Advertisement
E-Paper

শতবর্ষ পালনের খরচ জোগাতে পোশাক কেনার টাকা কাটার অভিযোগ

স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদকের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামল ছাত্ররা। প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে তারা রাস্তা অবরোধ করল। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার পাঁচলার জুজারসাহ পি এন মান্না মেমোরিয়ল ইন্সটিটিউশনে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সকাল ১১টা থেকে সাঁকরাইল-জুজারসাহা রাস্তা অবরোধ করে। তা চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। একইসঙ্গে ছাত্রেরা পরিচালন সমিতির সম্পাদককে স্কুলের ভিতরে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখায়। পরে র্যাফ গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। পরিচালন সমিতির সম্পাদককে ঘেরাও মুক্ত করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:২৮
ফেস্টুন নিয়ে পথ অবরোধে পড়ুয়ারা। ছবি: সুব্রত জানা।

ফেস্টুন নিয়ে পথ অবরোধে পড়ুয়ারা। ছবি: সুব্রত জানা।

স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদকের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামল ছাত্ররা। প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে তারা রাস্তা অবরোধ করল। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার পাঁচলার জুজারসাহ পি এন মান্না মেমোরিয়ল ইন্সটিটিউশনে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সকাল ১১টা থেকে সাঁকরাইল-জুজারসাহা রাস্তা অবরোধ করে। তা চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। একইসঙ্গে ছাত্রেরা পরিচালন সমিতির সম্পাদককে স্কুলের ভিতরে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখায়। পরে র‌্যাফ গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। পরিচালন সমিতির সম্পাদককে ঘেরাও মুক্ত করে।

আগামী ২১ ডিসেম্বর থেকে স্কুলে শুরু হবে সপ্তাহব্যাপী শতবর্ষ পালন উত্‌সব। তার আগে গত সোমবার প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। অবরোধকারীদের অভিযোগ, শতবর্ষ পালনে খরচের জন্য ছাত্রদের পোশাক কেনার চারশো টাকা থেকে আড়াইশো টাকা করে কেটে নেওয়া হয়েছে। এই টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানায় অবরোধকারীরা। তাদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক পরিচালন সমিতির দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই কারণে তাঁকে স্কুল ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়। উল্লেখ্য, স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ওই প্রধান শিক্ষক গত ১ অগস্ট এই পদে যোগ দেন। অবরোধকারীদের বক্তব্য।

সমিতি তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে আছে। সম্পাদক বিনয় কোলে বলেন, “অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করেই স্কুলের পোশাক বাবদ বরাদ্দ অর্থ থেকে শতবর্ষ পালনের জন্য টাকা চাঁদা হিসাবে কেটে নেওয়া হয়েছিল।” প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের বিষয়ে বিনয়বাবু বলেন, “উনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। এইরকম একজন শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক হিসাবে আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। উনি কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে নিজের মতে চলতেন। পঠন-পাঠন শিকেয় উঠেছিল। তা সত্ত্বেও আমরা তাঁকে পদত্যাগ না করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি চলে যান।”

অন্য দিকে জেলা স্কুল পরিদর্শক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলের পোশাক বাবদ টাকা এইভাবে কেটে নেওয়া যায় না। অভিযোগ পেলে আমি তদন্ত করে দেখব। প্রয়োজন হলে টাকা ফেরত দিতে হবে।” আর প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সম্পাদককে মুখোমুখি বসিয়ে আমি মিটমাটের চেষ্টা করেছিলাম। তার পরে এই পরিস্থিতি।”

এ দিন প্লাকার্ড নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা এসে রাস্তার উপরে বসে পড়ে। শতবর্ষ উপলক্ষে স্কুলে প্যান্ডেল তৈরির কাজ চলছে। সেই কাজের তদারকি করতে সমিতির সম্পাদক স্কুলেই ছিলেন। এ ছাড়াও প্রায় চল্লিশজন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মচারীরা স্কুলে ছিলেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঘেরাও করা না হলেও গোলমালে তাঁরা আটকে পড়েন।

অবরোধ চলতে থাকায় রাস্তার দু’দিকে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে অটো রিকশা, ট্রেকার এবং মিনি বাস। বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। পুলিশ অবরোধ তোলার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের বোঝাতে থাকে। তাতে কাজ না হওয়ায় র‌্যাফ আসে। র‌্যাফের হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠে যায়, তাদেরই হস্তক্ষেপে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বাড়ি ফিরে যান। তবে সম্পাদককে আরও কিছুক্ষণ ঘেরাও করে রাখা হয়। তারপরে বিক্ষোভ উঠে যায়।

ছাত্র-ছাত্রীদের দাবিকে সমর্থন করে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সম্মিলনীর সম্পাদক ভোলা কোলে বলেন, “আমরা গ্রামবাসীরা সকলে মিলে পাঁচলার বিধায়ক গুলশন মল্লিকের কাছে পরিচালন সমিতির দুর্নীতি এবং প্রধান শিক্ষককে রেখে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। তারপরেও কোনও কাজ হয়নি।”

গুলশান বলেন, “প্রধান শিক্ষক আমার কাছে এসেছিলেন সম্পাদককে অপসারণের দাবি জানিয়ে। আমি বলেছিলাম তার তো একটা পদ্ধতি আছে। তবে আপনার কোনও অসুবিধা হলে বলুন। তা দূর করা হবে। কিন্তু তিনি তো স্কুল ছেড়ে চলেই গেলেন।” পদত্যাগী প্রধান শিক্ষক তপোব্রত বসুর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। উত্তর দেননি মেসেজেরও।

southbengal panchla students gherao
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy