ফাঁকা ক্লাসঘরে গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার হল এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বিকালে চুঁচুড়ার হুগলি ইনিস্টিটিউট অফ টেকনোলজি কলেজে। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ছাত্রের নাম অর্জুন ওরাঁও (২৪)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্জুন হুগলি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ডিপ্লোমা কোর্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র চিলেন। বুধবার দুপুরে ক্লাস শেষ হওয়ার পর সমস্ত ছাত্রছাত্রী বেরিয়ে গেলে দোতলার ক্লাস ঘরে পাখার সঙ্গে গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন তিনি। বিকাল ৪টে নাগাদ কলেজের পাহারাদার মহম্মদ নৌসাদ ক্লাস ঘরের দরজা বন্ধ করতে গিয়ে দেখেন ভিতর থেকে তা বন্ধ। পুলিশকে নৌসাদ জানিয়ছেন, ধাক্কা দিলেও দরজা না খোলায় জানলা দিয়ে উঁকি মেরে তিনি দেখেন পাখার সঙ্গে কেউ একটা ঝুলছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি জানান। তারপর ক্লাসঘরের দরজা ভেঙে অর্জুনকে ওই অবস্থায় দেখে পুলিশে খবর দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে চুঁচুড়া হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসকেরা অর্জুনকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অর্জুনবাবুর দেহের পাশেই পড়ে থাকা তাঁর ব্যাগে একটি খাতার মধ্যে এক সহপাঠীকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠি মিলেছে। তাতে লেখা আছে ‘তোমাকে আমি ভালবাসি। তুমি আমায় ভুলে যেও না’। চুঁচুড়ার পেয়ারাবাগান গোয়ালটুলির বাসিন্দা লক্ষণ ওরাঁও এর বড় ছেলে অর্জুন মেধাবী ছাত্র ছিলেন বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। কলেজ সংসদের যুগ্ম জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন তিনি। কলেজের অধ্যক্ষ অসিত মান্না বলেন, ‘‘অর্জুন ভাল ও মেধাবী ছাত্র হিসাবে কলেজে পরিচিত ছিল। কলেজের যে কোনও অনুষ্ঠানে ওর ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। কী কারণে আত্মহত্যা করল বুঝতে পারছি না।’’
মা সরস্বতী দেবী বলেন, “কলেজ আর পড়াশুনাকে ও খুব ভালবাসত। কয়েক বছর ধরে এক সহপাঠীর সঙ্গে ছেলের ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। কিন্তু কয়েক মাস ধরে বুঝতে পারছিলাম দু’জনের মধ্যে কিছু একটা হয়েছে। ও মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিল। খালি বলত ‘আমাকে কেন ও এড়িয়ে চলছে। আমার সঙ্গে কথা বলছে না। আমি ওকে খুব ভালবাসি’।”
বাবা লক্ষ্মণবাবু বলেন, ‘‘সবাই ওকে খুব ভালবাসত। ওর খুব ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা শেষ করে ভাল চাকরি করবে। কেন এমনটা করল বুঝতে পারছি না। আমরা এর উপযুক্ত তদন্ত চাইছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy