Advertisement
০৮ মে ২০২৪
ফের অটো-টোটো দ্বন্দ্বে প্রহৃত অটোচালক

গোলমাল মেটাতে টোটোর রুট নির্দিষ্ট শীঘ্রই, পুরপ্রধান

প্রশাসনের হস্তক্ষেপেও মিটছে না টোটো আর অটোর মধ্যে গোলমাল। কিছুদিন আগেই হুগলির চন্দননগরে অটো আর টোটোচালকদের মধ্যে রক্তারক্তি কাণ্ড বাধে। এ বার শ্রীরামপুরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৩১
Share: Save:

প্রশাসনের হস্তক্ষেপেও মিটছে না টোটো আর অটোর মধ্যে গোলমাল।

কিছুদিন আগেই হুগলির চন্দননগরে অটো আর টোটোচালকদের মধ্যে রক্তারক্তি কাণ্ড বাধে। এ বার শ্রীরামপুরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। টোটোচালকদের হাতে মার খেলেন এক অটোচালক। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনার জেরে থানায় অভিযোগ দায়ের হলে মারধরের অভিযোগে এক টোটোচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বার বার এমন ঘটনা ঘটতে থাকায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে পুরসভার দিকে। টোটো ও অটোচালকদের অভিযোগ, পুরসভা টোটোর রুট ঠিক করতে না পারাতেই বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, অটো রুটে টোটোর যাত্রী পরিবহণ নিয়েই যাবতীয় গোলমাল। বুধবার রাতে শ্রীরামপুরের নেতাজি সুভাষ অ্যাভেনিউতে অটোস্ট্যান্ডের সামনে যাত্রী তোলাকে কেন্দ্র করে এক টোটোচালকের সঙ্গে অটোচালকদের বচসা বেধে যায়। এক অটোচালক ওই টোটোচালককে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই কয়েক জন টোটোচালক বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ মাঝরাস্তায় ওই অটোচালককে ধরেন। তিনি তখন যাত্রী নিয়ে শ্রীরামপুর থেকে মাহেশের দিকে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, গাড়ি থেকে নামিয়ে ওই অটোচালককে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। তাঁর মোবাইল ফোন এবং কয়েকশো টাকাও কেড়ে নেওয়া হয় বলে ওই অটোচালকের দাবি। এর পরেই তিনি শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে রাতেই এক টোটোচালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। ধৃত টোটোচালককে শুক্রবার শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে এক দিনের পুলিশ হাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

বেশ কয়েক মাস ধরে শ্রীরামপুর শহরে টোটো চলাচল করছে। অটোচালকদের বক্তব্য, নির্দিষ্ট কোনও রুট না থাকায় টোটোগুলি যেখানে সেখানে চলছে। ফলে তাঁদের ব্যবসা মার খাচ্ছে। কিছু দিন আগে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, স্থানীয় পুরসভাই টোটোর রুট ঠিক করবে। সেই মতো সম্প্রতি চেয়ারম্যান অমিয় মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শ্রীরামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল (সিআইসি) বৈঠকে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব আনা হয়। কিছু রুটও প্রস্তাব করা হয় বৈঠকে। কিন্তু তার পরেও অটোচালকদের অসন্তোষ কমেনি। তাঁদের বক্তব্য, যে সমস্ত রুট ঠিক করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে অটোর ব্যবসা মার খাবে। তবে ওই সব প্রস্তাব এখনও কার্যকর না হওয়ায় টোটো চলাচল নিয়ে প্রশাসনিক কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই। আর সেই কারণেই বার বার দু’পক্ষের গোলমাল বাধছে বলে অভিযোগ দু’পক্ষেরই। যার ফল ভুগতে হচ্ছে যাত্রীদের। টোটোচালকদের একাংশের বক্তব্য, মূলত বেকার ছেলেরাই রোজগারের তাগিদে এই গাড়ি চালাচ্ছেন। পুরসভা রুট ঠিক করে দিলেই তাঁরা নির্দিষ্ট রুটে গাড়ি চালাবেন। কিন্তু অটোচালকরা তাঁদের বাধা দেবেন কেন? অটো চালকদের পাল্টা বক্তব্য, রুজিতে টান পড়াতেই তাঁরা টোটোচালকদের জিটি রোডে গাড়ি চালাতে নিষেধ করছেন।

পুর-কর্তৃপক্ষও মনে করছে, টোটোর রুট নির্দিষ্ট হয়ে গেলেই সমস্যা মিটে যাবে। পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে বইমেলা চলছে। ১১ জানুয়ারি তা শেষ হবে। তার পরেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবারের ঘটনার কথা জানি। বইমেলা মিটলেই টোটোর রুট চূড়ান্ত করা হবে। প্রয়োজনে দু’পক্ষকে নিয়েও আলোচনায় বসা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

auto toto serampore southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE