Advertisement
E-Paper

প্রস্তাবিত চন্দননগর পুরসভার মূল অফিস শহরেই, সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়

কাটল ধোঁয়াশা। শ্রীরামপুর নয়, গঙ্গা লাগোয়া হুগলির ১০টি পুরসভাকে এক ছাতার তলায় এনে কর্পোরেশনের মর্যাদা দিয়ে রাজ্য সরকার যে মেগাসিটি প্রকল্প গড়তে উদ্যোগী হয়েছে, তার প্রধান কার্যালয় হতে চলেছে চন্দননগরেই। শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। অন্য পুরসভাগুলিতে বরো অফিস হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৩২

কাটল ধোঁয়াশা।

শ্রীরামপুর নয়, গঙ্গা লাগোয়া হুগলির ১০টি পুরসভাকে এক ছাতার তলায় এনে কর্পোরেশনের মর্যাদা দিয়ে রাজ্য সরকার যে মেগাসিটি প্রকল্প গড়তে উদ্যোগী হয়েছে, তার প্রধান কার্যালয় হতে চলেছে চন্দননগরেই।

শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। অন্য পুরসভাগুলিতে বরো অফিস হবে। জেলাশাসক মনমীত নন্দা বলেন, “প্রস্তাবিত কর্পোরেশনের সদর দফতর চন্দননগরে হবে বলেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমাদের কাছে যে বিষয়গুলি জানতে চাওয়া হয়েছিল, তার সবটাই আমরা রাজ্য সরকারকে জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে।”

চন্দননগর পুরসভা বর্তমানে কর্পোরেশনের মর্যাদাই পায়। তার সঙ্গে ৯টি পুরসভার সংযুুক্তি হলে উন্নয়ন ত্বরাণ্বিত হবে বলে মনে করেন সেখানকার মেয়র রাম চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “জেলার দশটি পুরসভা একত্রিত হয়ে যাবে। প্রধান কার্যালয় হবে চন্দননগর। শুক্রবার ক্যাবিনেটের বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের ফলে উন্নয়নে গতি আসবে।”

কয়েক মাস আগে রাজ্যের কয়েকটি এলাকায় কিছু পুরসভার সংযুক্তি ঘটিয়ে একটি করে কর্পোরেশন গড়ার কথা ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। সরকারের তরফে শ্রীরামপুর ও চন্দননগরের পুরপ্রধান এবং জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো নির্দেশিকায় বলা হয়, চন্দননগর এবং শ্রীরামপুর নামে পৃথক দু’টি কর্পোরেশন গাড়া হবে। বাঁশবেড়িয়া, হুগলি-চুঁচুড়া, ভদ্রেশ্বর এবং চাঁপদানি পুরসভাকে চন্দননগরের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। আর উত্তরপাড়া থেকে বৈদ্যবাটি পর্যন্ত পুরসভাগুলিকে নিয়ে শ্রীরামপুর কর্পোরেশন হবে। পরে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, জেলাজুড়ে একটিই কর্পোরেশন হবে। তবে, তা কোথায় হবে, সে ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তাই কখনও শোনা গিয়েছে প্রস্তাবিত কর্পোরেশনের নাম চন্দননগর রেখে সদর দফতর শ্রীরামপুরে হবে, কখনও শোনা গিয়েছে সদর দফতর হবে চন্দননগরে।

রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, এমনিতে হুগলির পুরসভাগুলির আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। বৈদ্যবাটি পুরসভার কয়েক কোটি টাকা দেনা রয়েছে। শ্রীরামপুর, রিষড়ার মতো পুরসভাগুলি টাকার ঘাটতির কারণে সব সময় সব প্রকল্প রূপায়ণ করতে পারে না। সে জন্য তাদের রাজ্য বা কেন্দ্র সরকারের মুখাপেক্ষী হতে হয়। দশ লক্ষের বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট এলাকা নিয়ে কর্পোরেশন হলে উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকা আসবে। কর্পোরেশনকে কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। কলকাতার মতোই যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা মিলবে। নাগরিক পরিষেবা আমূল বদলে যাবে।

রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “মেগাসিটি হলে পুরো এলাকার ভোল বদলে যাবে। অনেক রাজ্যই এ ভাবে উন্নয়নের নিরিখে কয়েক কদম এগিয়ে গিয়েছে। সুযোগ থাকতে আমরা কেন একই সুবিধা নেব না?” তবে, কবে নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে, সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কর্তা থেকে পুরসভার কাউন্সিলররা অন্ধকারে। প্রশাসনের ওই কর্তা বলেন, “ধীরে ধীরে সবটা পরিষ্কার হবে।”

প্রস্তাবিত কর্পোরেশনের সদর দফতর শ্রীরামপুরে হচ্ছে না, এ কথা জানতে পেরে শহরের বেশ কিছু মানুষ হতাশ। তাঁরা মনে করছেন, ১৮৪২ সালে তৈরি হওয়া অবিভক্ত বাংলার এই পুরসভা প্রস্তাবিত নতুন কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হলে স্বাতন্ত্র্য হারাবে। অনেকের আবার অন্য মতও রয়েছে। তাঁরা স্থানীয় ভাবাবেগের পিছনে যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না। তাঁদের বক্তব্য, প্রত্যেক পুরসভারই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কর্পোরেশন হলেও শহরের ইতিহাস বা বৈশিষ্ট্যে তেমন প্রভাব পড়বে না। সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে এমন ভাবাবেগ সরিয়ে রাখা উচিত।

south bengal Chandannagar Municipal Corporation main city office decision at cabinet shreerampur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy