Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাগনানে ফুলবাজার চালুতে নতুন উদ্যোগ বাজার সমিতির

রাস্তা নিয়ে সমস্যার কারণে হাওড়ার বাগনানে ফুল-বাজার তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে প্রায় এক বছর ধরে। তা চালু করতে এ বার ফুল চাষি ও ব্যবসায়ীদের হাতে পরিবহণ খরচ তুলে দেওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করছে জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি। প্রায় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা খরচ করে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগের বাগনান স্টেশনের কাছে খালোড়ে এক বছর আগে ফুল-বাজারটি তৈরি করে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাগনান শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:১৬
Share: Save:

রাস্তা নিয়ে সমস্যার কারণে হাওড়ার বাগনানে ফুল-বাজার তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে প্রায় এক বছর ধরে। তা চালু করতে এ বার ফুল চাষি ও ব্যবসায়ীদের হাতে পরিবহণ খরচ তুলে দেওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করছে জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি।

প্রায় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা খরচ করে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগের বাগনান স্টেশনের কাছে খালোড়ে এক বছর আগে ফুল-বাজারটি তৈরি করে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি। তাদের সঙ্গে এই উদ্যোগে সামিল হয় জেলা উদ্যানপালন বিভাগও। বাজারে রয়েছে মোট ৪০টি স্টল। পাশেই একটি বহুমুখী হিমঘরও তৈরি করেছে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি। এর জন্যও খরচ হয়েছে ১ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা। উদ্দেশ্য, ট্রেনে চেপে চাষি ও ব্যবসায়ীরা বাগনান স্টেশনে আসবেন। সেখান থেকে দ্রুত তাঁরা চলে আসবেন ফুল-বাজারে। কিন্তু রাস্তা না থাকায় আসছেন না চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

এই পরিস্থিতিতেই সম্প্রতি বাজার চত্বরে ফুল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাজার সমিতির কর্তারা। সেখানে ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীরা ওই প্রস্তাবে প্রাথমিক ভাবে সম্মতি দিয়েছেন বলে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির কর্তাদের দাবি। সমিতির এক পদস্থ কর্তা জানান, বাজার দ্রুত চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। সেই কারণেই এ ভাবে বাজার চালু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

‘সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতি’র রাজ্য সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, “আমরাও চাই বাজারটি দ্রুত চালু হোক। তবে, শুধু ফুল ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এই প্রস্তাবে রাজি আছেন। আমরা সমিতিকে প্রস্তাব দিয়েছি, চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে আরও একবার আলোচনা হোক।”

তবে, শুধু রাস্তার সমস্যাই নয়, স্টলগুলি বিলি করা বা কী ভাবে এই বাজার চলবে তার পদ্ধতি প্রণয়ন সবই বাকি রয়েছে। এ বিষয়ে রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায় জানিয়েছেন, বাজার চালানোর জন্য খুব শীঘ্রই কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি স্টল বিলির জন্য আগ্রহী ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেবে। ফুলবাজার চালু করার পরে হিমঘরও চালু করে দেওয়া হবে।

কেন মেটেনি রাস্তার সমস্যা?

নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি সূত্রের খবর, স্টেশন থেকে ফুল-বাজার পর্যন্ত যাতায়াতের কোনও রাস্তা নেই। ফলে, তাঁরা কী ভাবে ফুল-বাজারে যাবেন, সেই প্রশ্নই তোলেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বাজার থেকে স্টেশন পর্যন্ত রাস্তা তৈরি দেওয়ার প্রস্তাব দেন। রাস্তা তৈরিতে উদ্যোগীও হয় বাজার সমিতি। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় অন্যত্র। স্টেশন সংলগ্ন এই এলাকার কিছু জায়গা রেল কর্তৃপক্ষের। আবার কিছু জায়গা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির। অধিকাংশ জায়গা জবরদখল হয়ে রয়েছে। ফলে, রাস্তা তৈরির জায়গা মেলেনি। জায়গা জবর-দখলমুক্ত করার জন্য তাঁরা রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। জায়গা পাওয়া গেলেই রাস্তা তৈরি করে নেওয়া হবে।

বিকল্প পরিকল্পনা হিসাবেই চাষি ও ব্যবসায়ীদের হাতে পরিবহণ খরচ তুলে দেওয়ার কথা ভাবছেন বাজার সমিতির কর্তারা। সমিতির পক্ষে জানানো হয়, স্টেশন থেকে যে সব ব্যবসায়ী ভ্যানরিকশায় চাপিয়ে স্টেশন রোড (দক্ষিণ) ধরে বাগনান কলেজের সামনে দিয়ে বাজারে ফুল নিয়ে যাবেন বা নিয়ে আসবেন তাঁদের স্টেশন পর্যন্ত ভ্যানরিকশার ভাড়া দিয়ে দেওয়া হবে।

বাজার সমিতির এক কর্তা জানান, পরিবহণ খরচ দু’ভাবে মেটানো যেতে পারে। হয় বাজার সমিতি নিজেরাই বেশ কিছু ভ্যানরিকশা রাখবেন। চালকেরা সারা দিন ধরে যত ফুলের বস্তা বহন করবেন, সেই খরচ তাঁদের হাতে সরাসরি তুলে দেওয়া হবে। নয়তো চাষিরা যদি নিজেরা ভ্যানরিকশায় চাপিয়ে এই রাস্তা দিয়ে ফুল আনেন, ভ্যানের ভাড়া তাঁদের দিয়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ফুল-বাজার থেকে স্টেশন পর্যন্ত যতটুকু খালি জায়গা পাওয়া যাবে তার উপরে চলাচলের যোগ্য একটি বাঁধানো রাস্তা করে দেওয়া হবে। যাঁরা মাথায় চাপিয়ে ফুল আনবেন, তাঁরা এই রাস্তা ব্যবহার করে হেঁটে দ্রুত বাজারে আসতে পারবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bagnan flower market southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE