ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে জিটি রোড ধরে হেঁটে যাওয়ার সময়ে দুই মোটরবাইক আরোহীর খপ্পরে পড়েছিলেন তিনি। আরও অভিযোগ ছিল, দুষ্কৃতীরা কিছু একটা স্প্রে করে ৯০ হাজার টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়েছে। দিন কয়েক আগে পুলিশের কাছে এরকমই নাটকীয় ভাবে টাকা লুঠের অভিযোগ জানান বালির ফকির পাঠক লেনের বাসিন্দা সুনীল পট্টনায়ক। অবশেষে তদন্তে প্রমাণিত হল পুরো ঘটনাটি আসলে সাজানো ‘নাটক’।
পুলিশ জানিয়েছে, পাওনাদারদের হাত থেকে বাঁচতেই এই নাটক ফাঁদেন সুনীলবাবু। পুলিশ জানায়, অজ্ঞানের অভিনয়ও ভালই করেছিলেন তিনি। পরে শরীর দুর্বল লাগার কারণ দেখিয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হন। কিন্তু মঙ্গলবার বালি থানার পুলিশ ও হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা সুনীলবাবুর বিছানার তলা থেকে প্লাস্টিকে মুড়ে রাখা ওই ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার করেন। পরে সুনীলবাবু যে জুট মিলে কাজ করেন সেখানকার একটি চৌবাচ্চা থেকে মেলে মোবাইলটিও। তবে সিম পুড়িয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
২৭ অগস্ট সুনীলবাবু পুলিশে অভিযোগে জানান, দুপুর ১টা নাগাদ তিনি ব্যাঙ্ক থেকে ৯০ হাজার টাকা তুলে ফিরছিলেন। তখন মোটরবাইকে চেপে দুই যুবক তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায়। একটি কাগজ তাঁকে দেখিয়ে রাস্তা জানতে চায় বাইকআরোহীরা। এর পরেই তারা আচমকা সুনীলবাবুর নাকের সামনে কিছু একটা স্প্রে করে দিলে তিনি পড়ে যান। তাঁর পকেট থেকে টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালায় বাইকআরোহীরা।
কিন্তু বালি থানার এসআই অলোক কুমার ও সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা তদন্তে নেমে সুনীলবাবুর কথায় অসঙ্গতি লক্ষ্য করেন। পরে ঘটনাস্থলের সামনের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। তাতে সুনীলবাবুর ব্যাঙ্কের দিকে যাতায়াতের ছবি দেখা গেলেও বাইকআরোহীদের আসা বা স্প্রে করার ছবি মেলেনি।
তদন্তকারীরা জানান, এর পরেই সুনীলবাবুকে বার বার জেরা করা শুরু হয়। অবশেষে তিনি স্বীকার করেন বাজারে তাঁর প্রচুর দেনা রয়েছে। তা থেকে বাঁচতে এই নাটক বানান তিনি। সুনীলবাবু পুলিশকে জানান, টাকা তুলে প্রথমে জুট মিলের ক্যান্টিনে লুকিয়ে রাখেন তিনি। মোবাইলটি ফেলে দেন চৌবাচ্চায়। দু’দিন পরে হাসপাতাল থেকে ফিরে টাকা বাড়িতে এনে লুকিয়ে রাখেন। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, “মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যাতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy