Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাজি-বারুদ উদ্ধার, ধৃত ৩

চিলেকোঠার ঘরে বসে দুই ভাই মিলে হামানদিস্তায় লোহার চূর তৈরি করছিলেন। চারপাশে বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও উপকরণ ছড়ানো। রয়েছে বালতি ভর্তি বারুদ। আচমকাই দরজা ঠেলে সেই ঘিঞ্জি ঘরে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়লেন চার-পাঁচ জন। তাঁদের দেখে হকচকিয়ে গিয়ে চিত্‌কার করতে গেলে দুই ভাইকে থামিয়ে দিলেন ওই অপরিচিত ব্যক্তিরা।

উদ্ধার হওয়া বাজি। বৃহস্পতিবার।—নিজস্ব চিত্র।

উদ্ধার হওয়া বাজি। বৃহস্পতিবার।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৩২
Share: Save:

চিলেকোঠার ঘরে বসে দুই ভাই মিলে হামানদিস্তায় লোহার চূর তৈরি করছিলেন। চারপাশে বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও উপকরণ ছড়ানো। রয়েছে বালতি ভর্তি বারুদ। আচমকাই দরজা ঠেলে সেই ঘিঞ্জি ঘরে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়লেন চার-পাঁচ জন। তাঁদের দেখে হকচকিয়ে গিয়ে চিত্‌কার করতে গেলে দুই ভাইকে থামিয়ে দিলেন ওই অপরিচিত ব্যক্তিরা। বললেন, ‘আমরা পুলিশ। পালানোর চেষ্টা করে লাভ নেই।’

বৃহস্পতিবার ভোরে বালির নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ খবর পায়, স্থানীয় দুর্গাপুর-অভয়নগর দু’নম্বর পঞ্চায়েতের পঞ্চাননতলার একটি বাড়িতে প্রচুর বিস্ফোরক মজুত করা হয়েছে। বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পর থেকেই এই সব বিষয়ে বিশেষ ভাবে সজাগ রয়েছে পুলিশ। তার উপরে জাতীয় সড়কের ধারের এক গ্রামের বাড়িতে বিস্ফোরক মজুত রয়েছে, গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে এক মুহূর্ত দেরি করেননি নিশ্চিন্দা থানার বড়বাবু জুলফিকর মোল্লা। বিশাল দল নিয়ে সোজা হাজির হন পঞ্চাননতলায়।

ভোর বেলায় এলাকায় তেমন লোকজন না থাকলেও স্বপন হাজরা ও সমীর হাজরার একতলা বাড়ির সামনে দাঁড়াতেই বারুদের গন্ধ নাকে এসেছিল পুলিশকর্মীদের। আর তাই বিলম্ব না করে বাড়ির চারপাশে উর্দিধারী পুলিশকে দাঁড় করিয়ে সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীদের নিয়ে ভিতরে ঢোকেন জুলফিকরবাবু। তখন অবশ্য সিঁড়ির চিলেকোঠার ঘরে বসে লোহার চূর তৈরি করছেন স্বপন ও সমীর।

পুলিশ সূত্রের খবর, দুই ভাইকে গ্রেফতার করার পরে সারা বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। সিঁড়ির চিলেকোঠার ঘর, বাথরুমের উপরের ব্যালকনি, সিঁড়ির পাশের গোপন কুঠরি থেকে উদ্ধার হয় ২০০ কেজি বারুদ, ৫০ কেজি লোহার চূর, গন্ধক, সোরা-সহ সুতলি দড়ি। প্রথমে অন্য রকম সন্দেহ করলেও কাপড় প্রিন্টের ব্যবসায়ী দুই ভাইকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করে ও অন্যান্য সূত্রে খোঁজ করে পুলিশ শেষে নিশ্চিত হয়েছে। তারা জেনেছে, আতস বাজি তৈরির জন্যই দুই ভাই বাড়িতে বেআইনি ভাবে এই সব মশলা মজুত করেছিলেন।

অন্য দিকে, এ দিন বিকেলে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে লিলুয়া থানার পুলিশ মীরপাড়ার বাসিন্দা বিকাশ রায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। সেখান থেকে ২০০ কেজি চকোলেট বোমা উদ্ধার হয়েছে। বিকাশকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

fire crackers gun powder recovery southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE