঘটানো সহজ।

ইতিমধ্যেই কেঁচো সার ব্যবহার করেছেন, এমন চাষিদের মধ্যে রমাপ্রসাদ কারক বলেন, “কিছু শাকসব্জি চাষে কেঁচো সার প্রয়োগ করে অভাবনীয় ফল পেয়েছি। পুঁই-সহ বিভিন্ন শাকের পাতার চেহারাই আলাদা। রান্নার পর স্বাদও অসাধারণ। ফলনও বেশি।” আর এক চাষি জগন্নাথ জানার কথায়, “বাড়িতে শশা চাষ করেছিলাম। সেই শশা আকারে বড়। পোকা হয়নি। স্বাদও ভাল।” প্রায় একই বক্তব্য আরও অনেকের।

khanakul southbengal model village
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy