পরিস্রুত জলের জন্য বাসিন্দাদের ভরসা নলকূপই। ছবি: সুব্রত জানা।
প্রায় বছর ২০ আগে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য বসানো হয়েছিল ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন। রয়েছে ট্যাপকলও। কিন্তু সেখানে জল মেলে না। ফলে, এত দিনেও পাঁচলার দেউলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দেউলপুর ও বলরামপুর গ্রামের হাজার দশেকেরও বেশি গ্রামবাসীর পানীয় জলের সঙ্কট পুরোপুরি মিটল না। এখনও তাঁদের ভরসা নলকূপ বা পুকুর।
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় একটি রাস্তা তৈরির জন্য ১১ বছর আগে ওই পাইপলাইনের জলের সংযোগকারী মূল পাইপটি তুলে ফেলার পরে আর বসানো হয়নি। ফলে, মেটেনি জল-সঙ্কট। দুই গ্রামের বহু বাসিন্দারই অভিযোগ, সমস্যা সুরাহার জন্য পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের অফিসে তারা বহু আবেদন করেছেন। কিন্তু লাভ কিছু হয়নি।
তবে, জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর আশ্বাস দিয়েছে জলের সংযোগকারী পাইপলাইন দ্রুত বসিয়ে জল সরবরাহ শুরু করার। হাওড়া জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মুখ্য বাস্তুকার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “কাজটি করার জন্য টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি থেকে আশা করছি কাজ শুরু করতে পারব।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কুড়ি আগে দেউলপুর, জয়রামপুর, বলরামপুর, কুশাডাঙা এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন বসানো হয়। ২০০৩ সাল নাগাদ দেউলপুর বোর্ড গার্লস প্রাইমারি স্কুল থেকে বাঁধের বাজার পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তাটি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় অন্তর্ভুক্ত হয়। কাজটি করে হাওড়া ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (এইটআইটি)। তারা ওই আড়াই কিলোমিটার রাস্তায় বসানো জলের সংযোগকারী মূল পাইপলাইনটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। রাস্তার কাজের সময় সেই পাইপলাইন তুলেও ফেলা হয়। কিন্তু তা আর বসানো হয়নি। যদিও, এইচআইটি-র দাবি, পাইপলাইন বসানোর জন্য তারা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে দিয়েছিল।
এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীরা এখনও ব্যবহার করে চলেছেন নলকূপ বা পুকুরের জল। অনেকেরই অভিযোগ, এলাকায় নলকূপের সংখ্যাও পর্যাপ্ত নয়। তা ছাড়া, বহু নলকূপ বেশির ভাগ সময়ে খারাপ হয়ে পড়ে থাকে। ফলে, গরমের সময়ে তাঁদের প্রবল সমস্যায় পড়তে হয়।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর দ্রুত জল সরবরাহের আশ্বাস দিলেও সন্দেহ রয়েছে গ্রামবাসীদের অনেকেরই। কেননা, তাঁরা মনে করছেন, দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ার ফলে ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনগুলি অকেজো হয়ে পড়ে থাকতে পারে। একই আশঙ্কা রয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বাস্তুকারদের একাংশেরও। ফলে, ফের ওই পাইপলাইন চালু করা হলে তা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বলরামপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত ঘোষ বা গোপালচন্দ্র পোল্লে বলেন, “বাড়ির সামনে ট্যাপকল রয়েছে, অথচ, জল পাই না। নলকূপের জল ব্যবহার করতে হচ্ছে। জলের লাইন চালু করতে কেন যে এত দেরি হচ্ছে বুঝতে পারছি না।”
জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এক কর্তা অবশ্য সব দিক খতিয়ে দেখেই পাইপলাইন চালুর আশ্বাস দিয়েছেন। ওই দুই গ্রামে অকেজো নলকূপ সারানো এবং নতুন নলকূপ বসানোর আশ্বাস দিয়েছেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy