Advertisement
২১ মে ২০২৪
মনোনয়নে বাধার নালিশ এবিভিপি-র

বিনা লড়াইয়ে আরামবাগের ছয় কলেজে জয়ী টিএমসিপি

প্রতিদ্বন্দ্বী কোনও ছাত্র সংগঠনই মনোনয়নপত্র না তোলায় আরামবাগ মহকুমার ছ’টি কলেজে শুক্রবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেল রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। এসএফআই আরামবাগ মহকুমার কলেজ ভোট বয়কট করেছে। তবে, অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর অভিযোগ, টিএমসিপি-র বাধা এবং মারধরে তাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র তুলতে পারেননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:১৪
Share: Save:

প্রতিদ্বন্দ্বী কোনও ছাত্র সংগঠনই মনোনয়নপত্র না তোলায় আরামবাগ মহকুমার ছ’টি কলেজে শুক্রবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেল রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)।

এসএফআই আরামবাগ মহকুমার কলেজ ভোট বয়কট করেছে। তবে, অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর অভিযোগ, টিএমসিপি-র বাধা এবং মারধরে তাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র তুলতে পারেননি। এবিভিপি-র জেলা প্রমুখ অরবিন্দ নন্দীর অভিযোগ, “আমরা মনোনয়নপত্র তোলার চেষ্টা করেছিলাম। টিএমসিপি বাধা দেয়।” টিএমসিপি-র বাধা প্রসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, “খানাকুলের কলেজে আমাদের ৪টি মনোনয়নপত্র তোলা হলে ওরা ছিঁড়ে দেয়। মারধর করে। পরিচয়পত্র কেড়ে নেয়। তার পরে আমাদের ছেলেরা ফিরে আসে। এক জনের বাড়িতে সাদা থান পাঠিয়েছে ওরা। সমস্ত বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।”

অভিযোগ উড়িয়ে টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি শুভজিৎ সাউয়ের দাবি, “এবিভিপি প্রার্থীই জোগাড় করতে পারেনি। ওদের তো সংগঠনই নেই। কাকেই বা বাধা দেব?”

তবে, শুক্রবার মহকুমার কলেজগুলিতে মনোনয়নপত্র তোলা এবং জমা দেওয়াকে ঘিরে উত্তেজনা পুরোদস্তুর বজায় রইল টিএমসিপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে। দু’এক জায়গায় ছোটখাটো গোলমালও হয়। রাস্তায় নেমেছিলেন তৃণমূল নেতারাও।

খানাকুলের রাজা রামমোহন রায় মহাবিদ্যালয়, গোঘাটের কামারপুকুর শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা বিদ্যা মহাপীঠ, বেঙ্গাই অঘোর কামিনী মহাবিদ্যালয়, কেশবপুর কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম মহাবিদ্যালয়, আরামবাগ নেতাজি মহাবিদ্যালয় এবং আরামবাগ গার্লস কলেজ এই ছ’টি কলেজে ভোট হওয়ার কথা ছিল আগামী ৭ জানুয়ারি। মনোননয়নপত্র তোলা এবং জমা দেওয়াকে ঘিরে গোষ্ঠী-কোন্দল সামলাতে বৃহস্পতিবারই জেলা স্তরের তৃণমূল নেতারা কলেজগুলিতে টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সমান ভাবে আসন ভাগ করে দেন। তা সত্ত্বেও শুক্রবার অশান্তি এড়ানো যায়নি।

পুলিশ ও টিএমসিপি সূত্রে জানা গিয়েছে, খানাকুলের রাজা রামমোহন রায় মহাবিদ্যালয়ে ২৮টি আসনের মধ্যে ১৪টি করে মনোনয়নপত্র তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল টিএমসিপি নেতা শেখ হায়দার এবং মুন্সি নজিবুল করিম গোষ্ঠীর মধ্যে। দুপুর ১২টা নাগাদ দুই গোষ্ঠী একে অপরের বিরুদ্ধে বেশি মনোনয়নপত্র তোলার চেষ্টার অভিযোগ তুলে মারপিটে জড়ায়। শেষমেশ দুই গোষ্ঠীর নেতারাই পরিস্থিতি সামলান। কামারপুকুর শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা বিদ্যা মহাপীঠে মোট ২২টি আসনের মধ্যে টিএমসিপি নেতা আতাউল হকের অনুগামীরা দুপুর ২টোর মধ্যে ১১টির মধ্যে ১০টি মনোনয়নপত্র তুলে নেন। অপর নেতা তপন মণ্ডলের অনুগামীরা ততক্ষণে মাত্র ৬টি মনোনয়নপত্র তুলতে পেরেছিলেন। তপনের গোষ্ঠীর বাকি প্রার্থীদের রাস্তায় আটকানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। দু’পক্ষের হাতাহাতি হয়। এ ক্ষেত্রেও নেতাদের হস্তক্ষেপে গোলমাল থামে। ২২টি আসনের মধ্যে ১৬টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা হয়। আরামবাগ নেতাজি মহাবিদ্যালয়ের ৪০টি আসন নিয়ে টিএমসিপি-র বিশেষ গোষ্ঠী বিভাজন না থাকলেও সংগঠনের কিছু কর্মী-সমর্থক কলেজ সংলগ্ন এলাকায় বচসা থেকে মারামারিতে জড়ায়।

এ নিয়ে টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি শুভজিৎ সাউয়ের দাবি, “আসন সমস্যা আগেই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার ছোটখাটো গোলমাল নেতারাই সামলে নিয়েছেন। তেমন কোনও অশান্তি হয়নি।” এসএফআইয়ের জেলা সহ-সম্পাদক অভিজি বারুই জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ না থাকায় তাঁরা মহকুমার কলেজ নির্বাচন বয়কট করেছেন।

আজ, শনিবার চুঁচুড়া এবং চন্দননগর মহকুমার কলেজগুলিতে মনোনয়নপত্র তোলা হবে। সেখানে যাতে বিরোধী সংগঠনের প্রার্থীরা সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচনে সামিল হতে পারে, প্রশাসনের কাছে তা সুনিশ্চিত করার দাবি তুলেছে এবিভিপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

abvp arambag college
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE