Advertisement
E-Paper

জেলা জুড়ে এ বারও শব্দবাজির দাপট অব্যাহত

শব্দবাজির বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। কিন্তু তাতেও লাভ হল না। এ বারও কালীপুজোর রাতে হুগলিতে শব্দবাজির দাপট অব্যাহত রইল। জেলার প্রায় সর্বত্রই প্রচণ্ড শব্দে বাজি ফেটেছে। রাত যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে কানফাটানো আওয়াজ। গঙ্গার ধারে বা রাস্তার পাশে যেমন বাজি ফেটেছে, তেমনই শব্দবাজির হাত থেকে রেহাই পায়নি ঘিঞ্জি এলাকাও। ট্রেনে চেপে হুগলির বিভিন্ন রেল স্টেশন পেরিয়ে যাওয়ার সময়েই মালুম হয়েছে শব্দবাজির আওয়াজ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০০:১৮

শব্দবাজির বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। কিন্তু তাতেও লাভ হল না। এ বারও কালীপুজোর রাতে হুগলিতে শব্দবাজির দাপট অব্যাহত রইল।

জেলার প্রায় সর্বত্রই প্রচণ্ড শব্দে বাজি ফেটেছে। রাত যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে কানফাটানো আওয়াজ। গঙ্গার ধারে বা রাস্তার পাশে যেমন বাজি ফেটেছে, তেমনই শব্দবাজির হাত থেকে রেহাই পায়নি ঘিঞ্জি এলাকাও। ট্রেনে চেপে হুগলির বিভিন্ন রেল স্টেশন পেরিয়ে যাওয়ার সময়েই মালুম হয়েছে শব্দবাজির আওয়াজ।

জেলার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “শব্দবাজি নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। কেউ গ্রেফতারও হয়নি। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কালীপুজোর আগেই শব্দবাজির বিরুদ্ধে অভিযান হয়। বিভিন্ন থানায় ধরপাকড়ও হয়েছে।” তবে, সাধারণ মানুষের অভিযোগ, পুলিশ নিজে থেকে শব্দবাজি ফাটানো রোধ করতে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি।

চন্দননগরের বাসিন্দা, পরিবেশ-বন্ধু বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশের কাছে কী অভিযোগ গেল না গেল, জানি না। তবে, আমাদের লোকজনের থেকে রিপোর্ট পেয়েছি, চন্দননগর হাসপাতাল বা গৌরহাটি ইএসআই হাসপাতাল চত্বরে এমন কিছু বাজি ফেটেছে, যা শব্দের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। রোগীদের অসুবিধা হয়েছে। তবে, গত বছরের তুলনায় এ বার শব্দবাজি কিছুটা কমেছে।”

ডানকুনি, পাণ্ডুয়া, চণ্ডীতলা, ধনেখালি-সহ হুগলির বহু জায়গাতেই বাজি তৈরি হয়। বড় বাজার বসে। অভিযোগ, আতসবাজির আড়ালে প্রচুর শব্দবাজিও তৈরি হয় এবং তা আড়াল-আবডালে প্রচুর বিকিয়েছে। ফেটেছেও দেদার।

ত্রিবেণীর বিটিপিএস এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কান পাতা দায় হয়ে ওঠে। একের পর এক চকোলেট বোম ফাটতে থাকে। অমিতাভ ঘোষ নামে ত্রিবেণী শিবপুরের এক প্রৌঢ় বলেন, “শব্দবাজি আটকাতে কড়াকড়ির কথা শুনি। মনে হয় প্রশাসনের অলক্ষ্যেই প্রচুর বাজি ফেটেছে। প্রশাসন যদি সত্যিই কড়া পদক্ষেপ নিত, তা হলে হয়তো এমন কান ফাটানো শব্দ শুনতে হত না।”

বাঁশবেড়িয়ার সুজিত মণ্ডল হৃদরোগী। তাঁর ক্ষোভ, “রাত যত বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে আওয়াজও বেড়েছে। দরজা-জানলা বন্ধ করে বসে থাকতে হচ্ছিল।” স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “মুখ বুজে সহ্য করা ছাড়া কী করতে পারি!” জিরাটের কিছু জায়গায় লক্ষ্মীপুজোয় বাজি ফাটে। কালীপুজোর রাতেও শব্দবাজি কম ফাটেনি এখানে। গুপ্তিপাড়া, বলাগড়েও বাজির আওয়াজ কানে এসেছে। একই কথা প্রযোজ্য গুড়াপের মিল্কি গ্রাম বা ধনেখালির ক্ষেত্রেও।

সিঙ্গুর, বলরামবাটিও পিছিয়ে ছিল না শব্দবাজির তাণ্ডবে। এই সব জায়গায় সন্ধ্যা থেকেই লাগামহীন ভাবে তা ফেটেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন। তারকেশ্বরেও বাজির উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না পুলিশ-প্রশাসনের। জাঙ্গিপাড়া, চণ্ডীতলা, ডানকুনি, রিষড়া, শ্রীরামপুর এই সব এলাকাতেও কমবেশি বাজির দাপট ছিল। রিষড়ার এনএস রোড, বাঙ্গুর পার্কে প্রচুর বাজি ফেটেছে গভীর রাত পর্যন্ত। চণ্ডীতলার মশাটের বাসিন্দা সরোজ কোলে বলেন, “শব্দবাজি যথেষ্টই ফেটেছে। শব্জবাজি নিয়ন্ত্রণ করতে প্রশাসনের অনেক বেশি সচেষ্ট হওয়া দরকার।”

আরামবাগ মহকুমাতেও অন্যান্য বারের মতোই শব্দবাজির যথেষ্ট প্রভাব ছিল। আরামবাগে হরিনখোলা-সহ গ্রামীণ এলাকাগুলিতে বাজির আওয়াজ ভালই শোনা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, খানাকুলের মাড়োখানা, রাজহাটি, রামনগর প্রভৃতি জায়গায় রাত ৯টার পর থেকে কান পাতা দায় হয়। রাজহাটির এক বাসিন্দার বক্তব্য, “বাজি ফাটানোর উপর কোনও কালেই নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এ বারেও ছিল না।” কামারপুকুর মোড়ের এক দোকানদার বলেন, “রাত যত বেড়েছে, শব্দবাজির দাপটও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে।”

হাওড়ার গ্রামীণ এলাকায় এ বার শব্দবাজির দাপট তুলনায় কম ছিল। উলুবেড়িয়া শহরের কিছু জায়গায় অবশ্য শব্দবাজির আওয়াজ শোনা গিয়েছে। তবে, তাদের কাছে এ নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলে পুলিশের দাবি।

southbengal sound pollution firecrackers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy