Advertisement
E-Paper

দার্জিলিঙে শিক্ষা-ভ্রমণে হেনস্থা, অভিযুক্ত সংস্থা

কলকাতার একটি ভ্রমণ সংস্থার তত্ত্বাবধানে দিন কয়েক আগে দার্জিলিংয়ে শিক্ষা-ভ্রমণে (এক্সকারশন) গিয়েছিলেন আরামবাগ গার্লস কলেজের কিছু ছাত্রী। কিন্তু তাঁদের সেই ভ্রমণ সুখের হল না। মঙ্গলবার ফিরে এসে তাঁরা ওই সংস্থার বিরুদ্ধে পানীয় জল থেকে খাবার, হোটেল থেকে গাড়ি ভাড়া-সহ সমস্ত ব্যবস্থাপনায় দায়বদ্ধতার অভাবের অভিযোগ যেমন তুলেছেন, তেমনই সংস্থার অন্যতম কর্ণধারের বিরুদ্ধে চরম দুর্ব্যবহার এবং হেনস্থার অভিযোগও তুলেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৬
অধ্যক্ষের কাছে নিজেদের হেনস্থার কথা বলছেন ছাত্রীরা। ছবি: মোহন দাস।

অধ্যক্ষের কাছে নিজেদের হেনস্থার কথা বলছেন ছাত্রীরা। ছবি: মোহন দাস।

কলকাতার একটি ভ্রমণ সংস্থার তত্ত্বাবধানে দিন কয়েক আগে দার্জিলিংয়ে শিক্ষা-ভ্রমণে (এক্সকারশন) গিয়েছিলেন আরামবাগ গার্লস কলেজের কিছু ছাত্রী। কিন্তু তাঁদের সেই ভ্রমণ সুখের হল না। মঙ্গলবার ফিরে এসে তাঁরা ওই সংস্থার বিরুদ্ধে পানীয় জল থেকে খাবার, হোটেল থেকে গাড়ি ভাড়া-সহ সমস্ত ব্যবস্থাপনায় দায়বদ্ধতার অভাবের অভিযোগ যেমন তুলেছেন, তেমনই সংস্থার অন্যতম কর্ণধারের বিরুদ্ধে চরম দুর্ব্যবহার এবং হেনস্থার অভিযোগও তুলেছেন।

ছাত্রীরা এ দিন আরামবাগে নেমেই কলেজের অধ্যক্ষ সাজিদুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের হেনস্থার কথা জানান। অধ্যক্ষ তাঁদের নিয়ে কলেজে আসেন। সেখানে ছাত্রীরা বিক্ষোভও দেখান। এ দিনই ‘গীতাঞ্জলি ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস্’ নামে ওই সংস্থা এবং তার অন্যতম কর্ণধার ঝর্না দাসের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অধ্যক্ষ। তাতে তিনি চুক্তিভঙ্গের কথাও তুলেছেন। অধ্যক্ষ বলেন, “চুক্তি ছিল কিছু টাকা আমরা আগাম দেব। কিছু টাকা ট্যুর শেষ হলে। কিন্তু ওরা দার্জিলং থেকেই ফের টাকা দাবি করে। কিছু টাকা দিইছিলাম। কিন্তু ওরা দায়িত্ব যথাযথ পালন করেনি। অমানবিক আচরণ করেছে।”

ট্রেনে যাওয়ার পথে কোনও ভাবে তাঁদের টাকা খোয়া যায় দাবি করে সংশ্লিষ্ট ভ্রমণ সংস্থাটির মূল কর্ণধার অনিল দাস মেনে নেন, “টাকার জন্যই কিছু সমস্যা হয়।” একই সঙ্গে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “অসুবিধার কথা বলতে গেলে আমার বোন ঝর্নার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ছাত্রীরা।” একই সুরে ঝর্নাদেবীও দাবি করেন, “যথাযথ দায়িত্ব পালন করেছি। তা সত্ত্বেও ছাত্রীরা নানা অজুহাতে আমাকেই হেনস্থা করেন।”

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভূগোলের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীদের দার্জিলিংয়ে শিক্ষা-ভ্রমণে নিয়ে যাওয়ার জন্য ওই ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হয়। সংস্থাটির মূল অফিস এন এস রোডে। গত ১২ জানুয়ারি ৪৫ জন ছাত্রী, চার জন শিক্ষক এবং তিন জন অভিভাবক-সহ মোট ৫২ জনের দলকে নিয়ে সংস্থাটি ট্রেনে রওনা হয়। পরের দিন দলটি দার্জিলিং পৌঁছয়।

ছাত্রীদের অভিযোগ, চরম নিরাপত্তাহীনতায় কাটাতে হয়েছে তাঁদের। নিম্ন মানের খাবার দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত পানীয় জল মেলেনি। প্রথমে একটি অপরিচ্ছন্ন হোটেলে তাঁদের তোলা হয়। তার দরজা-জানলা ভাঙা ছিল। পরে হোটেল পরিবর্তন করা হলেও সোমবার ছাড়ার সময়ে তাঁরা জানতে পারেন, ভ্রমণ সংস্থা হোটেলের বিল মেটায়নি। হোটেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জিনিসপত্র আটকে রাখেন। কয়েক ঘণ্টা তাঁদের রাস্তায় কাটাতে হয়। অধ্যক্ষ আরামবাগ থেকে টাকা পাঠালে হোটেলের বিল মিটিয়ে তাঁরা ট্রেন ধরার জন্য গাড়িতে জলপাইগুড়ির উদ্দেশ্যে বেরোন। কিন্তু সেই যাত্রাও মসৃণ হয়নি।

ছাত্রীদের আরও অভিযোগ, জলপাইগুড়ি স্টেশনের কিছুটা আগে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ভ্রমণ সংস্থা দাবি করে, তাদের গাড়ি ভাড়া মেটানোর টাকাও নেই। সেই টাকা এক শিক্ষিকা ব্যক্তিগত ভাবে দিলে তবেই তাঁরা স্টেশনে পৌঁছন। এ ছাড়া, রাতে হোটেলে ভ্রমণ সংস্থার পুরুষ রাঁধুনিরা মদ্যপ অবস্থায় ছাত্রীদের দরজায় টোকা দিয়েছেন বা সংস্থার হয়ে যাওয়া ঝর্নাদেবী দুর্ব্যবহার করেন, এমন অভিযোগ তো রয়েছেই। ট্রেনে এ নিয়ে দু’পক্ষের গোলমালও হয়।

ছাত্রীদের পক্ষে চাঁপাডাঙ্গার বাসিন্দা, দ্বিতীয় বর্ষের প্রজ্ঞাপারমিতা শর্মার অভিযোগ, “মাথাপিছু চার হাজার টাকা করে দিয়েছি আমরা। অথচ, ভ্রমণ সংস্থার মহিলার কাছে অব্যবস্থার প্রতিবাদ জানাতে গেলে উনি অশালীন আচরণ করেন।”

ভ্রমণ সংস্থার মূল কর্ণধার অনিলবাবুর দাবি, “আমরা মাথাপিছু ৩,৭০০ টাকা ধরেছিলাম। সেই অনুযায়ী ৪২ হাজার ৬০০ টাকা বাদে বাকি টাকা পেয়েও গিয়েছিলেন। হোটেলে বিল হয়েছিল ২২ হাজার টাকা। অধ্যক্ষ ২০ হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন। বাকি দু’হাজার টাকা অভিভাবকরাই দেন। আমাদের বিপদের মধ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ পুরো পাওনা মিটিয়ে দিলে কোনও সমস্যাই থাকত না।”

southbengal harassment excartion arambagh arambagh girls' college
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy