উলুবেড়িয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্রছাত্রীরা।
স্কুলে ঢোকার আগে গেটের বাইরে ফেরিওয়ালার কাছ থেকে হজমি কিনে খেয়েছিল বেশ কিছু পড়ুয়া। তাতেই ঘটল বিপত্তি। ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই ছাত্রছাত্রীরা। কেউ কেউ বমি করতে শুরু করে। হঠাৎই এমন ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েন শিক্ষকেরা। মোট ৩৮ জন ছাত্রছাত্রীকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য দফতরের অনুমান হজমির গুঁড়ো থেকেই এটা ঘটেছে। কনক মাঝি নামে ফেরিওয়ালা ওই মহিলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে পশ্চিম বাউড়িয়া ২ নম্বর প্রাথমিক স্কুলে।
পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন স্কুল শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তৃতীয় শ্রেণি এক ছাত্রী বমি করতে শুরু করে। ক্লাসের শিক্ষক তার প্রাথমিক পরিচর্যা করেন। কিন্তু তার পর প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির অনেক পড়ুয়াই একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কেউ কেউ বমি করতে শুরু করে। অনেকে বেঞ্চিতেই শুয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আতঙ্কিত অভিভাবকেরা স্কুলে এসে ভিড় করেন। দু’জন পড়ুয়াকে ভর্তি করানো হয় স্থানীয় ময়লাপুকুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।
কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষকেরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। চলে আসে কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্স। তাতে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় পুলিশের গাড়ি করেও আক্রান্তদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মোট ৩৮ জন ছাত্রছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্কুলের দুই শিক্ষক মোস্তাকিন দেওয়ান ও সুভাষ মণ্ডল বলেন, “এই ধরনের কোনও ঘটনায় স্কুলে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। তাই আমরা তড়িঘড়ি পুলিশ ও হাসপাতালে খবর দিই।”
এ দিন বিকেলে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, বারান্দায় সার দিয়ে শুয়ে আছে অসুস্থ ছাত্রছাত্রীরা। প্রথম শ্রেণির ছাত্র সুভাষ পালের বাবা মনোরঞ্জনবাবু বলেন, “প্রতিদিনই ছেলেকে স্কুল যাওয়ার সময়ে কিছু পয়সা দিই। ফেরিওয়ালার কাছ থেকে খাবার কিনে খায়। এ দিন কী যে হল!”
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, হজমির গুঁড়ো পরীক্ষা করে দেখা হবে। কনকদেবী অবশ্য বলেন, “বহু বছর ধরে হজমির গুঁড়ো বিক্রি করছি। আগেও স্কুলের ছেলেমেয়েরা কিনে খেয়েছে। এমনটা কোনওদিন ঘটনা ঘটেনি।” ছবি: সুব্রত জানা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy