Advertisement
০২ মে ২০২৪

মহকুমায় কিষান মান্ডি নিয়ে অন্ধকারে কৃষি বিপণন দফতর

কিষান মান্ডি বা কৃষক বাজার কৃষি বিপণন দফতরের প্রকল্প। কয়েকটি ক্ষেত্রে কাজও শুরু হয়েছে। অথচ মহকুমা কৃষি বিপণন এবং ব্লক প্রশাসনই বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে। এমনই অবস্থা হুগলির আরামবাগ মহকুমায়। মহকুমার পুরশুড়া ব্লকের কৃষি খামারে কিষান মান্ডি বা কৃষক বাজার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। অথচ সে ব্যাপারে কিছুই জানে না মহকুমাও ব্লক প্রশাসন।

পুরশুড়ায় এই কিষান মান্ড তৈরি নিয়েই দেখা দিয়েছে বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।

পুরশুড়ায় এই কিষান মান্ড তৈরি নিয়েই দেখা দিয়েছে বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০২:৪৫
Share: Save:

কিষান মান্ডি বা কৃষক বাজার কৃষি বিপণন দফতরের প্রকল্প। কয়েকটি ক্ষেত্রে কাজও শুরু হয়েছে। অথচ মহকুমা কৃষি বিপণন এবং ব্লক প্রশাসনই বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে। এমনই অবস্থা হুগলির আরামবাগ মহকুমায়।

মহকুমার পুরশুড়া ব্লকের কৃষি খামারে কিষান মান্ডি বা কৃষক বাজার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। অথচ সে ব্যাপারে কিছুই জানে না মহকুমাও ব্লক প্রশাসন। মহকুমার কোথায় কতটা জায়গা নিয়ে কৃষক বাজার নির্মাণ হচ্ছে, কারা নির্মাণের বরাত পেয়েছে, নির্মানে কোনও অস্বচ্ছতা থাকছে কিনা ব্লক প্রশাসনিক স্তরে এর কোনও খবরও নেই। ফলে তাদের তদারকি ছাড়াই চলছে নির্মাণ কাজ।

যে ব্লকে নির্মীয়মাণ কৃষি বাজার নিয়ে এই সব প্রশ্ন উঠেছে সেই পুড়শুড়া ব্লক কৃষি খামারের আধিকারিক রাজকুমার পাত্র বলেন, “কৃষি খামারের জায়গায় কাজটা হচ্ছে দেখেছি। কিন্তু কতটা পরিমাণ জায়গায় হচ্ছে বা অন্যান্য বৃত্তান্ত কিছুই জানা নেই। আমাকে কেউ জানায়ওনি।

পুরশুড়ার বিডিও অনির্বাণ রায়ের অভিযোগ, “এ বিষয়ে লিখিত নিয়ম না থাকলেও স্বাভাবিক পথেই ব্লক প্রশাসনের কাছে সমস্ত কিছু জানানোর কথা। কিন্তু এখানে কৃষক বাজার নির্মাণের ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি।” মহকুমাশাসক অরিন্দম রায়ের বক্তব্য, “কেন এমনটা ঘটছে সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এ সম্পর্কে কৃষি বিপনন দফতরই বলতে পারবে।”

মহকুমা কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক ভবেশ দাস বলেন, “রাজ্য এবং জেলা দফতর থেকে শুধুমাত্র পুড়শুড়া ব্লকে এই কাজ হচ্ছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। আর জানানো হয়েছে, আরামবাগ ব্লকেও শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”

মহকুমা কিষান মান্ডি বা কৃষি বাজার তৈরি নিয়ে প্রশাসনিক সমন্বয়ের এমন সমস্যা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে হুগলি জেলা কৃষি বিপণন আধিকারিক সুদীপকুমার পাল সংবাদ মাধ্যমের কাছে তাঁর কথা বলারই কোনও এক্তিয়ার নেই বলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, রাজ্য বিপণন দফতরের কৃষক বাজার নির্মাণের প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে আছে রাজ্য বিপনন পর্ষদ। স্থানীয় প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে কৃষি বাজার তৈরির অভিযোগ নিয়ে রাজ্য বিপণন পর্ষদের চিফ একজিকিউটিভ অফিসার সুশীতকুমার বিশ্বাস বলেন, “ওই প্রকল্প রূপায়ণে জেলা স্তরে একটি কমিটি আছে। তাতে বিডিওরা না থাকলেও মহকুমাশাসকেরা আছেন। তাঁদের অবশ্যই এটা জানার কথা। তবে এক্ষেত্রে কেন তাঁরা জানতে পারছেন না তা খোঁজ নেব।”

রাজ্য কৃষি বিপণন পর্ষদ সূত্রের খবর, হুগলির ১৮টি ব্লকের মধ্যে প্রথম দফায় সিঙ্গুর, ধনেখালি, বলাগড়, জাঙ্গিপাড়া, পান্ডুয়া (আদিসপ্তগ্রাম), পুড়শুড়া এবং আরামাবাগ সাতটি ব্লকে কিষান মান্ডি বা কৃষিবাজার নির্মাণের ছাড়পত্র মিলেছে। এর মধ্যে ধনেখালি ও সিঙ্গুর ব্লকে কাজ শেষ। কাজ চলছে বলাগড়, জাঙ্গিপাড়া, পান্ডুয়া (আদিসপ্তগ্রাম) এবং পুড়শুড়ায়। জমি সমস্যার কারণে এতদিন কাজ আটকে থাকা আরামবাগ ব্লকে কৃষি বাজার তৈরির কাজও শীঘ্রই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সুশীতবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE