Advertisement
E-Paper

বর্জ্য থেকে সার প্রকল্প, চলতি বছরেই চালুর ইঙ্গিত

জাপানের আর্থিক সহযোগিতায় এবং কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে কয়েক বছর ধরেই বৈদ্যবাটির দীর্ঘাঙ্গিতে বর্জ্য থেকে সার তৈরির প্রকল্প গড়া হচ্ছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের মধ্যেই তা পুরোদস্তুর চালু হতে চলেছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প আধিকারিকেরা। ইতিমধ্যেই অবশ্য পরীক্ষামূলক ভাবে সার তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জেলার ছ’টি পুরসভা এলাকার অন্তত ১০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন এবং প্রতিটি পুর এলাকাই অনেকটা দূষণমুক্ত করা যাবে বলে তাঁদের আশা।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০৪
দীর্ঘাঙ্গিতে সেই প্লান্ট, যেখানে কাজ হওয়ার কথা।—নিজস্ব চিত্র।

দীর্ঘাঙ্গিতে সেই প্লান্ট, যেখানে কাজ হওয়ার কথা।—নিজস্ব চিত্র।

জাপানের আর্থিক সহযোগিতায় এবং কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে কয়েক বছর ধরেই বৈদ্যবাটির দীর্ঘাঙ্গিতে বর্জ্য থেকে সার তৈরির প্রকল্প গড়া হচ্ছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের মধ্যেই তা পুরোদস্তুর চালু হতে চলেছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প আধিকারিকেরা। ইতিমধ্যেই অবশ্য পরীক্ষামূলক ভাবে সার তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জেলার ছ’টি পুরসভা এলাকার অন্তত ১০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন এবং প্রতিটি পুর এলাকাই অনেকটা দূষণমুক্ত করা যাবে বলে তাঁদের আশা।

দিল্লি রোডের ধারে দীর্ঘাঙ্গিতে ৫১ একর জমিতে ১৭০ কোটি টাকায় আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রকল্পটি গড়া হচ্ছে। জাপানের সরকারি সংস্থা ‘জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি’ এই প্রকল্পে ১৪১ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। রাজ্য সরকার দিচ্ছে ২৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটি গড়ছে কেএমডিএ। ওই সংস্থার কর্তারা জানিয়েছেন, প্রকল্পে পচন ও অপচনশীল কঠিন বর্জ্য প্রথমে আলাদা করা হবে। তারপর আনাজের খোসা, ফলের খোসা এবং অন্যান্য পচনশীল দ্রব্য থেকে নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জৈব সার তৈরি করা হবে। পাশাপাশি, প্লাস্টিক ও কাচের মতো অপচনশীল দ্রব্য ফের শিল্পে ব্যবহারের উপযোগী করে তৈরি করারও পরিকল্পনা রয়েছে ওই প্রকল্পে। উত্তরপাড়া-কোতরং, কোন্নগর, রিষড়া, শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটি ও চাঁপদানি এই ছ’টি পুরসভাকে ওই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। অর্থাত্‌, এই ছ’টি পুরসভা থেকে সংগৃহীত বর্জ্য ওই প্রকল্পে নিয়ে যাওয়া হবে।

সরকারি উদ্যোগে এমন প্রকল্প এই প্রথম দাবি করে কেএমডিএ-র এক কর্তা বলেন, “উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এই প্রকল্পে ছ’টি বাদে আরও পুরসভাকে যুক্ত করা সম্ভব। প্রকল্প চালু হয়ে গেলে প্রতিদিন অন্তত ৬ টন করে পচনশীল বর্জ্য লাগবে। এখানে যে জৈব সার উত্‌পাদন করা হবে তা রবার, চা-সহ বিভিন্ন চাষে ব্যবহার করা যাবে। ডিসেম্বরেই প্রকল্পটি চালুর চেষ্টা চলছে।”

২০০৮ সালে প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন রাজ্যের তত্‌কালীন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পরেই প্রকল্পের কাজে গতি আসে। কেএমডিএ সূত্রে জানানো হয়েছে, এই প্রকল্পে ছ’টি পুর এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে সংগৃহীত পচন এবং অপচনশীল দ্রব্য পৃথক করার জন্য একটি করে প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। বৈদ্যবাটি পুরসভা ইতিমধ্যে ওই ইউনিটের কাজ শেষ করে ফেলেছে। শুরু হয়ে গিয়েছে কাজও। উত্তরপাড়া ও কোন্নগর পুর কর্তৃপক্ষ পৃথককরণের ইউনিট গড়ার কাজ শেষ করে ফেললেও তা চালু হয়নি। রিষড়া, শ্রীরামপুর এবং চাঁপদানি এলাকায় ওই ইউনিট তৈরির কাজ চলছে।

পচন ও অপচনশীল দ্রব্য সংগ্রহের জন্য বৈদ্যবাটি পুরসভা প্রতি মাসে বাড়িপ্রতি ১০ টাকা করে নিচ্ছে। পুুরপ্রধান অজয়প্রতাপ সিংহ বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখতেই কিছু কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের বেতন দিতেই বাড়িপ্রতি দশ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। পুর এলাকায় যাঁরা ব্যবসা বা অন্য কাজে যুক্ত তাঁদের কাছ থেকে পৃথক টাকা নেওয়া হচ্ছে তালিকা অনুয়ায়ী। এলাকার মানুষের সম্মতি নিয়েই ওই তালিকা তৈরি হয়েছে। সব পক্ষের যথেষ্ট উত্‌সাহ ও সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে।”

কেএমডিএ সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিটি পুরসভা বাড়ি বাড়ি থেকে যে আবর্জনা সংগ্রহ করে, তার মধ্যে এমন কিছু থাকে যা মাটিতে মিশে গেলে মানবদেহ এবং পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। এই প্রকল্পে সে দিকে সতর্কতা রক্ষা করা হচ্ছে। নাগরিকদের শৌচাগারের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে সংগৃহীত বর্জ্য জীবাণুুমুক্ত করার কাজও হবে। যে জায়গায় ক্ষতিকর বর্জ্যগুলি রাখা হবে সেই জায়গাও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে বিশেষ ভাবে তৈরি। যাতে কোনও ভাবে সেটি জলের সংস্পর্শে এসে গুলে গিয়ে মাটিতে না মিশে যেতে পারে।

waste recycling project fertiliser gautam bandopadhay baidyabati southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy