Advertisement
E-Paper

শ্যামপুর শ্মশানে বাজ পড়ে মৃত ৯

পেটের দায়ে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে শ্মশান সারানোর কাজে গিয়েছিলেন ওঁরা। সেই শ্মশানেই সাজানো হল চিতা। বছর দুই আগে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে বাজ পড়ে মারা গিয়েছিলেন ন’জন। তারই যেন পুনরাবৃত্তি ঘটে গেল। বৃহস্পতিবার সকালে হাওড়ারই শ্যামপুরে বজ্রপাতে মৃত্যু হল ৯ জনের। ঝলসে গিয়েও প্রাণে বেঁচে গেলেন পাঁচ জন। স্থানীয় সূত্রের খবর, শ্যামপুরের বালিজাতুরি পঞ্চায়েতের কোলিয়া ঘোষপুর গ্রামে এক সপ্তাহ ধরে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে শ্মশান সংস্কারের কাজ চলছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০২:৪২
এই বারান্দাতেই বাজ পড়ে ঝলসে যান শ্রমিকরা। ছবি: সুব্রত জানা

এই বারান্দাতেই বাজ পড়ে ঝলসে যান শ্রমিকরা। ছবি: সুব্রত জানা

পেটের দায়ে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে শ্মশান সারানোর কাজে গিয়েছিলেন ওঁরা। সেই শ্মশানেই সাজানো হল চিতা।

বছর দুই আগে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে বাজ পড়ে মারা গিয়েছিলেন ন’জন। তারই যেন পুনরাবৃত্তি ঘটে গেল। বৃহস্পতিবার সকালে হাওড়ারই শ্যামপুরে বজ্রপাতে মৃত্যু হল ৯ জনের। ঝলসে গিয়েও প্রাণে বেঁচে গেলেন পাঁচ জন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, শ্যামপুরের বালিজাতুরি পঞ্চায়েতের কোলিয়া ঘোষপুর গ্রামে এক সপ্তাহ ধরে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে শ্মশান সংস্কারের কাজ চলছে। এ দিন ১৪ জন কাজ করছিলেন। ঝেঁপে বৃষ্টি নামায় তাঁরা শ্মশান লাগোয়া একটি মন্দিরের বারান্দায় আশ্রয় নেন। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মন্দিরের পাশেই নারকেল গাছে বাজ পড়ে। শ্রমিকেরা ঝলসে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে ৯ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

পুলিশ জানায়, মৃতদের মধ্যে সাত জন অজিত হালদার (৬৫), নির্মল সাঁতরা (৫৫), বিমল সাঁতরা (৬০), গণেশ হালদার (৫৬), বাসুদেব হালদার (৪২), অধীর মণ্ডল (৬২) ও হারু দাস (৬৪) কোলিয়া ঘোষপুরেরই বাসিন্দা। নির্মল ও বিমল দুই ভাই। শৈলেন সর্দার (৪৫) এবং খোকন ভাঙি (২৮) নামে আর দু’জন এসেছিলেন পাশের দীপচাঁদপুর গ্রাম থেকে। আহতদের মধ্যে দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও তিন জন উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

হাসপাতালে শুয়েই নিরাপদ দাস নামে এক শ্রমিক বলেন, “মাঝে-মাঝে বৃষ্টি পড়ছিল, আবার রোদও উঠছিল। আমরাও কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ জোরে বৃষ্টি এলে আমরা মন্দিরের বারান্দায় উঠে যাই। একটু পরেই কান ফাটানো শব্দ আর আলোর ঝলকানি। আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরতে দেখি, হাসপাতালে শুয়ে আছি।”

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে যান রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায়, সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, কারামন্ত্রী হায়দার আজিজ সফি, উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক পুলক রায়। অরূপবাবু বলেন, “মৃতদের পরিবার পিছু দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।” উলুবেড়িয়ার সাংসদ সুলতান আহমেদ বলেন, “মৃত শ্রমিকেরা ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে মারা গিয়েছেন। যে হেতু এটি কেন্দ্রীয় প্রকল্প, তাই মৃতদের পরিবার যাতে কেন্দ্রীয় সাহায্য পান সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানাব।”

আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রও মৃতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছেন। বালিজাতুরি পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জয় মাজি বলেন, “পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে দেহগুলির সৎকার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” দীপচাঁদপুরের দু’জনকে তাঁদের গ্রামের শ্মশানেই দাহ করা হয়। সন্ধ্যায় কোলিয়া ঘোষপুরের অভিশপ্ত শ্মশানে পরপর জ্বলে ওঠে সাতটি চিতা।

আকাশ তখনও মেঘে ঢাকা।

shyampur burningghat lightning death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy