সরকারি আইনজীবী ঠিক হয়নি। ফলে প্রায় এক মাস পিছিয়ে গেল হাওড়ার আমতার মুক্তিরচক গ্রামের গণধর্ষণ মামলার শুনানি। মঙ্গলবারই এই মামলার আনুষ্ঠানিক শুনানি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকারি আইনজীবী না পাওয়ার জন্য পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয়েছে ৬ অগস্ট।
গণধর্ষণ মামলায় মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ১০ জন। তাঁদের মধ্যে ৯ জন ধরা পড়েছে। একজন পলাতক। পুলিশের দেওয়া চার্জশিটেও ১০ জনের নাম আছে। চার্জশিটে ১০ জনের বিরুদ্ধেই গণধর্ষণ, মারপিট ও লুঠপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে। গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে। ঘটনার তদন্ত করে ৮৭ দিনের মাথায় চার্জশিট পেশ করা হয়। গত ১ জুলাই এই মামলা উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালত থেকে ওই আদালতেরই দায়রা বিচারকের কাছে পাঠানো হয়। (আইনি ভাষায় যাকে সোপর্দ বলা হয়।) মঙ্গলবার থেকে এই মামলার শুনানি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার কথা ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, আইনানুযায়ী এ দিনই দায়রা আদালতে মামলার চার্জ গঠন করে তা অভিযুক্তদের শুনিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। নিয়ম হল মামলার শুনানিতে সরকারি আইনজীবীকেও হাজির থাকতে হবে। এ দিন অভিযুক্ত নয় জনকেই আদালতে হাজির করানো হয়। হাজির ছিলেন বিচারক শুভাশিস ঘোষ। কিন্তু সরকারি আইনজীবী ঠিক না হওয়ায় শুনানি হয়নি। বিচারক মামলার পরবর্তী তারিখ দিয়ে দেন।
কী ভাবে ঠিক হয় সরকারি আইনজীবী?
পুলিশ জানিয়েছে, নিয়ম হল যে দিন মামলা দায়রা আদালতে পাঠানো হয় সে দিনই এসিজেম আদালত এবং জিআরও দফতর থেকে জেলা সরকারি আইনজীবীর কাছে এই মামলার জন্য সরকারি আইনজীবী চেয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র পাঠানো হয়। কারণ কোনও মামলার সরকারি আইনজীবী ঠিক করেন তিনিই।
অভিযোগকারীদের আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, “আমি যতদূর জানি উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালত থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জেলা সরকারি আইনজীবীর কাছে যথাসময়ে পাঠানো হয়েছিল। তারপরেও সেখান থেকে এই মামলার জন্য কোনও সরকারি আইনজীবী নিয়োগ করা হয়নি। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই মামলার শুনানি অন্তত একমাস পিছিয়ে গেল।
অন্যদিকে জেলা সরকারি আইনজীবী অরবিন্দ নস্করের দাবি, “আমার কাছে সরকারি আইনজীবীর নিয়োগ চেয়ে কোনও নথিপত্র আসেনি। কাগজপত্র পেলেই আমি আইনজীবী নিয়োগ করে দেব।”
প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে আমতার মুক্তিরচক গ্রামে এক গৃহবধু ও তাঁর জেঠি শাশুড়িকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে। ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ আটজনকে গ্রেফতার করে। পরে বিচারকের কাছে দেওয়া দুই নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে পুলিশ আরও একজনকে গ্রেফতার করে। একজন এখনও পলাতক। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বরুণ মাখাল এবং রঞ্জিত মণ্ডল নামে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই স্থানীয় নেতা। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইন আইনের পথে চলবে। অপরাধ করলে যেন কেউই ছাড় না পায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy