চিকিত্সক ছেলেকে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ানোর বিধান দিলেও তা অনিয়মিত হয়ে গিয়েছিল বলে জানালেন দিনমজুর বাবা-মা। জন্ম থেকেই হৃদরোগের সমস্যায় আক্রান্ত রাহুলের হাঁটাচলায় কোনও সমস্যা ছিল না বলে জানিয়েছেন বাবা প্রশান্ত মাইতি। আর তাই শুক্রবার স্বাধীনতা দিবস পালনে পদযাত্রায় যাবে বললে তাঁরা বাধা দেননি।
কিন্তু পদযাত্রায় বেশ কিছুটা যাওয়ার পরেই টলতে শুরু করলে অন্যরা ধরে ফেলে আরামবাগ মহকুমার পুড়শুড়ার দেউলপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া রাহুলকে। অসুস্থ রাহুলের জন্য সঙ্গে সঙ্গে চিকিত্সক ডাকা হয়। যদিও তাকে বাঁচানো যায়নি। রবিবার এই ঘটনায় শোকের ছায়া নামে এলাকায়
স্কুল এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল সাড়ে সাতটা থেকেই স্বাধীনতা দিবস অনুষ্ঠান পালনের জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে হাজির হয়। পৌনে ৮টা নাগাদ শিক্ষকরা তাদের নিয়ে দেউলপাড়া গ্রামের বিভিন্ন পাড়ায় শোভাযাত্রার উদ্দেশে রওনা হয়। লম্বা লাইনের মাঝে মাঝে ছিলেন শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষক শ্যামশঙ্কর সামন্ত বলেন, “স্কুল থেকে শোভাযাত্রা ১০০ মিটার যেতে না যেতেই রাহুলকে টাল খেতে দেখে এক শিক্ষক তাকে ধরে ফেলেন। চোখে মুখে জল দিয়ে বাতাস করে তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করা হয়। চিকিত্সকের সঙ্গে বাড়ির লোকেদেরও খবর দেওয়া হয়। কিন্তু বাঁচানো গেল না রাহুলকে। আমরা জানতামই না যে ওর হার্টের অসুখ ছিল।”
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্ম থেকেই জটিল হৃদরোগে ভুগছিল সে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তা জানত না। দিনমজুর এবং লেখাপড়া না জানা পরিবারটিও চিকিত্সকের দেওয়া বাধা-নিষেধের পরামর্শগুলো মানার ক্ষেত্রে সচেতন ছিলেন না।
রাহুলের মৃত্যুতে স্বাধীনতা দিবসের আনন্দ মাটি হয়ে যায়। সমস্ত অনুষ্ঠানসূচি বাতিল করে আসেন পুড়শুড়া বিধায়ক পারভেজ রহমান, বিডিও অনির্বাণ রায়, এবং পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। মৃত রাহুলের শরীরে জড়িয়ে দেওয়া হয় তিরঙ্গা পতাকা। নিথর সেই দেহ পৌঁছনো হয় প্রথমে শিশুর বাড়ি এবং পরে শ্মশানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy