Advertisement
E-Paper

যানজট এড়াতে বাসস্ট্যান্ড সরানোর পরিকল্পনা

চার বছরে মেটেনি যানজট সমস্যা। তাই শহরকে যানজটমুক্ত করতে এবং বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া মার্কেট কমপ্লেক্সকে সচল করতে হাওড়া-আমতা রোডের ধারে ডোমজুড় বাসস্ট্যান্ডটি মতিঝিল এলাকায় সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে হাওড়া জেলা পরিষদ। তবে, এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, বাসস্ট্যান্ড সরলে তাঁরা সমস্যায় পড়বেন।

মনিরুল ইসলাম

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৪৫
শহরের কেন্দ্রস্থলে এই বাসস্ট্যান্ড মতিঝিল এলাকায় সরাতে চায় জেলা পরিষদ। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়

শহরের কেন্দ্রস্থলে এই বাসস্ট্যান্ড মতিঝিল এলাকায় সরাতে চায় জেলা পরিষদ। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়

চার বছরে মেটেনি যানজট সমস্যা। তাই শহরকে যানজটমুক্ত করতে এবং বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া মার্কেট কমপ্লেক্সকে সচল করতে হাওড়া-আমতা রোডের ধারে ডোমজুড় বাসস্ট্যান্ডটি মতিঝিল এলাকায় সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে হাওড়া জেলা পরিষদ। তবে, এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, বাসস্ট্যান্ড সরলে তাঁরা সমস্যায় পড়বেন।

২০১০ সালের শেষ দিকে শহরের কেন্দ্রস্থলে ১ বিঘা ৮ কাঠা জমিতে ওই বাসস্ট্যান্ড এবং তার পিছনে মাকের্ট কমপ্লেক্স তৈরি করে তৎকালীন বাম পরিচালিত জেলা পরিষদ। খরচ হয়েছিল তিন কোটি টাকা। মার্কেট কমপ্লেক্সে ২৩টি দোকানঘর তৈরি করা হলেও কেউ ‘লিজ’ না নেওয়ায় তা চালু করা যায়নি। মাকের্ট কমপ্লেক্সটি চারতলা করার পরিকল্পনা থাকলেও দোতলার কাজই শেষ হয়নি।

ওই বাসস্ট্যান্ডে মূলত ডোমজুড়-হাওড়া রুটের ২৫-৩০টি বাস এবং বেশ কিছুু মিনিবাস দাঁড়ায়। পাশেই আছে বেশ কয়েকশো অটো-ট্রেকারের স্ট্যান্ড। শৌচাগার না থাকায় বাসস্ট্যান্ড এক দিক কার্যত নরক হয়ে থাকে বলে যাত্রীদের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। তা ছাড়া, সংকীর্ণ রাস্তার ধারে ওই স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি ঢোকা-বেরনোর সময়ে সব সময়েই যানজট হয়। নাভিশ্বাস ওঠে সাধারণ মানুষের।

অপরিকল্পিত ভাবে বাস স্ট্যান্ডটি তৈরির ফলেই এই সমস্যা দাবি করে তৃণমূূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা বাস স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি ঠিক। কিন্তু আগে এই নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলব। তার পরেই পরিকল্পনা রূপায়ণ করা হবে। মার্কেট কমপ্লেক্সটিরও সংস্কার করা হবে।” জেলা পরিষদের মুখ্য বাস্তুকার সুব্রত রায় জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির কাজ চলছে। গোটা প্রকল্পের জন্য ১০ কোটি টাকা খরচ ধরা হচ্ছে।

জেলা পরিষদের তরফে কর্তাদের একাংশের দাবি, বাম আমলে মার্কেট কমপ্লেক্সটিও অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি হয়। সেখানে আধুনিক মানের কোনও ব্যবস্থাপনা নেই। নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বা কোনও রকম দুর্ঘটনা ঘটলে বেরনোর জন্য একাধিক পথ। কমপ্লেক্স ঘিঞ্জি। আলো-বাতাস খেলার জায়গা নেই। কোনও ব্যবসায়ী সেখানে দোকান নিতে আগ্রহ দেখাননি। এই গোটা পরিস্থিতির জন্য পূর্বতন বাম পরিচালিত বোর্ডকেই এখন দুষছেন তাঁরা। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশও জানিয়েছেন, দোকানঘরগুলি যে রকম ঘিঞ্জি ভাবে বানানো হয়েছে, তাতে ব্যবসা মার খেত। তাই তাঁরা কেউই কমপ্লেক্সের সেই দোকান নিতে আগ্রহ দেখাননি।

মার্কেট কমপ্লেক্স ও বাসস্ট্যান্ড তৈরিতে সঠিক পরিকল্পনার অভাবের অভিযোগ মানতে চাননি পূর্বতন বাম পরিচালিত জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আনন্দ চট্রোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিশেষজ্ঞ সংস্থার সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করেই এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এখন যদি সেটা কেউ ত্রুটিপূর্ণ বলেন, আমাদের কিছু করার নেই। ব্যবসায়ীরা কেন ওখানে দোকান নিতে আগ্রহ দেখালেন না তা বলতে পারব না। কেউ কেউ লিজের টাকা ও সময়সীমা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।”

জেলা পরিষদের বর্তমান পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কল্যাণেন্দু ঘোষ জানিয়েছেন, বর্তমান বাসস্ট্যান্ডটি এক কিলোমিটার দূরে মতিঝিলে সাড়ে ৮ কাঠা জমির উপরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ফলে, এক দিকে যেমন যানজট কমে যাবে, তেমনই মাকের্ট কমপ্লেক্সটিও যথাযথ বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা যাবে। সেখানে কমিউনিটি হল, কনফারেন্স রুম-সহ নানা রকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়ারও পরিকল্পনা করা হয়েছে। মার্কেট কমপ্লেক্স সংস্কার করা হলে ব্যবসা বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তাঁদের একাংশ চান, বাসস্ট্যান্ড যেন সরানো না হয়। তাঁদের দাবি, শহরের কেন্দ্রস্থলে বাসস্ট্যান্ডটি থাকায় তাকে ঘিরে যে ভাবে ব্যবসা বেড়েছে, তা মার খাবে। বাসিন্দাদেরও কেউ কেউ মনে করেন, বাসস্ট্যান্ড এবং সঙ্গে অটো-ট্রেকার স্ট্যান্ড সরে গেলে তাঁদের যাতায়াতে অসুবিধা হবে।

monirul islam domjur bus stand
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy