জেনারেল ডায়েরিতে ভুল করা নিয়ে বচসার শুরু। তার জেরে থানার মধ্যেই এক পুলিশকর্মীকে মারধর করার অভিযোগ উঠল আর এক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। আহত পুলিশকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বালি থানায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই রাতে বালি থানা এলাকায় ‘ওয়ারেন্ট রেড’ ছিল। সেই জন্য এএসআই মহম্মদ মুসফেক মুন্সিকে একটি জেনারেল ডায়েরি করতে বলেছিলেন আর এক এএসআই সমীরসুন্দর দত্ত। কিন্তু মুসফেক মুন্সি সেই জিডি লেখায় ভুল করায় তাঁর সঙ্গে বচসা বাধে সমীরবাবুর। অভিযোগ, সেই সময়ে তিনি মুনসেফের মাথায় ধাক্কা মারেন। এর পরে ডিউটি ছেড়ে নিজের ব্যারাকে চলে যান মুনসেফ। সেখানে রাতের খাবার খাওয়ার পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। খবর দেওয়া হয় এক স্থানীয় চিকিত্সককে। এর পরে তাঁকে স্থানীয় জায়সবাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার সকালে বালি থানায় চলে আসেন মুনসেফ মুন্সির পরিজনেরা। তাঁরা সমীরবাবুর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওসির কাছে মৌখিক ভাবে আবেদন করেন। অন্য দিকে মুন্সি বলেন, “আমাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে সমীরসুন্দর ঘুষি মেরেছিল। এর পরেই চোখে অন্ধকার দেখতে শুরু করি। মাথা ঘুরে যায়।” অভিযুক্ত সমীরসুন্দরবাবু বলেন, “প্রতিটি নিয়ম বলে দেওয়া সত্ত্বেও জিডিতে ভুল করায় আমি একটু রেগে গিয়েছিলাম। তা নিয়ে প্রশ্ন করায় তিনি আমার সঙ্গে অশ্লীল ভাষায় কথা বলেন। আমি তার প্রতিবাদ করি।” তবে মারধরের বিষয়ে সমীরবাবু বলেন, “মজা করে মাথায় চাটি মারাটা মারধর হয় কি না, তা আমার জানা নেই।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, এএসআই মুনসেফ মুন্সির উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস জনিত সমস্যা আছে। সেই কারণেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকতে পারেন। তবে ওই এএসআই মাথায় যে আঘাতের কথা দাবি করেছেন, তা পরীক্ষা করে দেখছেন চিকিত্সকেরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা মুনসেফ মুন্সির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের অভিযোগ জানিয়েছিলেন বালি থানায়। এর পাশাপাশি, ঠিক ভাবে নিজের কাজ না করার জন্য ওই এএসআই-এর বিরুদ্ধে পুলিশের একাংশও ক্ষুব্ধ ছিল। অনৈতিক কাজকর্ম ও কর্তব্যে গাফিলতির জন্য গত ৯ অক্টোবর হাওড়া সিটি পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের কাছে বালি থানার তরফে একটি রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, এই রিপোর্ট জমা পড়ার পর থেকে এ নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় ছিলেন মুন্সিবাবু। এর সঙ্গে বচসার বিষয়টি যুক্ত হওয়ায় তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, “বিভাগীয় তদন্ত করে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। দোষ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy