Advertisement
E-Paper

শিক্ষকের কথায় ‘অপমান’, আত্মহত্যার চেষ্টা

স্কুলে ঢুকতে পাঁচ মিনিট দেরি হয়েছিল। অভিযোগ, এই ‘অপরাধে’ এক ছাত্রকে পরীক্ষায় বসতে দেননি শিক্ষক। আরও অভিযোগ, পরে ওই ছাত্রের মা অনুরোধ জানাতে এলে তাঁকেও ‘অপমানজনক’ কথা বলে তাড়িয়ে দেন শিক্ষকেরা। সেই ‘অপমানে’ বাড়ি ফিরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করল ওই ছাত্র। পুলিশের কাছে এই অভিযোগ দায়ের করেছে ওই ছাত্রের পরিবার। যদিও স্কুলের তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকেরও দাবি, ওই ছাত্র বা তার মাকে কোনও অপমানজনক কথা বলা হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৪ ০০:২৮

স্কুলে ঢুকতে পাঁচ মিনিট দেরি হয়েছিল। অভিযোগ, এই ‘অপরাধে’ এক ছাত্রকে পরীক্ষায় বসতে দেননি শিক্ষক। আরও অভিযোগ, পরে ওই ছাত্রের মা অনুরোধ জানাতে এলে তাঁকেও ‘অপমানজনক’ কথা বলে তাড়িয়ে দেন শিক্ষকেরা। সেই ‘অপমানে’ বাড়ি ফিরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করল ওই ছাত্র। পুলিশের কাছে এই অভিযোগ দায়ের করেছে ওই ছাত্রের পরিবার। যদিও স্কুলের তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকেরও দাবি, ওই ছাত্র বা তার মাকে কোনও অপমানজনক কথা বলা হয়নি।

শনিবার বালির শিক্ষানিকেতন বিদ্যালয়ের ঘটনা। পুলিশ জানায়, সাহেব হাজরা নামে ওই ছাত্র আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মিস্ত্রি ও সহকারী শিক্ষক প্রতাপচন্দ্র ভট্টাচার্যের নামে বালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ওই ছাত্রের পরিবার। অভিযুক্ত শিক্ষকদের গ্রেফতারির দাবিতে এ দিন থানায় জড়ো হন সাহেবের পরিজনেরা, পাড়ার লোকজন ও অভিভাবকেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেলুড় ও নিশ্চিন্দা থানার পুলিশও বালি থানায় যায়।

পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রের পরিবার জানিয়েছে, সাহেব বালি শিক্ষানিকেতন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। এ দিন ১১টা থেকে তার মৌখিক পরীক্ষা ছিল। কিন্তু স্কুলে ঢুকতে পাঁচ মিনিট দেরি হওয়ায় প্রথমে তাকে পরীক্ষা দিতে বাধা দেন ইতিহাসের শিক্ষক প্রতাপচন্দ্র ভট্টাচার্য। তিনি সাহেবকে প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মিস্ত্রির কাছে নিয়ে যান। লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, দুই শিক্ষক সাহেবকে বলেন, “ঘরে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মর। তোর পড়াশোনা হবে না। পরীক্ষা দিতে হবে না।”

বাড়ি ফিরে ঘটনাটি জানালে সাহেবকে নিয়ে স্কুলে যান তার মা মিতালিদেবী। তিনি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, “স্যারেদের অনুরোধ করি যাতে ছেলেকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়, কিন্তু তাঁরা কোনও কথা শোনেন না। বলেন, আপনারা অশিক্ষিত বাবা-মা। ছেলেকে পড়িয়ে কী করবেন। বলুন গলায় দড়ি দিয়ে মরতে। না পারলে স্কুলে নিয়ে আসুন আমরা ঝুলিয়ে দিচ্ছি।’’

ছাত্রের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, মাকে অপমানিত হতে দেখে স্কুল থেকে বেরিয়ে বাড়ি চলে যায় সাহেব। ফিরেই ঘরে ঢুকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ে। স্থানীয় কয়েক জন তাকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এর পরেই থানায় গিয়ে দুই শিক্ষকের নামে অভিযোগ করেন সাহেবের পরিজনেরা। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে থানায় আসেন প্রতাপবাবু ও অন্য এক শিক্ষক। বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে পুলিশ তাঁদের নিজেদের হেফাজতে রাখলেও পরে ছেড়ে দেয়। তবে ঘটনার পরে স্কুলে ছিলেন না রবীন্দ্রনাথবাবু।

অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মিস্ত্রি বলেন, “ছেলেটি দেরিতে আসায় প্রতাপবাবু ওকে দাঁড়াতে বলেন। পরীক্ষার দায়িত্বে তিনিই ছিলেন। আমি তখন ক্লাস নিচ্ছিলাম। ছেলেটি আমার কাছেও আসে। পরে কথা বলব বলে ছাত্রটিকে দাঁড়াতে বলি। কিন্তু ও সে সময়ে বাড়ি চলে যায়।” অভিযুক্ত সহ-শিক্ষক প্রতাপচন্দ্র ভট্টাচার্য বলেন, “ওই ছাত্র সাড়ে ১১টায় এসেছিল। তাই প্রধান শিক্ষক ওকে ক্লাসে না ঢুকে বাইরে দাঁড়াতে বলেন। আমিও বলেছিলাম একটু অপেক্ষা করতে। পরীক্ষা অবশ্যই নেওয়া হবে। কিন্তু ছেলেটি ধৈর্য হারিয়ে বাড়ি চলে যায়।”

southbengal student suicide insult bali
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy