উদয়নারায়ণপুরের ডিহিভুরশুট থেকে সোহাগড়ি রাস্তা। ছবি: সুব্রত জানা।
কোথাও পিচের চাদর উঠে গিয়ে নীচের ইটের খোয়া বেরিয়ে গিয়েছে। কোথাও ছয় থেকে আট ইঞ্চি গর্ত। রাস্তার এমনই হাল যে রুটের বাস ছাড়া অন্যান্য যানবাহন বাধ্য না হলে এ পথ মাড়ান না। পথচারী থেকে সাইকেল, মোটর সাইকেল আরোহীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সামনের বর্ষার মরসুমের কথা ভেবে এখনই আতঙ্কিত পথচারী থেকে যানচালকরা। শুধু জীবনহানি নয়, রাস্তার কারণে গাড়ির যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি হচ্ছে বলে ক্ষোভ যানচালকদের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরিস্থিতি এতটা খারাপ হলেও রাস্তা সারানোর বিষয়ে প্রশাসনকে কোনও পদক্ষেপই করতে দেখা যায়নি।
হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের ডিহিভুরশুট রোডের সোহাগড়ি থেকে ডিহিভুরশুট পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের দাবি নতুন নয়। ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তা হাওড়া ও হুগলির মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই রাস্তায় যাতায়াত করন। কিন্তু রাস্তার শোচনীয় হালের কারণে তাঁদের ভোগান্তির সীমা থাকে না। এমনকী জেলা প্রশাসনও রাস্তার খারাপ অবস্থার কথা মেনে নিয়েছে। কিন্তু তার পরেও রাস্তা সারাতে কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পূর্ত দফতর। পুরো বিষয়টি টেন্ডার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। কাজ শুরু হতে খুব একটা দেরি হবে না। যদিও প্রশাসনের এই স্তোকবাক্যে সন্তুষ্ট নন এলাকার মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, যতক্ষণ না কাজ শুরু হচ্ছে ততক্ষণ বিশ্বাস নেই। কারণর্ আগেও এই রাস্তার সংস্কার নিয়ে নানা আশ্বাস পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ আর হয়নি।
উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা জানিয়েছেন, রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। পথচারী থেকে যানচালকদের ভোগান্তি হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে। তবে তিনি এও জানান, আপাতত রাস্তার যে সব অংশ প্রচণ্ড খারাপ সে সব অংশে তাপ্পি দেওয়া শুরু হয়েছে।
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমতা-২ ব্লক ও উদয়নারায়ণ ব্লক এলাকা জুড়ে ওই রাস্তা। প্রায় গোটা রাস্তা জুড়েই খানাখন্দ। ডিহিভুরশুট-হাওড়া রুটের খান তিরিশেক বাস চলে এই রাস্তায়। এ ছাড়া উদয়নারায়ণপুর-তারকেশ্বর রুটের বাস, উদয়নারায়ণপুর-ধর্মতলা সিটিসি বাস ও ভবানীপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত সিটিসি বাসও চলাচল করে। সেইসঙ্গে চলে প্রচুর অটো, ট্রেকার। কিন্তু রাস্তার অবস্থার জন্য গাড়ির যন্ত্রাংশের ক্ষতি হওয়ায় অনেকেই অটো, ট্রেকার তুলে নিয়েছেন। এই রাস্তার উপরেই পড়ে উদয়নারায়মপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, পঞ্চায়েত সমিতি এবং বিডিও অফিস, থানা, হাইস্কুল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়াও কয়েকটি নার্সিংহোম। ফলে নিত্য রোগীদের নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু রাস্তার কারণে রোগীদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ঘটছে দুঘর্টনাও।
রোজ এই রাস্তা দিয়েই স্কুলে যাতায়াত করা শৌভিক মজুমদার, শ্রেয়সী গড়াইয়ের কথায়, “রাস্তার কারণে প্রায়ই দেরি হয়ে যায় স্কুলে পৌঁছতে। শিক্ষকদের কাছে বকুনি খেতে হয়। চারপাশে উন্নয়ন হওয়ার কথা শুনি। এই রাস্তার উন্নয়ন হলে আমাদের সুবিধা হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy