Advertisement
E-Paper

খেলার মানোন্নয়নে ঢেলে সাজা হচ্ছে ইস্টার্ন মাঠ

মাঠ রয়েছে নামেই। জেলা স্তরের খেলাধুলোর আয়োজন বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। রাত নামলেই মাঠে অসামাজিক কাজকর্ম নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগও নতুন নয়। ছিল মাঠ বাঁচাতে প্রশাসনের উদাসীনতার অভিযোগও। অবশেষে, ক্রীড়া দফতর থেকে টাকা মেলায় চুঁচুড়ার জেলাশাসকের দফতরের সামনে সেই ইস্টার্ন মাঠের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারে হাত দিল জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন।

তাপস ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০১:২৬
মাঠের চারপাশে বসছে লোহার রেলিং।—নিজস্ব চিত্র।

মাঠের চারপাশে বসছে লোহার রেলিং।—নিজস্ব চিত্র।

মাঠ রয়েছে নামেই। জেলা স্তরের খেলাধুলোর আয়োজন বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। রাত নামলেই মাঠে অসামাজিক কাজকর্ম নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগও নতুন নয়। ছিল মাঠ বাঁচাতে প্রশাসনের উদাসীনতার অভিযোগও। অবশেষে, ক্রীড়া দফতর থেকে টাকা মেলায় চুঁচুড়ার জেলাশাসকের দফতরের সামনে সেই ইস্টার্ন মাঠের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারে হাত দিল জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন।

ইতিমধ্যেই রাতে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা ঠেকাতে মাঠ ঘেরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ছ’ফুটের লোহার রেলিংয়ে। দু’প্রান্তে তৈরি করা হয়েছে দু’টি গেট। মাঠকে খেলার উপযোগী করতে বসানো হচ্ছে নতুন ঘাস।

জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঠটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য ২১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য ক্রীড়া দফতর। অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রাক্তন ফুটবলার তনুময় বসু বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মাঠটি অবহেলায় পড়েছিল। অবশেষে রাজ্য ক্রীড়া দফতর থেকে মাঠ সংস্কারের টাকা মিলেছে। মাঠে জল দেওয়ার জন্য ৯৫ হাজার টাকায় একটি যন্ত্র কেনা হয়েছে। মাঠ পরিচর্যার জন্য চার জন মালি নিয়োগ করা হয়েছে। আশা করি, বাংলা নববর্ষের শুরু থেকেই মাঠটিতে পুরোদস্তুর খেলাধুলো চালু করা যাবে। প্রথম ডিভিশন ফুটবলও আয়োজন করা হবে।”

হুগলির জেলাসদর চুঁচুড়ায় বড় মাঠ তিনটি। ইস্টার্ন মাঠ, মাঝের মাঠ এবং বক্সিং মাঠ। তিনটি মাঠই দেখভাল করে জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন। এক সময়ে তিনটি মাঠেই ফুটবল, ক্রিকেট খেলা ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হত। এর মধ্যে বেশি খেলাধুলো হত ইস্টার্ন মাঠেই। অতীতের অনেক দিকপাল খেলোয়াড় এই মাঠে খেলেছেন। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে কলকাতার নামী দলের হয়ে খেলেছেন অনেক খেলোয়াড়। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তনুময়, স্বরূপ দাস, সুকান্ত ভট্টাচার্য, চন্দন দে, গৌতম ঘোষরা।

কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ওই মাঠ সংস্কার না হওয়ায় জেলা স্তরের খেলাধুলোর আয়োজন আর হচ্ছিল না। সকাল-বিকেল শুধু ছোটরা এখানে খেলাধুলো করছিল। রাতে মাঠে অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। এ জন্য তাঁরা জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আন্দোলনও করেছিলেন। কিন্তু এত দিন মাঠ সংস্কারে কোনও উদ্যোগ তাঁদের চোখে পড়েনি।

এলাকায় খেলাধুলোর মানোন্নয়নের স্বার্থে কয়েক মাস আগে চুঁচুড়ার বিধায়ক তপন মজুমদার মাঠটি সংস্কারের জন্য উদ্যোগী হন। জেলা প্রশাসন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার সহযোগিতা নিয়ে মাঠ সংস্কারের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছিল রাজ্য ক্রীড়া দফতরে। ওই দফতর তা অনুমোদন করে। গত ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় সংস্কার-কাজ।

বিধায়ক তপনবাবু বলেন, “দীর্ঘদিন মাঠ সংস্কারের চেষ্টা হয়নি। মাঠটি খেলাধুলোরও উপযুক্ত ছিল না। এলাকায় খেলাধুলোর মানোন্নয়নের জন্যই রাজ্য সরকার মাঠ সংস্কারে বরাদ্দ করেছে। এলাকার বাকি দু’টি মাঠও সংস্কার করা হবে।”

জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, মাঝের মাঠকে সংস্কার করে স্টেডিয়াম করার চিন্তাভাবনা চলছে। রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। বক্সিং মাঠকে সংস্কার করে সাধারণের জন্য, বিশেষ করে শিশুদের খেলাধুলোর জন্য খুলে দেওয়া হবে।

ইস্টার্ন মাঠের যে চেহারা পাল্টাচ্ছে, দু’মাস ধরেই তা দেখছেন এলাকার খেলোয়াড় এবং ক্রীড়াপ্রেমীরা। সকলেই মনে করছেন এতে খেলাধুলোর উন্নতি হবে। ক্রীড়াপ্রেমী সত্যব্রত দাস বলেন, “মাঠের সংস্কার যে ভাবে হচ্ছে, তাতে মনে হয় খেলার মানের উন্নয়ন হবে।’’ ফুটবল খেলোয়াড় তথা কোচ নিরাপদ মণ্ডল এখনও সকাল-বিকেল ওই মাঠে অনুশীলনে আসেন। তিনিও বলেন, “মাঠ সংস্কারের ফলে খেলাধুলো অনেক বেশি হবে। এটা ভাল হল।”

sports development eastern ground chinsurah tapas ghosh southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy