Advertisement
E-Paper

দাবি ছিল নতুন সেতুর, কিন্তু শুধু সংস্কার করেই দায় সারল সেচ দফতর

বেহাল মান্দারিয়া সেতু সংস্কারের কাজ শুরু করল সেচ দফতর। দেড় কোটি টাকা ব্যয় করে এর সংস্কার শুরু হয়েছে। যদিও সেতু সংস্কার নিয়েও ইতিমধ্যেই বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিরোধীদের দাবি, সেতুটি বিপজ্জনক হয়ে যাওয়ায় আগের বাম সরকার নতুন সেতুর পরিকল্পনা করেছিল। সেই অনুযায়ী টাকাও মঞ্জুর হয়। কিন্তু তরা পরেও নতুন সেতু তৈরির ব্যবস্থা না করে পুরনো সেতু সংস্কার করা হচ্ছে কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৮
মান্দারিয়া খালের উপরে সেতু মেরামতির কাজ চলছে। ছবি: সুব্রত জানা।

মান্দারিয়া খালের উপরে সেতু মেরামতির কাজ চলছে। ছবি: সুব্রত জানা।

বেহাল মান্দারিয়া সেতু সংস্কারের কাজ শুরু করল সেচ দফতর। দেড় কোটি টাকা ব্যয় করে এর সংস্কার শুরু হয়েছে। যদিও সেতু সংস্কার নিয়েও ইতিমধ্যেই বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

বিরোধীদের দাবি, সেতুটি বিপজ্জনক হয়ে যাওয়ায় আগের বাম সরকার নতুন সেতুর পরিকল্পনা করেছিল। সেই অনুযায়ী টাকাও মঞ্জুর হয়। কিন্তু তরা পরেও নতুন সেতু তৈরির ব্যবস্থা না করে পুরনো সেতু সংস্কার করা হচ্ছে কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী তথা আমতার প্রাক্তন বিধায়ক প্রত্যূষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “সেই সময় ইঞ্জিনিয়াররা ওই সেতু চলাচলের অযোগ্য বলে জানিয়েছিলেন। তাই সাড়ে ছ’কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সেতুর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই টাকা পড়ে রয়েছে। অথচ বিপজ্জনক সেতুটি নতুন করে তৈরি না করে সেচ দফতর স্রেফ সংস্কার করছে কেন সেটাই বুঝতে পারছি না।”

এ ব্যাপারে রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “নতুন সেতু তৈরি অনেকটাই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ততদিনে পুরনো সেতুটি সারিয়ে যান চলাচলের উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। যাতে মানুষ সমস্যায় না পড়েন। তা ছাড়া যে উন্নত প্রযুক্তিতে সেতুটির সংস্কার করা হচ্ছে, তাতে তা যথেষ্ট টেকসই হবে। পরে নতুন করে সেতুটি তৈরি করা হবে।”

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৭২-’৭৩ সাল নাগাদ মান্দারিয়া খালের উপর সেতুটি তৈরি হয়েছিল। ২০০০ সাল নাগাদ সেতুর মাঝের স্তম্ভটি বসে যায়। ফলে সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছিল। ফলে লোকজন চলাচল করলেও ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল সেচ দফতর।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই সেতুর উপর দিয়ে লরি যাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমতা থেকে রসপুর, ভোজান, বাগুয়া, কালিচক, সোমেশ্বর-সহ বিভিন্ন জায়গায় মালপত্র নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। লরি না যাওয়ার ফলে সেতুর এক প্রান্তে মাল নামিয়ে নিতে হয়। ফের সেই মাল ট্রলিতে করে সেতুর অন্য প্রান্তে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে আবার লরিতে করে অন্যত্র মাল নিয়ে যেতে হয়। ফলে খরচ অনেকটা বেড়ে যায়। এ ছাড়া ওই সব জায়গা থেকে সবজি আমতা বাজারে নিয়ে আসার ক্ষেত্রেও বিপাকে পড়েন চাষিরা। বড় গাড়িতে আগে কম খরচে মাল বাজারে আনা যেত। এখন সেটা ছোট গাড়িতে আনতে দ্বিগুণ খরচ পড়ে যায় বলে জানালেন রসপুরের চাষি অনন্ত সামন্ত। তা ছাড়া ওই সেতুর উপর দিয়েই রসপুর-সহ বিভিন্ন এলাকার রুটের অটো, ট্রেকার বিপদের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করে। এক কথায় প্রতিদিন হাজার তিকিশেক মানুষ যাতায়াত করেন বিপদ মাথায় নিয়েই। তাই নতুন সেতুর দাবি তুলেছিলেন স্থানীয় মানুষ।

রসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান তৃণমূলের জয়ন্ত পোল্লে বলেন, “নতুন সেতু হলে ভাল হত। তবে পুরনো সেতুটির সংস্কার করা হচ্ছে। দেখা যাক, কত দিন েঁটকে।”

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুটি ৯০ মিটার লম্বা ও সাড়ে তিন মিটার চওড়া। সেতুটি ৫টি পিলার ও ৩টি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। মাঝের স্তম্ভটি বসে গিয়েছিল। সেটি তুলে ঠিক জায়গায় বসানো হবে। ৫টি পিলারের জ্যাকেটিং করে শক্তিশালী করার কাজ চলছে। পিলারগুলির নীচের দিকের মাটির উপর ব্লক পিচিং করা হবে। সেতুর দু’দিকে তৈরি হবে ৩ ফুট চওড়া ফুটপাথ। সেখানে রেলিং তৈরির কাজ চলছে। সেতুতে ঢালাইয়েরও কাজও শুরু হয়েছে।

যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, সেই টাকা খরচই যখন করা হচ্ছে, তখন নতুন সেতু তৈরিতে কী ক্ষতি ছিল? তাঁরা নয় আরও কিছুদিন অসুবিধা ভোগ করতেন।

southbengal uluberia new bridge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy