Advertisement
E-Paper

খরচ কমিয়ে উন্নয়নের পক্ষে হালদারবাড়ির নতুন প্রজন্ম

আরামবাগের দৌলতপুরের জমিদার হালদার বংশের শতাব্দীপ্রাচীন পুজোয় শিব-দুর্গার মূর্তি, কলা বৌকে নিয়ে বিশেষ আড়ম্বর, সপ্তমীর দিন কলা বৌকে পালকিতে বসিয়ে দ্বারকেশ্বর নদীতে স্নান করিয়ে আনা ইত্যাদি আচারই আর পাঁচটা পুজোর থেকে এই পুজোকে আলাদা পরিচয় দিয়েছে।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:০১

আরামবাগের দৌলতপুরের জমিদার হালদার বংশের শতাব্দীপ্রাচীন পুজোয় শিব-দুর্গার মূর্তি, কলা বৌকে নিয়ে বিশেষ আড়ম্বর, সপ্তমীর দিন কলা বৌকে পালকিতে বসিয়ে দ্বারকেশ্বর নদীতে স্নান করিয়ে আনা ইত্যাদি আচারই আর পাঁচটা পুজোর থেকে এই পুজোকে আলাদা পরিচয় দিয়েছে।

পালকির বাহকেরা ছাড়া শুধু মহিলারই যান কলা বৌয়ের স্নানে। কলা বৌকে স্নানে নিয়ে যাওয়ার এবং আসার পথে বিশাল তালপাতার পাখা নিয়ে হাওয়া খাওয়াতে হয়। নানা প্রশংসায় তুষ্ট করতে হয় কলা বৌয়ের মন। পাশাপাশি যাত্রা পথে স্বামী গণেশেরও সুখ্যাতি করে চলার প্রথা রয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা গেল, বংশানুক্রমে পরিবারের সদস্যরা ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। বাণিজ্যে গণেশের করুণা পেতেই কলা বৌকে তুষ্ট করার রেওয়াজ চলে আসছে বংশ পরম্পরায়। তবে একদা একান্নবর্তী পরিবার এখন ৩২ টুকরো। তবে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত অবশ্য ওই বত্রিশ টুকরো এক সুতোয় গাঁথা। একসঙ্গে রান্না-খাওয়া থেকে পুজোর যাবতীয় আয়োজন সবই মায়ের সম্পত্তি থেকে অর্জিত আয়ের টাকায়। মা দুর্গার সম্পত্তিও কম নেই। ২০ বিঘা জমি আর কিছু ঘরভাড়া বাবদ আয় এবং আরামবাগ শহরের বিখ্যাত পুরনো সবজি বাজার মায়ের তালুক। সেই আয় থেকে এবার পুজোর খরচ দেড় লক্ষ টাকার কিছু বেশি।

হালদার বাড়ির পুজোর পত্তন বাংলার ১৩১০ সালে। পুরনো আধলা ইট এবং মাটির তৈরি ঠাকুর দালান বছর দশেক আগে পাকা হয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গেল, ওই বছর দ্বারকেশ্বর নদীর বন্দরে (বর্তমানে খানাকুলে)পরিবারের দু’টি নৌকা ডুবে যায়। সর্বস্ব হারিয়ে তৎকালীন পরিবারের বড়কর্তা মাখন হালদার শিব-দুর্গা পুজোর স্বপ্নাদেশ পান।

তার পরই পরিবারের চার কর্তা মাখন হালদার, গোপাল হালদার, বেণিমাধব হালদার এবং গোষ্টবিহারী হালদার পুজো শুরু করেন। এই পরিবারের শিব-দুর্গা বিশেষ জাগ্রত বলে এলাকায় খ্যাতি আছে।

বিভিন্ন জায়গা এমনকী অন্য জেলা থেকেও অনেকে এসে মানত করেন। সেই মানত শোধ করতে হয় পরের বছর পুজোয়। প্রতি পদের দিন ঘট ওঠে। সন্ধিক্ষণে ১ টি এবং নবমীর দিন ২টি পাঁঠা বলি হয়। নবমীর দিন সমস্ত গ্রামবাসীকে মাছ, মাংস-ভাত খাওয়ানো হয়।

মূর্তি গড়ার ক্ষেত্রে কারিগরও বংশানুক্রমে। প্রতিমার বিসর্জন হয় দ্বারকেশ্বর নদীতে, ভেঙে যাওয়া পরিবারগুলির চার সত্তরোর্ধ চার কর্তা তারকনাথ, হারাধন, জগন্নাথ এবং পরেশনাথ হালদারের আক্ষেপ, “পুজোর অনেক আড়ম্ভরই কমাতে হচ্ছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম চাইছে পুজোর খরচ কমিয়ে সমাজসেবার কাজ করতে।”

নতুন প্রজন্মের এমনই একজন সৌমেন হালদারের কথায়, “আমরা চাই মা দুর্গার সম্পত্তির আয় বাড়িয়ে পুজোর পাশাপাশি হোক উন্নয়নের কাজ।”

durga puja arambagh halder bari southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy