Advertisement
E-Paper

বেহাল গাদিয়াড়ায় উৎসাহ হারাচ্ছেন পর্যটকেরা

নেই পর্যটকদের বসার জায়গা। ভাঙাচোরা শৌচালয় ব্যবহারের অযোগ্য। সাফ হয়নি ঝোপ-জঙ্গল। সব মিলিয়ে গাদিয়াড়া পর্যটন কেন্দ্রের হাল বেশ খারাপ। কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল নয়। তার ওপর সম্প্রতি বাড়ানো হয়েছে পার্কিং ও পিকনিক স্পটের ভাড়া। ফলে ভ্রমণপিপাসু বা শীতের মরসুমে চড়ুইভাতি করতে আসা মানুষ ক্রমেই মুখ ফেরাচ্ছেন এখান থেকে। পর্যটন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পর্যটন বাবদ আয়ও ক্রমশ কমছে।

মনিরুল ইসলাম

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০৬
নদীবাঁধে নেই আলোর ব্যবস্থা (বাঁদিকে)। ডানদিকে, ভাঙাচোরা চড়ুইভাতির ছাউনি। ছবি: সুব্রত জানা।

নদীবাঁধে নেই আলোর ব্যবস্থা (বাঁদিকে)। ডানদিকে, ভাঙাচোরা চড়ুইভাতির ছাউনি। ছবি: সুব্রত জানা।

নেই পর্যটকদের বসার জায়গা। ভাঙাচোরা শৌচালয় ব্যবহারের অযোগ্য। সাফ হয়নি ঝোপ-জঙ্গল। সব মিলিয়ে গাদিয়াড়া পর্যটন কেন্দ্রের হাল বেশ খারাপ। কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল নয়। তার ওপর সম্প্রতি বাড়ানো হয়েছে পার্কিং ও পিকনিক স্পটের ভাড়া। ফলে ভ্রমণপিপাসু বা শীতের মরসুমে চড়ুইভাতি করতে আসা মানুষ ক্রমেই মুখ ফেরাচ্ছেন এখান থেকে। পর্যটন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পর্যটন বাবদ আয়ও ক্রমশ কমছে।

হুগলি ও রূপনারায়ণ নদের মোহনার কাছে হাওড়া তথা রাজ্যের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র গাদিয়াড়া। গাদিয়াড়ার পশ্চিম দিকে পূর্ব মেদিনীপুরের গেঁওখালি ও দক্ষিণ দিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুরপুর। কলকাতা থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে এই পর্যটন কেন্দ্রে শুধু শীতের মরসুম নয়, বছরের অন্য সময়েও পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। রাজ্য পর্যটন দফতরের দায়িত্বে থাকলেও দীর্ঘদিন ধরেই এখানকার পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই পর্যটকদের। ৩৩ বিঘা জায়গার অর্ধেক অংশ জুড়ে রয়েছে ঝাঁ-চকচকে সরকারি লজ, সাজানো বাগান। বাকি অর্ধেক অংশ চড়ুইভাতির জন্য। ছ’টি শৌচালয় রয়েছে, যার অধিকাংশই ভাঙাচোরা ও অপরিচ্ছন্ন। নেই পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা। এমনকী নদীর পাড়ে নেই পর্যটকদের বসার জায়গা। নিরাপত্তার স্বার্থে পাড়ে নেই কোনও রেলিং। ব্যবস্থা নেই আলোর। যাঁরা চড়ুইভাতি করতে আসেন তাঁদের রান্নাবান্নার জন্য পর্যাপ্ত শেড নেই। ট্যাপকল থাকলেও জলনিকাশির ব্যবস্থা নেই। পুরো জায়গা আগাছা ও জঙ্গলে ভর্তি। এ ছাড়া রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের সমস্যা।

এমন বেহাল পরিকাঠামোয় পিকনিক স্পটের ভাড়া বাড়ানোয় অনেকেই ক্ষুব্ধ। এখন চড়ুইভাতির ৭ জনের প্রবেশ মূল্য ৩০০ টাকা, ১০ থেকে ১৫ জনের ৫০০ টাকা। ১৫ থেকে ২৫ জনের ১০০০ টাকা, ২৫ থেকে ৫০ জনের ১৫০০ টাকা এবং ৫০ জনের বেশি থাকলে দিতে হবে ২ হাজার টাকা। ভাড়া অনেকটা বেশি বলে জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষের একাংশ। তাঁদের আশঙ্কা, গত কয়েক বছরে যে ভাবে আয় কমেছে তাতে এই অবস্থা চলতে থাকলে আয় আরও কমবে। গত বছর সারা মরসুমে আয় হয়েছিল দু’লক্ষ টাকার কিছু বেশি।

রাজ্য পর্যটন দফতরের অধিকর্তা উমাপদ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গাদিয়াড়ায় পরিকাঠামোয় কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে শীঘ্রই এই পর্যটন কেন্দ্রের উন্নতির ব্যবস্থা করা হবে। এ ব্যাপারে নানা পরিকল্পনা হচ্ছে।”

যদিও পর্যটকদের অভিযোগ, আগেও তাঁরা এমন কথা শুনেছিলেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। ঝাঁ-চকচকে সরকারি লজ থাকলেও শীতের মরসুম ছাড়া অন্য সময় ব্যবসা হয় না বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। এর জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন পর্যটকেরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, কলকাতা ও শহরতলি থেকে গুটিকয়েক সিটিসি বাস চলাচল করে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে অটো-ম্যাজিক গাড়ির দৌরাত্ম্যে। গাদিয়াড়ায় জেটি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হতে চললেও, নুরপুর ও গেঁওখালিতে কোনও জেটি নেই। ফলে পর্যটকদের ওঠানামার অসুবিধা হয়।

নদীতীরের অপরূপ শোভা পর্যটকদের এখানে টেনে আনলেও পরিকাঠামোর অভাবে ক্রমশ তাঁরা উৎসাহ হারাচ্ছেন। ফলে রুটিরুজিতে টান পড়েছে বেসরকারি হোটেল মালিকদের। এমনই এক হোটেলের ম্যানেজার গগনকুমার বাগ জানালেন, “গত মরসুমে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মাত্র ব্যবসা হয়েছে। এ ভাবে চলতে থাকলে অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবেন। অবিলম্বে রাজ্যের অন্যতম এই পর্যটনকেন্দ্রের পরিকাঠামোর উন্নতি দরকার।”

manirul islam gadiara tourist insufficient infrastructure southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy