Advertisement
E-Paper

ভারোত্তোলক গড়ে চলেছে সুখেনের ক্লাব

শুধু কয়েক মণ লোহা নয়, অনেক বড় ভার এক ঝটকায় মাথার উপরে তুলে ধরেছেন সুখেন দে। গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসে ভারোত্তোলনে সোনা ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি। কিন্তু ক’জনই বা খোঁজ রাখেন, কোন আঁতুড় থেকে এই চমকপ্রদ উত্থান? হাওড়ার আন্দুলে তাঁর বাড়ির কাছেই সেই ব্যায়াম সমিতি কিন্তু নীরবে কাজ করে চলেছে।

অভিষেক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৪ ০১:১৬
ক্লাবে অনুশীলনে ভবিষ্যতের চ্যাম্পিয়ন। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।

ক্লাবে অনুশীলনে ভবিষ্যতের চ্যাম্পিয়ন। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।

শুধু কয়েক মণ লোহা নয়, অনেক বড় ভার এক ঝটকায় মাথার উপরে তুলে ধরেছেন সুখেন দে। গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসে ভারোত্তোলনে সোনা ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি।

কিন্তু ক’জনই বা খোঁজ রাখেন, কোন আঁতুড় থেকে এই চমকপ্রদ উত্থান? হাওড়ার আন্দুলে তাঁর বাড়ির কাছেই সেই ব্যায়াম সমিতি কিন্তু নীরবে কাজ করে চলেছে।

স্বাধীনতার আগে বাংলার গাঁ-গঞ্জে ব্যায়াম সমিতির নেপথ্যে চলত বহু গুপ্ত রাজনৈতিক সংগঠন। সেখানে নিয়মিত চলত শরীরচর্চা, লাঠিখেলা। অগ্নিযুগের তাবড় বিপ্লবীদের অনেকেরই গড়ে ওঠার পাঠশালা এই সব আখড়া।

দিন বদলেছে। কিন্তু ব্যায়াম সমিতির দিন যে ফুরোয়নি, বরং কৃতী ব্যায়ামবীর-ভারোত্তোলক তৈরি করে চলেছে, তার প্রমাণ স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় সুখেনের সোনাজয়। সুখেন এখন ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মী। কিন্তু তাঁর শরীরচর্চার আঁতুড় আন্দুল পুঁইল্যার কিশোর ব্যায়াম সমিতি। ১০ বছরের খুদে থেকে ৭২ বছরের বৃদ্ধ নানা বয়সের মানুষ সেখানে নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। তাঁদের মধ্যেই জনা পঞ্চাশ ভারোত্তোলনের সঙ্গে যুক্ত। অনেকেই বাংলার হয়ে জাতীয় স্তরে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কিশোর ব্যায়াম সমিতির সদস্য মানস দাস জানান, সংস্থাটির প্রতিষ্ঠা ১৯৬৪ সালে। এলাকার ছেলেদের শরীরচর্চার জন্য তৈরি হয়েছিল এই সংস্থা। পুঁইল্যার আড়ুপাড়ায় সমিতির নিজস্ব দু’তলা বাড়ি। একতলায় মূলত ভারোত্তোলন হয়, দোতলায় মাল্টিজিম। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে শরীরচর্চা। চাকরি পাওয়ার আগে পর্যন্ত এখানেই নিয়মিত অনুশীলন করতেন সুখেন। সোনা জয়ের পরে বাংলার বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ আনলেও নিজের শিকড়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন তিনি।

কিশোর ব্যায়াম সমিতিতে নিয়মিত ভারোত্তোলন অনুশীলন করেন আন্দুল ভাণ্ডারীপাড়ার দীপঙ্কর রায়, নলপুরের বিরাজ পালেরা। তাঁরা জানান, ২০১২-এ সমিতি আয়োজিত ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতার সময়ে শেষ বার ক্লাবে এসেছিলেন সুখেন। মঞ্চে উঠে প্রতিযোগীদের উৎসাহিতও করেন তিনি। এ বারের কমনওয়েলথ গেমসে যাওয়ার আগে ক্লাবের প্রবীণ সদস্যদের ফোন করেছিলেন তিনি। তাঁর প্রথম কোচ অশোক মাজি জানান, বাড়িতে থাকলেই ক্লাবে এসে অনুশীলন করেন সুখেন। ছোটদের নানা পরমর্শও দেন। শুধু শরীরচর্চা নয়, নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডও চালায় সমিতি। ক্লাব চত্বরে তিন দিন বসেন এক হোমিওপ্যাথি ডাক্তার। অনুশীলন করতে গিয়ে যদি কেউ আহত হন, তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। সামান্য ফি নিয়ে গ্রামের লোকজনকেও দেখে দেন ডাক্তারবাবু। সুঠাম শরীর ও মেধার মিশেলে আরও অনেক সুখেন তৈরি করার লক্ষ্যে নিভৃতে কাজ করে চলেছে গ্রামীণ হাওড়ার এই ব্যায়াম সমিতি।

abhishek chattopadhyay weightlifting sukhen andul
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy